২৩ সোনালি খড়ে ছাওয়া গোলঘরের টেবিলে এসে বসবার সঙ্গে সঙ্গে ধোপদুরস্ত শাদা প্যান্ট-শার্ট পরা এক সেবক এসে লণ্ঠনের চিমনির মতো কাচের লাল গোলকের ভেতরে দুটি মোমবাতি রাখে। নিবিড় একটি আলো ছড়িয়ে পড়ে। লেডির মুখটিকে আরো অপরূপ দেখায়। কেরানি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে। তার চোখ থেকে বিস্ময় কাটে না_ ইনিই তিনি? যার কথা এত শুনেছে সে, […]
কেরানিও দৌড়ে ছিল
কেরানিও দৌড়ে ছিল
২২ পুরান ঢাকা, তারপর নতুন ঢাকা, তারপর টঙ্গী ছাড়িয়ে, আরো উত্তরে গজারি বনের ভেতর দিয়ে জয়দেবপুর, রাজেন্দ্রপুর, তবে শ্রীপুর! খাম্বা সামাদ কেরানিকে বলে_ ভাই, এই যে গজারি বন দ্যাখেন, উই যে জয়দেবপুর, বিটিশ আম্বলে এই রাজত্ব আছিলো ভাওয়াল রাজাদের। শোনেন নাই ভাওয়াল সন্ন্যাসীর কথা? বিষ খাওয়াইয়া রানী মারছিলো মধ্যম কুমাররে। তারপর বহু বচ্ছর বাদে সেই […]
কেরানিও দৌড়ে ছিল
২১ মঙ্গলবার! মঙ্গলবার! মাথার ভেতরে বোঁ করে ওঠে কেরানির। কোথায় কবে যেন কোন মঙ্গলবার? কিছুতেই তার মনে পড়ে না। কিন্তু ভাবনার চাকা থেমেও থাকে না। কী যেন কবেকার সেই মঙ্গলবারে! দিনের এই বারটা তার পিছু ছাড়ে না। মঙ্গলবার! মাথার ভেতরে অবিরাম কটকট করতে থাকে। শ্রীপুর থেকে ফিরে সোনারগাঁও হোটেলের ঝর্ণা রেস্টুরেন্টে আবার সেই লবস্টার ডিনার। […]
কেরানিও দৌড়ে ছিল
কেরানিও দৌড়ে ছিল
১৯ বিজলির থাম চলতি বুলিতে খাম্বা। খাম্বা সামাদ! আমরা জেনেছি, কাউকে সিধে করতে হলে সে তাকে একটা থামের সঙ্গে বেঁধে পেটায়। কখনও সঙ্গে সঙ্গেই, কখনও পেটাবার আগে দিন কয়েক বিনা দানাপানিতে সে মানুষটাকে বেঁধে রাখে। খুব রোষ হলে নিজ হাতে সে পেটায়, নইলে সঙ্গী-সাথীরাই কাজটা সারে। পুরনো ঢাকার লালবাগ মহল্লা ছাড়িয়ে দূর এক গলির ভেতরে […]
কেরানিও দৌড়ে ছিল
১৭. জীবন কী? মৃত্যুই বা কী? জীবন তো বেঁচে থাকা। অবিরাম বেঁচে থাকার চেষ্টা। আর মৃত্যু? কারো জন্যে চিতার আগুন, কারো জন্যে মাটির ঘর। আহা, তখন তাহারা আপনাকে লইয়া যাইবে। কবরে শোয়াইয়া রাখিবে। তারপর তাহারা আপনাকে মাটির অন্ধকার ঘরে রাখিয়া চলিয়া যাইবে। চলি্লশ কদম দূরে তাহারা চলিয়া গেলেই কবরে আসিবে ফেরেশতা। পুছ করিবে_ বোল তেরা […]
কেরানিও দৌড়ে ছিল
কেরানিও দৌড়ে ছিল
১৪ কেরানির জীবন এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত, আর আমাদেরও গল্পকথনের দরকার হতো না। বুড়িগঙ্গার পাড়ে, কাদার ভেতরে, ডাব-নারকেলের খোসা, খালি বোতল আর চানাচুর-বিস্কুটের ছেঁড়া প্যাকেট একদিন পচে গলে মিশে যায়। আমাদের কেরানিকেও যখন এখানে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়, সেও পতিত হয়ে পড়ে থাকতে পারত দিনের পর দিন। তারপর একদিন সে মাটিতে মিশে যেত, গলে […]
কেরানিও দৌড়ে ছিল
কেরানিও দৌড়ে ছিল
১২ আমাদেরও চোখ ভিজে আসার কথা। স্বামী পত্র পেয়েছে স্ত্রীর। প্রথম লেখা পত্র। নারী বিরহ কাতর। কোন পাষাণের না হৃদয় গলে যাবে। আরও যদি স্মরণ করি, এ সমাজে আমাদের অধিকাংশ নারীর স্বামী ছাড়া গতি নাই। স্বামী কেরানি যে বিয়ের পর বধূটির দেহস্পর্শ পর্যন্ত করে নাই, ভালো করে কথা বলে নাই, বিদায়কালে বলে আসে নাই, তাতে […]