প্রেমিকা

এই গল্প-প্রবন্ধটি দুঃখের অথবা কৌতুকেরই কি না, বর্তমান লেখকের জানা নাই। এর বিবরণটি যখন মিসেস রাহনুমা দিয়েছিলেন, তখন খুব হালকাভাবেই ঘটনাটিকে গ্রহণ করা গিয়েছিল, কিন্তু এখন যতই দিন যাচ্ছে, ততটা হালকা আর মনে হচ্ছে না। বিতর্কের চেয়ে গল্পটিতে বরং প্রবেশ করা যাক। সবটাই মিসেস রাহনুমার কাছ থেকে শুনে বয়ান করা নয়, তিনি তো বয়ান করেছেন […]

দেখেছি যে একবার

দেখেছি যে একবার_ সেই দেখা ফুরোলো না আর সেই লাল ডুরে, সেই উঠোনে লেবুর গাছ, তারই তলে কোমল ছায়ার অগাধ ভেতরে ডুবে বালিকা সাজায় তার আপন সংসার। আমার ভেতরে সেই মেয়েটি যে রেখে গেছে তার পুতুল বরের ছবি, আমি যেন সেই রব বধূটির পাশে শুয়ে যখন জ্যোছনার লেবুগন্ধ আলো নেশাতুর রাতের বাসরে জ্বলে, বুকে অভ্র […]

ভালোবেসে

এই আমি এক্ষুণি এলাম আর এক্ষুণি সময় হলো তোমার যাবার? কিছুটা না হয় দেরী করে যেতে অপেক্ষাটি ছুঁতে- কিছুটা না হয় সেচ করে যেতে বীজটিকে পুঁতে! তা নয়! উঠেই গেলে সম্পন্ন সমুদ্র বুকে বিকেলটি ঠেলে প্রান্তরে পা ফেলে। তারপর এলো সন্ধ্যা,নক্ষত্র তখন তার আগুনের অক্ষরে অক্ষরে সারারাত ধরে লিখে গেলো কার নাম আকাশের পটে? সে […]

চাই আমি তোমাকেই

চাই আমি তোমাকেই, রক্তের ভেতরে চাই, নিঃশ্বাসের চেয়ে আরো বিশ্বস্ত শোধক; আমি চাই একটি গর্ভিনী মাছ আকালের দেশ দিয়ে প্রবাহিত নদীর ভেতরে; যখন পুড়ছে গ্রাম, পান্ডুলিপি পুড়ে যাচ্ছে, ঘন্টার চিৎকারে লাল তোমাকেই চাই; যখন হাতের রশি তরঙ্গের দাঁতে কাটে, বিপন্ন সুনীলে চাই তোমার জাহাজ। বুঝি না তোমার কানে পশে কিনা শব্দহীন সংকেতের অবিরাম এই ধ্বনিগুলো। […]

মনে রেখো তুমি কবিকে তোমার

তখন আসীন পূর্ণিমা চাঁদ আকাশ সিংহাসনে_ কবিও কলম হাতে নিয়ে খুব মেধাবী নদীতে দিচ্ছিল ডুব, জ্যোৎস্নার রূপ ভাষায় ফোটাবে_ এই ছিল তার মনে। হঠাৎ কখন ধেয়ে আসে বেগে বিরূপ ঝড়ের মেঘ, চাবুকের মতো মারছে যে হাওয়া বিঘি্নত হয় তার লিখে যাওয়া। যুদ্ধেই তবে যেতে হয় বুঝি_ দেখা দিলো উদ্বেগ। এবং তখনও তার দুই চোখে রূপকল্পের […]

সেবার শীতের অগ্নি

সেবার অঘ্রানে শীত হাড়ে হিম নিয়ে নেমেছিল, সেবার শত্রুর সাথে গ্রীষ্মকালে যুদ্ধ শুরু হয়। পুরনো বন্দুক! আর, কার্তুজেরও খুব টান ছিল— কেবল প্রচুর ছিল আগুনের কাঠ বনময়। তবুও আগুন জ্বেলে অঘ্রানের শীত তাড়াবার উপায় ছিল না—হেতু, অবস্থান শত্রু জেনে যাবে। হিম সহ্য করে যাচ্ছি, আমাদের হাত-পা অসাড়, অথচ আঙুল ছিল ট্রিগারেই—সতর্কতা চাপে! এবং করোটি জুড়ে […]

অমাবস্যা চিরে যাক

কী কথা তাহার সাথে? তার সাথে? প্রশ্ন প্রেমিকের যখন প্রেমিকা তার কথা বলে অপরের সাথে। ওটি কি কাব্যেই শুধু? ওই ভাষা- জীবনানন্দের। এখনও কি তরুণ প্রেমিক তার প্রমিত ভাষায়? পথ চলতে থেমে যাই!- ওর লগে তুই কি করোস? কিয়ের প্যাচাল এত? উত্তরে সে, তুই কি জেলাস? দিন পরে দিন যায়, সরোদের টংকারে খরজ। বানরের হাতে […]

মেধাবী নাবিক তুমি

রচুর চোখের জল, মগজেও মাতাল জাহাজ, বেহেড বাতাস খুব পরামর্শ দিয়ে বেসামাল করতে চাইছে এই কলমের নিবটিকে আজ- এর মধ্যে কোথায় শব্দের মাল্লা ওড়াবে যে পাল? তবু কি নিস্তার আছে? অচিরেই উঠবে যে ঝড় সে বিষয়ে আমি ছাড়া কে আর নাবিক এই স্থলে? কবেই উৎসন্ন গ্রাম, কলেরায়- বসন্ত তৎপর তদুপরি! ডাকে দূর সমুদ্রটি কলকলকলে। অতএব […]

এখন দূরে ডাকছে কেউ

তোমার যদি ঘুম পেয়েছে, ঘুমোতে যাও তুমি আমার নেই বিছানা, নেই ঘর। তারার নিচে এখন চিৎ আমার জন্মভূমি চতুর্দিকে ক্রন্দনের স্বর। এখন চাঁদ অন্নহীনের শূন্য কাঁসার থাল আছাড় দেয় আলো মাটির ‘পর। আমার চোখে ঘুম আসে না, নদীর পানি লাল হাড়ের মতো শাদা নদীর চর। এখন দূরে ডাকছে কেউ, পাথার ভেঙে আসে ও কার এত […]

ম্যান্ডেলা! ম্যান্ডেলা!

আফ্রিকার জেব্রার পাল খুরে খুরে দুন্দুভি দুবদাব তুলে ঝলসিত সাভানার প্রান্তর দিয়ে ছুটে আসছে, চিরে যাচ্ছে শতাব্দীর কালো নীরবতা, মানবের প্রথম ধনুক ওই দিগন্ত, তাকে জ্যা-নিবদ্ধ করে নিনাদ উঠছে ওই—জেব্রাপালের পায়ে দুবদাব— ম্যান্ডেলা! ম্যান্ডেলা! আর সেই একদিন, আমার এ রক্তাক্ত ব-দ্বীপের ওপর দিয়ে স্রোতের মতো বহে যায় যে বজ্রকণ্ঠ— আজও আমাকে জাগ্রত করে রাখে। বলীবর্দের […]