কেরানিও দৌড়ে ছিল

১২ আমাদেরও চোখ ভিজে আসার কথা। স্বামী পত্র পেয়েছে স্ত্রীর। প্রথম লেখা পত্র। নারী বিরহ কাতর। কোন পাষাণের না হৃদয় গলে যাবে। আরও যদি স্মরণ করি, এ সমাজে আমাদের অধিকাংশ নারীর স্বামী ছাড়া গতি নাই। স্বামী কেরানি যে বিয়ের পর বধূটির দেহস্পর্শ পর্যন্ত করে নাই, ভালো করে কথা বলে নাই, বিদায়কালে বলে আসে নাই, তাতে […]

কেরানিও দৌড়ে ছিল

১১ জীবনের চেয়ে বড় নাটক নাই, সত্য। তবে এ নাটক আমাদের এ কথনের কেরানি অনুভব করে না। তার জীবনে এর চেয়ে নাটকীয় ঘটনা আর কী হতে পারে যে পনেরো দিনের ভেতরে দুই নারীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়? কিন্তু আরো আছে অতীতে। আরো অনেক নাটকীয় ঘটনা। সে সকল তার লক্ষে নাই। আমাদেরও তা জেনে কাজ নাই। […]

কেরানিও দৌড়ে ছিল

১০ অধিক জাল দিলে দুধ ঘন হয়। অধিক কথায় পাতলা হয় কথা। আমরা কথাকারেরা এ সকল যদি না বুঝি তবে কহনে নামাটাই বিড়ম্বনা। অতএব অধিক কথায় কাজ নাই। আমাদের ও খোদ কেরানির পক্ষেই অতঃপর যে অবিশ্বাস্য ও অপ্রত্যাশিত ঘটনা তার বাহানা সৃজন না করে বলেই ফেলা যাক রুহিতনের সঙ্গে কেরানির বিয়ে হয়ে যায়। আপনারা সংসারবিজ্ঞ […]

কেরানিও দৌড়ে ছিল

৯ কেরানির জীবনে এরপর যা ঘটে তা যেমন অবিশ্বাস্য তেমনই অপ্রত্যাশিত। কিন্তু সে যে সুচারুভাবে এই আচমকা ঢেউ পার হয়ে যায়, সেটাও আমরা এক্ষুনি দেখতে পাবো। আমাদের খেদ হতে পারে_ অবিশ্বাস্য ঘটনা আমাদের জীবনে ঘটে না কেন! কথা হচ্ছে, আমাদের সবার জীবনেই কিছু না কিছু বিস্ময়কর ঘটেই। অপরের চোখেও তা পড়ে। অপরে তা বর্ণনা করে […]

কেরানিও দৌড়ে ছিল

৮ আবার সেই ফিরতি যাত্রা, হস্তিবাড়ি থেকে ঢাকা, হস্তিবাড়ির বিল পাড় থেকে বুড়িগঙ্গার সদরঘাট। ঢাকা থেকে হস্তিবাড়ি যাত্রাকালে মনের অবস্থা ছিলো এক রকম_ তখন তো সে বিয়ে করতে যাচ্ছিলো, এখন ফিরতি পথে আরেক রকম_ ঘোর একটা অতৃপ্তি নিয়ে সে ফিরছে। ভেবেছিলো, ঢাকা ফিরে সে জানাবে তাকে বিয়ে করতে হয়েছে। বলবে, বাবার অসুখটা এত বৃদ্ধি পায় […]

কেরানিও দৌড়ে ছিল

৭. নান্না ভেবেছিলো, দুপুরের পাতে বসে গল্পগুজবে কথাটা ভুলে যাবে তার বন্ধু। কিন্তু না। ভাত খেয়ে ওঠার পরপরই নান্নাকে টেনে বাইরে আনে কেরানি। বাইরে মানে একেবারে বাড়ির বাইরে, সড়ক ছাড়িয়ে জংগলের দিকে। হনহন করে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ থেমে নান্নাকে কাঁধের ওপর খামচে ঘুরিয়ে ধরে কেরানি বলে, বলো এখন। হাকিমদ্দি কেন আসে নাই? ঘটনা কী? কেরানির […]

কেরানিও দৌড়ে ছিল

৬. ঘুম এসেছিল কী আসে নাই, নির্ণয় নাই; হস্তিবাড়ির এই কুটির, কুটিরের চালার নিচে তার বাসর, মদিনার সঙ্গে কী এক যুবতীর সঙ্গেই তার ঝাঁপবন্ধ একাকী এই প্রথম রাতটিতে, ঘুম অথবা জাগরণের ভেতরেই স্বপ্ন আসে। স্বপ্নে কোনো ছবি নয়, কেবল একটি কণ্ঠস্বর। আর কার? সেই রুহিতনের! স্বপ্নের ভেতর রুহিতনের খসখসে স্বর, মধুনিস্রাবী স্বর আব্বা রাজি না […]

কেরানিও দৌড়ে ছিল

কেরানিও দৌড়ে ছিল

৫. নান্না আর হাকিমদ্দি, কেরানির প্রাণের দুই বন্ধু। সেই কবে হস্তিবাড়ি প্রাইমারি ইশকুলে একসঙ্গে পড়তো তারা, ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় কেরানি যখন জলশ্বেরীর হাই ইশকুলে পড়তে যায়। নান্না আর হাকিমদ্দি তাই বলে কেরানিকে ভোলে নাই। যুবক হয়ে যাওয়ার পরেও যোগাযোগটা থেকে যায়। জলেশ্বরী আরো পরে ঢাকা চলে যাওয়ারও পরে কেরানি যখনই হস্তিবাড়ি আসতো তারা কোথা থেকে […]

কেরানীও দৌড়ে ছিল

কেরানিও দৌড়ে ছিল

৪ বৃষ্টি! বৃষ্টি! কী বৃষ্টি! সোমবার থেকে নেমেছে তো শুক্রবারেও তার জিরেন নেই। টানা পাঁচদিন। বড় বড় মানকচুর পাতা কেটে মাথায় ধরে পথে এখন লোক। আধকোশা নদী থৈ থৈ। ভাগ্যে এখন বাঁধ দিয়েছে সরকার, নইলে নদীর পাগল ধাক্কায় পাড়ের বাড়িঘর ধসে পড়ত নদীর বুকে। বৃষ্টিমাথায় কেরানি এসে ঘাটে দাঁড়ায়। জলেশ্বরী বাস ইস্টিশান থেকেই বৃষ্টি দেখে […]

কেরানিও দৌড়ে ছিল

৩ মঙ্গলবার! দেশের বাড়িতে পেঁৗছুতে হবে মঙ্গলবারেই, বাবার চিঠিতে আদেশ। লঙ্ঘন করার উপায় নাই, সাধ্যও নাই কেরানির, বাবার কথা উপেক্ষা করার ইতিহাস তার নাই। আমি এখন অচল আতুর হয়ে পড়েছি, সংসারের ভার এখন তোমার যুবক ছেলের প্রতি কোনো বাবা যদি এমন ঘোষণা দেয়, একালের ছেলে ক’জন তা মাথা পেতে নেয়? বরং অবিলম্বে একটা ছুতো ধরে […]