জন্মেছি বাংলায়

জন্মেরও আগে আমি এইখানে জন্মেছিলাম, এই বাংলায়; এই ঘাসের ঘুঙুর ‘পরে কত যে নেচেছি, পালকে পল্লবে হয়েছি মাতাল; এখানে হেঁটেছি হাঁটা শিখবারও আগে বাংলার ধুলো মাটি শরীরে মেখেছি, নিয়েছি জলের ঘ্রাণ, পাতার সৌরভ এইখানে এই দেশে এক কোটি বছর আগে হয়তো জন্মেছি।

তোমার জন্মভূমি

তোমাদের শুরু আমার তো হায় সন্ধ্যাবেলা পার হয়ে আসি উদয়ের কত রোদের খেলা গোধূলির ধূলি আকাশে উড়ছে, আমি একেলা এই তো শেষের সন্ধ্যাকালের আলোর খেলা। মুখের উপর ছায়া নেমে আসে মায়ার ঝিলিক ঘরে ফিরে বুঝি নৃত্য করে! অস্ত-সূর্য ডাক দেয় কারে ওই তো নামছে ধূসর সন্ধ্যা শেষের বেলা নামটি ধরে। পার হয়ে যাই হাঁটতে হাঁটতে […]

কবির সম্বল

    কবি এই ত্রিভুবন রাজনীড়ে নেই শস্যদানা, শিরে তবু গোলাপের তাজঠোঁটে তার কষ্টবোঁটা, দুই চোখে দুই ডানা আঁকা ঘাসফড়িঙের খোঁজে ওড়ে তাও অগ্নিবলাকা নিষিদ্ধ নিয়ম ভেঙে অনিয়ম যদিও নিয়তি নিজেকে নিবৃত্ত করে অপরের ক্ষতিকরেনি তো, বল্লম বুলেট নিয়ে ফরমান জারি না করার অভিমানে নেই আহাজারি কবির সম্বল শুধু ঘাসপাতালতা কবিরও বরাদ্দ আছে আপন ক্ষমতা […]

একজন একলব্য

একলব্যরা সবসময়ই পরাজিত হতে থাকে ! ইশ্বরণীয় হয়ে থাকেন দ্রোণাচার্য অর্জুনদের জয়জয়কারে মুখরিত হয় চারিদিক দ্রোণার চারপাশে শুধু অভিজাত পান্ডববের ভিড় ! আর একলব্য এই আমি নিম্নবিত্ত, নিঃস, নিম্নবর্ণ একা লড়ে যাই অসম লড়াই মমচিত্তে গুরুকে স্বরণ করে — তবু পরাজিত হই ইতিহাসে ও বাস্তবে, আমার জীবন ও যৌবনে সবখানে !

দূর থেকে হয় না

দূর থেকে হয় না কাছে আসতে হয়, কাছে এসে চুমু খেতে হয়, ত্বক স্পর্শ করে ভালোবাসতে হয়, চুল থেকে শুরু করে নাক চোখ চিবুক, পেট তলপেট, যৌনাঙ্গ, পা, পায়ের নখ একটু একটু করে ছুঁতে হয়, ছুঁয়ে ছুঁয়ে প্রেম করতে হয়। দূর থেকে হয় না, ফোনে ফেসবুকে হয় না, তার চেয়ে কাছে এসো, স্পর্শ করো, তোমার […]

প্রেমিকা তোমাকে

আমার স্তবির ঘুমে কী করে যে শিখাময় অগ্নি থেকে লাফিয়ে উঠলে,প্রেমিকা আমার,যার চিতা সাজিয়েছি নিজে শিল্পের মতন,যাকে অগ্নিলোকে দান করে বলেছি নীরবে বিকশিত হতে থাকো অপর্যাপ্ত বেদনা আমার । তুমি কি আমার মধ্যে সুন্দর ক্ষতের মধ্যে লুকিয়ে ছিলে বাক্যহীন,স্বপ্নহীন,স্মৃতিহীন ? ব্রিজের ওপর থেকে দেখা খসে পরা নক্ষত্রের মতো অস্তিত্বের দিব্য ভাষ্য হয়ে ? যে দিন […]

তোমার পায়ের কাছে

তোমার পায়ের কাছে স্বপ্ন ছিল জলস্রোত ছিল,নক্ষত্র নিবিড় মৌন ছিল। আর গতি ছিল গতিহীনতার দিকে সময় মঞ্জরী। তোমায়ের পায়ের নীচে থেকে যেন সৃষ্টির সূচনা আমি হাত রেখেছিলাম সেখানে শান্তির নিটোল বৃন্ত মুখ রেখে আমি নক্ষত্রপুঞ্জের সুগন্ধি নিলাম,সখি। মন্দিরে বিগ্রহ যদি কথা বলে, যদি দৈববাণী হয় অথবা সঙ্গীত যদি রক্ত মাংসের দেহ পায় আমি বিস্মিত হবো […]

ওর কথাটা বোঝো

তোমার যা বলবার কথা, তুমি পুরো একটা ঘন্টা ধরে সব্বাইকে বুঝিয়ে বলেছ। এই বার ওই যে লোকটা একদম পিছনে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে, মঞ্চ থেকে নেমে তুমি একবার ওর কাছে চলে যাও, ওর কথাটা বোঝো। ওর বাড়ি—যদ্দুর জানি—ডায়মন্ড হারবারে। কিংবা কালনা কিংবা কাটোয়ায়। কিংবা অন্য যে-কোনো জায়গায় হোক, ওকে দেখলে বোঝা যায় ওর পেটে দাউদাউ জ্বলছে […]

কত্তো বাবা

বাবার কথা বলে না কেউ কে বলেছে ভাই? এই দেখো না কত্ত বাবার খবর বলে যাই। বাবা থাকেন হাইকোর্টেতে লালসালুরই মাজারে, গডফাদারের অত্যাচারে মানুষ মরে হাজারে। বাবা আছেন বিজ্ঞানেতে, নড়ছে নাকি টনক? হিপোক্রেটিসকে বলা হয় মেডিসিনের জনক। জাতির পিতা আছেন বলি অনেকগুলো জাতিরই, সবাই তাদের মান্য করেন, করেন খায় ও খাতিরই। হুজুর আপনি মা-বাপ বলে […]

অসময়ের পরাহত

  আবারও, আরেকবার অনেকবারের মতই আমি হেরে যাচ্ছি। মনে হচ্ছে তলিয়ে যাচ্ছি ধীর অথচ নিশ্চিত কিন্তু অবধারিত! কাদতে চাইছি আমি কিন্তু, কাদতে পারছিনা চোখে আসেনা জল। কাদবো? কিসের জন্য কাদবো? যদিও সততা, একাগ্রতায় উৎসরগকৃত আমার হাজারো স্বপ্ন যদিও ধাবিত হচ্ছে শীতল নিঃসীম মৃত্যুর কোলে আমিতো জানি এসব আমার প্রাপ্য নয়! মানুষের জন্য আর কিছুই নেই […]