কোনোদিনই পাবে না আমাকে

চন্দ্রমল্লিকার মাংস ঝরে আছে ঘাসে ‘সে যেন এখনি চলে আসে’ হিমের নরম মোম হাঁটু ভেঙে কাৎ পেট্টলের গন্ধ পাই এদিকে দৈবাৎ কাছাকাছি নিজের মনেরই কাছে নিত্য বসে আছি দেয়ালে দেয়ালে হাটের কাচকড় কুপি অনেকেই জ্বালে নিভন্ত লন্ঠন অস্তিত্ব সজাগ করে বারান্দার কোণ বসে থাকে ‘কোনদিন পাবে না আমাকে— কোনদিনই পাবে না আমাকে!

অভিজ্ঞতার গান

আমি চুল নোখ কাটবো না, জামা পাল্টাবো না, স্যান্ডেল বদলাবো না, মশারি টানাবো না, সমস্তটা রাত মশার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গাইবো আমার দুঃখের গান— ঘুণ—ঘুণ—ঘুণ—ঘুণে ছিদ্র হয়ে যাচ্ছে আমার শরীর। তুমি কি জানো, ঘুণ পোকার হাত থেকে বই বাঁচে মানুষের ছোঁয়া যদি পায়— আমার মগজের ভেতরে, কত অসংখ্য বই ঘুণে নষ্ট হয়ে গেছে; এবং প্রতিবার […]

সামরিক আইন ভাঙার পাঁচ রকম পদ্ধতি

তুমি তো জানোই ভালো ক’রে আমাদের বর্বর সমাজে এক রকম সামরিক আইন চিরকালই আছে । দ্বাদশ শতকে ছিল,আছে আজো, হয়তো থাকবে আগামী শতকে । এতে কিন্তু আসলে সুবিধা সকলেরই- অর্থাৎ দালাল ও সুবিধাবাদীরা অর্থাৎ সমস্ত বাঙালি এতে খুবই সুবিধা বোধ করে। শুধু অসুবিধা তোমার আমার, প্রিয়তমা । আমরা কি তিলে তিলে বুঝতে পারছি না সামরিক […]

কিন্তু, আরো কতোদিন

অনুবাদঃ শক্তি চট্টোপাধ্যায় বস্তুত, একটা মানুষ কতোদিন বাঁচে? হাজার দিন? না, শুধু একটি দিন? এক সপ্তাহ? না কয়েক শতাব্দী? কতোদিন পর্যন্ত একটা মানুষ মরতে খরচ করে? কী মানে হয় ‘চিরকালের জন্য’ কথাটার? এইসব ভাবনা-চিন্তার ভেতর গড়াতে-গড়াতে আমি আশপাশটা পরিষ্কার করবো বলে ঠিক করে ফেললাম। আমি খুঁজে বের করলাম জ্ঞানীগুণী পুরুতমশাইদের, তাদের পুজোপাঠ শেষ হওয়া পর্যন্ত […]

মরণ-বিরোধী পঙ্‌ক্তিমালা

আমি গোলাকার চাঁদ এবং জ্যোস্নাধারার কথা চিন্তা করি, অথচ ঘোর অমাবস্যা ধেয়ে আসে আমার দিকে। মনে হয়, একটা কুচকুকে কালো কাফন আমাকে ঢেকে ফেলেছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে। তাহলে আমার দিন কি ফুরিয়ে এলো? চিরকালের জন্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এই শরীর আমার, যাকে কত যত্নেই না ধুলোবালি, নোংরা আবর্জনা থেকে বাঁচিয়ে রেখেছি? শরীর একটু বিগড়ে […]

বোম্বাগড়ের রাজা

কেউ কি জানো সদাই কেন বোম্বাগড়ের রাজা— ছবির ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখে আমসত্ত্ব ভাজা? রানীর মাথায় অষ্টপ্রহর কেন বালিশ বাঁধা? পাউরুটিতে পেরেক ঠোকে কেন রানীর দাদা? কেন সেথায় সর্দি হলে ডিগবাজি খায় লোকে? জোছনা রাতে সবাই কেন আলতা মাখায় চোখে? ওস্তাদেরা লেপ মুড়ি দেয় কেন মাথায় ঘাড়ে? টাকের ’পরে পণ্ডিতেরা ডাকের টিকিট মারে? রাত্রে কেন ট্যাক […]

নোট বই

এই দেখো পেনসিল নোটবুক এ হাতে, এই দেখো ভরা সব কিলবিল লেখাতে। ভালো কথা শুনি যেই চটপট লিখি তায়— ফড়িঙের কটা ঠ্যাং, আরশোলা কি কি খায়; আঙুলেতে আঠা দিলে কেন লাগে চটচট কাতুকুতু দিলে গরু কেন করে ছট্ফট। দেখে শিখে পড়ে শুনে বসে মাথা ঘামিয়ে নিজে নিজে আগাগোড়া লিখে গেছি আমি এ। কান করে কট […]

গোঁফ চুরি

হেড অফিসের বড় বাবু লোকটি বড় শান্ত, তার যে এমন মাথার ব্যামো কেউ কখনো জানত? দিব্যি ছিলেন খোসমেজাজে চেয়ারখানি চেপে, একলা বসে ঝিমঝিমিয়ে হঠাৎ গেলেন ক্ষেপে! আঁতকে উঠে হাত পা ছুড়ে চোখটি করে গোল, হঠাৎ বলেন, ‘গেলুম গেলুম, আমায় ধরে তোল!’ তাই শুনে কেউ বদ্যি ডাকে, কেউ বা হাঁকে পুলিশ কেউ বা বলে, ‘কামড়ে দেবে […]

প্রেম

৪ঠা অক্টোবর তাদের দুজনের প্রথম দেখা হল। তখন বিকেল ঘনিয়ে আসছে। বাতাসে শীতের আমেজ। ১০ই অক্টোবর তাদের দীর্ঘক্ষণ কথা হল টেলিফোনে। সেদিন ছেলেটি নতুন কেনা টব’এ গোলাপের চারা লাগাল। ৩০শে অক্টোবর রেস্টুরেন্টের নিরালা কেবিনে ছেলেটি বলল— তোমাকে আমি ভালবাসি। মেয়েটি লজ্জায় মাথা নিচু করে টেবিলে আঁকিবুকি কাটল। ১২ই ডিসেম্বর গোলাপগাছে কুঁড়ি ধরল। মেয়েটি রেস্টুরেন্টে ছেলেটিকে […]

ভাবনার কথা

একটা রুটির মধ্যে কতটা খিদে থাকে একটা জেল কতগুলো ইচ্ছেকে আটকে রাখতে পারে একটা হাসপাতালের বিছানায় কতটা কষ্ট একলা শুয়ে থাকে একটা বৃষ্টির ফোঁটার মধ্যে কতটা সমুদ্র আছে একটা পাখি মরে গেলে কতটা আকাশ ফুড়িয়ে যায় একটা মেয়ের ঠোঁটে কতগুলো চুমু লুকোতে পারে একটা চোখে ছানি পড়লে কতগুলো আলো নিভে আসে একটা মেয়ে আমাকে কতদিন […]