আমার রোবুদা

ডাকপিয়ন ছাড়া বোধহয় সাধারণ মানুষের অজানা বালিগঞ্জ রোডের নাম আশুতোষ চৌধুরী এভিনিউ। এই এভিনিউয়ে বিড়লা মন্দির। বিপরীতে মদের দোকান, পেট্রল পাম্প, মৈনাক (বিল্ডিং), সুখাবতী ভবন। এ রকম ভৌগোলিক চেহারাসুরত ছিল না আগে। মদের দোকান, পেট্রল পাম্প, মৈনাক, সুখাবতী ভবন মিলিয়ে যে জায়গা-জমিন, ওখানেই ছিল মুখার্জিদের ভিলা। মনে পড়ছে না ভিলার নাম। মুখার্জিকুলের এক ছেলে সিদ্ধার্থ। […]

জোছনা ও জননীর গল্প

‘ভোরের কাগজ’-এর সাহিত্য পাতায় হুমায়ূন আহমেদ ধারাবাহিকভাবে লিখতে শুরু করেছিলেন তাঁর মনোজগৎ আচ্ছন্ন করে থাকা মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস ‘জোছনা ও জননীর গল্প’। ১৭-১৮ বছর আগের কথা। হুমায়ূন আহমেদ তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। বিশাল ক্যানভাসের উপন্যাসটি লেখার জন্য স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদ আরো কয়েক বছর আগে তাঁকে ৫০০ পৃষ্ঠার একটি খাতা উপহার দিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছরের ছুটি […]

'অলীক মানুষ' এক অনবদ্য সৃষ্টি

৮২ বছরের জীবনে তাঁর সুবিশাল রচনাসম্ভার বিস্ময় উদ্রেককারী তো বটেই, সেই সঙ্গে তাঁর প্রতিভারও পরিচায়ক বটে। এর মধ্যে ১৫০টি উপন্যাস আর ৩৬০টির মতো হীরকদ্যুতি ছড়ানো ছোটগল্প রয়েছে, যেগুলোর ভেতর আবার বেশ কয়েকটি বিশ্বসাহিত্যে স্থান পাওয়ার যোগ্য। এ ছাড়া টুকরাটাকরা লেখালেখির সংখ্যা যেমন অগণন, তেমনি প্রবন্ধের সংখ্যাও কম নয়। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ গ্রামের মানুষ হলেও শহরজীবন […]

অভিমানী আঙুল আমার

সহস্র অভিমানী জীবন আমাদের। হাজারো পরিচয় আর সম্পর্কের বেড়াজালে বেড়াতে বেড়াতে ভুল হয়ে যায়। কিছু ভুল থেকে যায় মনের আড়ালে। অনেক না পাওয়া, অনেক ভুল বোঝাবুঝি আর অনেক আকাঙ্ক্ষার মৃত্যুতে সেসব সম্পর্কগুলো অভিমানের জন্ম দেয়। আমরা অভিমানী হয়ে যাই হাজারো নিয়মে। কখনও কখনও অনিয়মেও। পৃথিবীর কোনো সূত্র, কোনো মনোবিজ্ঞান দ্বারাই হয়তো সে অভিমানের আঙুল ছুঁতে […]

স্মৃতিময় পথের ধারে

আমার শৈশব এবং কৈশোর দুটোই কেটেছে বরিশালে। আবার কখনও ঢাকার কলতা বাজার, বাবুবাজার এলাকায়। স্মৃতিময় এসব স্থানের বর্ণনা অনেকভাবেই দেওয়া সম্ভব। এ রচনার বিষয়বস্তু যেহেতু আমার দেখা বহুদিন আগেকার পরিচিত পথ, সেহেতু শৈশব এবং কৈশোরের ফেলে আসা সেসব স্থানের পথের কথাই বলব, যা আমার মনের গভীরে আজও গেঁথে আছে স্পষ্ট ও পরিষ্কারভাবে। আমি যখন বরিশালে […]

