আজ শ্রাবণের পূর্ণিমাতে কী এনেছিস বল্‌

আজ শ্রাবণের পূর্ণিমাতে কী এনেছিস বল্‌– হাসির কানায় কানায় ভরা নয়নের জল॥ বাদল-হাওয়ায় দীর্ঘশ্বাসে যূথীবনের বেদন আসে– ফুল-ফোটানোর খেলায় কেন ফুল-ঝরানোর ছল। ও তুই কী এনেছিস বল্‌॥ ওগো, কী আবেশ হেরি চাঁদের চোখে, ফেরে সে কোন্‌ স্বপন-লোকে। মন বসে রয় পথের ধারে, জানে না সে পাবে কারে– আসা-যাওয়ার আভাস ভাসে বাতাসে চঞ্চল। ও তুই কী […]

নীল- অঞ্জনঘন পুঞ্জছায়ায় সম্‌বৃত অম্বর

নীল- অঞ্জনঘন পুঞ্জছায়ায় সম্‌বৃত অম্বর হে গম্ভীর! বনলক্ষ্মীর কম্পিত কায়, চঞ্চল অন্তর– ঝঙ্কৃত তার ঝিল্লির মঞ্জীর হে গম্ভীর॥ বর্ষণগীত হল মুখরিত মেঘমন্দ্রিত ছন্দে, কদম্ববন গভীর মগন আনন্দঘন গন্ধে– নন্দিত তব উৎসবমন্দির হে গম্ভীর॥ দহনশয়নে তপ্ত ধরণী পড়েছিল পিপাসার্তা, পাঠালে তাহারে ইন্দ্রলোকের অমৃতবারির বার্তা। মাটির কঠিন বাধা হল ক্ষীণ, দিকে দিকে হল দীর্ণ– নব অঙ্কুর-জয়পতাকায় ধরাতল […]

নিশীথে কী কয়ে গেল মনে

নিশীথে কী কয়ে গেল মনে কী জানি, কী জানি। সে কি ঘুমে, সে কি জাগরণে কী জানি, কী জানি।। নানা কাজে নানা মতে ফিরি ঘরে, ফিরি পথে– সে কথা কি অগোচরে বাজে ক্ষণে ক্ষণে। কী জানি, কী জানি।। সে কথা কি অকারণে ব্যথিছে হৃদয়, একি ভয়, একি জয়। সে কথা কি কানে কানে বারে বারে […]

তাই তোমার আনন্দ আমার ‘পর

তাই তোমার আনন্দ আমার ‘পর তুমি তাই এসেছ নীচে। আমায় নইলে ত্রিভুবনেশ্বর, তোমার প্রেম হত যে মিছে। আমায় নিয়ে মেলেছ এই মেলা, আমার হিয়ায় চলছে রসের খেলা, মোর জীবনে বিচিত্ররূপ ধরে তোমার ইচ্ছা তরঙ্গিছে। তাই তো তুমি রাজার রাজা হয়ে তবু আমার হৃদয় লাগি ফিরছ কত মনোহরণ-বেশে প্রভু নিত্য আছ জাগি। তাই তো, প্রভু, হেথায় […]

তুমি খুশি থাক আমার পানে চেয়ে চেয়ে

তুমি খুশি থাক আমার পানে চেয়ে চেয়ে তোমার আঙিনাতে বেড়াই যখন গেয়ে গেয়ে ॥ তোমার পরশ আমার মাঝে সুরে সুরে বুকে বাজে, সেই আনন্দ নাচায় ছন্দ বিশ্বভুবন ছেয়ে ছেয়ে ॥ ফিরে ফিরে চিত্তবীণায় দাও যে নাড়া, গুঞ্জরিয়া গুঞ্জরিয়া দেয় সে সাড়া। তোমার আঁধার তোমার আলো দুই আমারে লাগল ভালো– আমার হাসি বেড়ায় ভাসি তোমার হাসি […]

এসো এসো ফিরে এসো

এসো এসো ফিরে এসো, বঁধু হে ফিরে এসো। আমার ক্ষুধিত তৃষিত তাপিত চিত, নাথ হে, ফিরে এসো। ওহে নিষ্ঠুর, ফিরে এসো, আমার করুণকোমল এসো, আমার সজলজলদস্নিগ্ধকান্ত সুন্দর ফিরে এসো, আমার নিতিসুখ ফিরে এসো, আমার চিরদুখ ফিরে এসো। আমার সবসুখদুখমন্থনধন অন্তরে ফিরে এসো। আমার চিরবাঞ্ছিত এসো, আমার চিতসঞ্চিত এসো, ওহে চঞ্চল, হে চিরন্তন, ভুজ- বন্ধনে ফিরে […]

দোষী করিব না করিব না তোমারে

দোষী করিব না, করিব না তোমারে আমি নিজেরে নিজে করি ছলনা। মনে মনে ভাবি ভালোবাসো, মনে মনে বুঝি তুমি হাসো, জান এ আমার খেলা– এ আমার মোহের রচনা ॥ সন্ধ্যামেঘের রাগে অকারণে ছবি জাগে, সেইমতো মায়ার আভাসে মনের আকাশে হাওয়ায় হাওয়ায় ভাসে শূন্যে শূন্যে ছিন্নলিপি মোর বিরহমিলনকল্পনা ॥

আজি কোন সুরে বাঁধিব দিন-অবসান বেলারে

আজি কোন সুরে বাঁধিব দিন-অবসান বেলারে দীর্ঘ ধূসর অবকাশে সঙ্গীজনবিহীন শূন্য ভবনে ।। সে কি মূক বিরহস্মৃতিগু্ঞ্জরণে তন্দ্রাহারা ঝিল্লিরবে । সে কি বিচ্ছেদরজনীর যাত্রী বিহঙ্গের পক্ষধ্বনিতে ।। সে কি অবগুন্ঠিত প্রেমের কুন্ঠিত বেদনায় সমবৃত দীর্ঘশ্বাসে । সে কি উদ্ধত অভিমানে উদ্যত উপেক্ষায় গর্বিত মঞ্জীরঝঙ্কারে ।

না বুঝে কারে তুমি ভাসালে আঁখিজলে

না বুঝে কারে তুমি ভাসালে আঁখিজলে। ওগো কে আছে চাহিয়া শূন্য পথপানে, কাহার জীবনে নাহি সুখ, কাহার পরান জ্বলে। পড় নি কাহার নয়নের ভাষা, বোঝ নি কাহার মরমের আশা, দেখ নি ফিরে, কার ব্যাকুল প্রাণের সাধ এসেছ দ’লে। শিল্পীঃশাকিলা জাফর

বিশ্ববীণারবে বিশ্বজন মোহিছে

বিশ্ববীণারবে বিশ্বজন মোহিছে। স্থলে জলে নভতলে বনে উপবনে নদীনদে গিরিগুহা-পারাবারে নিত্য জাগে সরস সঙ্গীতমধুরিমা, নিত্য নৃত্যরসভঙ্গিমা। নব বসন্তে নব আনন্দ, উৎসব নব। অতি মঞ্জুল, অতি মঞ্জুল, শুনি মঞ্জুল গুঞ্জন কুঞ্জে শুনি রে শুনি মর্মর পল্লবপুঞ্জে, পিককূজন পুষ্পবনে বিজনে, মৃদু বায়ুহিলোলবিলোল বিভোল বিশাল সরোবর-মাঝে কলগীত সুললিত বাজে। শ্যামল কান্তার-‘পরে অনিল সঞ্চারে ধীরে রে, নদীতীরে শরবনে উঠে […]