ম্যান্ডেলা! ম্যান্ডেলা!

আফ্রিকার জেব্রার পাল খুরে খুরে দুন্দুভি দুবদাব তুলে
ঝলসিত সাভানার প্রান্তর দিয়ে ছুটে আসছে,
চিরে যাচ্ছে শতাব্দীর কালো নীরবতা,
মানবের প্রথম ধনুক ওই দিগন্ত, তাকে জ্যা-নিবদ্ধ করে
নিনাদ উঠছে ওই—জেব্রাপালের পায়ে দুবদাব—
ম্যান্ডেলা! ম্যান্ডেলা!

আর সেই একদিন, আমার এ রক্তাক্ত ব-দ্বীপের ওপর দিয়ে
স্রোতের মতো বহে যায় যে বজ্রকণ্ঠ—
আজও আমাকে জাগ্রত করে রাখে।
বলীবর্দের মতো শিঙ ওঁচানো মুক্তিযোদ্ধা, পদচাপে ধ্বনি,
তার প্রতিটি পটহের ভেতরে কান পাতলেই—
জয় বাংলা! জয় বাংলা!

বাংলার ব-দ্বীপ আর আফ্রিকার মালভূমি, ব্যবধানে তো নয়
এই সবুজ আর ওই পাটল, উচ্চতা ও সমতল,
এক হয়ে যায় কালো ও বাদামি।
মাটি, তুমি আফ্রিকার কুনু গ্রামে এখন তৈরি হয়ে আছ
গর্ভে তুমি ফিরিয়ে নেবে সন্তানের বীরদেহ—
যেমন একদিন তুমি টুঙ্গিপাড়ায়।

বীরেরই তো প্রাণ প্রবাহিত হয় প্রজন্মের পর প্রজন্ম।
আফ্রিকারও সাভানায় জেব্রাপালের পায়ের চাপে
নিয়ত ধ্বনি উঠবে ইতিহাসের পৃষ্ঠায়,
শেকল ছেঁড়ার প্রতিটি যুদ্ধে, সাম্যের প্রতিটি অভিযাত্রায়,
মানুষের উত্থানের দর্পে ও প্রত্যয়ে বারবার—
ম্যান্ডেলা! ম্যান্ডেলা!