প্রিয় সুনীলের কথা

পঞ্চাশের দশকের গোড়ার দিকের কথা। সুনীলের বয়স তখন আঠারো-উনিশের বেশি হবে না, আর আমি তখনই সাতঘাটের জল খেয়ে আনন্দবাজার পত্রিকায় এসে ঢুকেছি। কাজ করতুম রবিবাসরীয় বিভাগে। সেখানে গল্প বাছাই করতে-করতে হঠাৎ একটা গল্পে আমার চোখ আটকে যায়। গল্প ছাপোষা এক চাকরিজীবী মধ্যবয়সী ভদ্রলোককে নিয়ে। তাঁর চশমা জোড়া হারিয়েছে, অথচ আপিসে না-গিয়ে তাঁর উপায় নেই। অগত্যা […]

সুনীল গঙ্গোপধ্যায়

সরল সুন্দর সুনীল

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় চলে গেলেন। তার তো তেমন কোনো অসুস্থতার খবর শুনিনি। যখনই দেখেছি, প্রাণবন্ত, হাসিখুশি মানুষ হিসেবেই জেনেছি। তার সঙ্গে প্রথম কবে দেখা হয়েছে, আজ আর তা মনে নেই। তবে যতবারই তাকে দেখেছি মনে হয়েছে, অকপট নির্ভেজাল একজন মানুষ। যার ভেতরে ও বাইরের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো সৃষ্টিশীল লেখকদের বহু বহু বছর […]

সে যে চলে গেল, বলে গেল না…

আমার সুনীলদা, প্রিয় লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় চলে গেলেন না-ফেরার দেশে। গতকাল এই সংবাদ পেয়ে আমি কিছু সময়ের জন্য নির্বাক হয়ে পড়েছিলাম। আমি ভাবতেই পারছিলাম না সুনীলদাকে আর দেখতে পাবো না। আড্ডাবাজ, রসিক এবং প্রাণখোলা এই মানুষটা আর বেঁচে নেই। আমি বাকরুদ্ধ হয়ে আছি। তার সৎকারে অংশগ্রহণ করতে আমি গতকালই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছি। বাষ্পরুদ্ধ চোখে […]

ভুল অথবা জীবনের কথা

ভুল অথবা জীবনের কথা

যদি ভুল পথে এসে থাকি তবে জেনো ভ্রান্তিই আমার ধ্রুব। এখন/গাছ সাক্ষী আমি আর ফিরব না। নদী সাক্ষী আমি আর ফিরব না।/মেঘ, পাখি আর পাল তোলা নাওয়ের কসম, যে পায়ের ছাপ/আমার পেছনে রেখে এলাম তা মৃত্যুর দিগন্তে গিয়ে/একবার নিঃশ্বাস ফেলবে। ভুলের পুরস্কার যদি মৃত্যু, তবে তাই/হোক_ ভুলের দিগন্তে ভুল-ভ্রান্তি হলো মানবজীবনের স্বাভাবিক ঘটনা। কাজ করতে […]

শরতের স্মৃতিমালা

শরতের স্মৃতিমালা

বাংলা ষড়ঋতুতে ভাদ্র আর আশ্বিন মাসের সংমিশ্রণ শরৎকাল। আমাদের ছেলেবেলায়, কৈশোরে, এমনকি প্রথম যৌবনে শরৎকালের একটা আলাদা রূপমূর্তি ছিল। ঋতুচক্রে সেই রূপমূর্তির দেখাও মিলত। সেটা কী? সেটা হচ্ছে আকাশে ছাড়া ছাড়া সাদা মেঘ, নদীর ধারে বাতাসে দুলতে থাকা সাদা কাশফুল। আমরা দেখেছি গ্রীষ্মের তীব্র উষ্ণতা আর দহনের পর শরতের বাতাস অনেক কোমল হয়ে আসত। শরৎ […]