ক্লাউনের পোশাক পরে

শেখের সম্বরা, আত্মার সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে শওকত ওসমান ক্লাউনের পোশাক পরে সমাজের সঙ্গে লড়াই করেছেন। এই পোশাকটা তার দরকার, তিনি যেসব প্রশ্ন করতে চান কিংবা সমালোচনা, এ পোশাকটা তাকে কতক সুবিধা দেয়। তিনি ক্লাউন, তিনি বাইরের লোক, তার চোখে সব ধরা দেয়, তিনি অন্যদের চেয়ে বেশি অবেগপ্রবণ এবং স্পর্শকাতর। এই পোশাক পরে শওকত ওসমান […]

হাশেম খানকে কেন প্রয়োজন

হাশেম খান বাংলাদেশের এক ধরনের ইতিহাস সংরক্ষণ করে চলেছেন এবং অন্য পক্ষে সময়ের অভিজ্ঞতা নিজের ভেতর ধারণ করেছেন। এই দুই বোধ শৈল্পিক যা কিছু যা কিছু প্রচার করে তার বিরোধী। হাশেম খান তার জীবন বোধ থেকে বুঝেছেন, প্রলেটারিয়াল বিপ্লব থেকে বুঝেছেন ধনতন্ত্রই ইতিহাসকে ধ্বংস করে, সেজন্য অতীতের দিকে ফিরে ফিরে তাকাতে হয়। হাশেম খান অতীতের […]

বুকের মধ্যে গুলির গর্ত

নান্দাইল স্টেশনে এসে ট্রেনটা থেমে যায়। একটা বিশাল আওয়াজ মনে হয় ট্রেনটার গতি থামিয়ে দেয়। আওয়াজটা কি চিৎকার? সস্নোগান? কান্না? সবকিছু মেশানো একটা স্বর আমাকে ঘিরে ধরে। সবাই হুড়মুড় করে নেমে পড়ছে। কী ব্যাপার। ট্রেন যাবে না। কৃষকরা লাইনের ওপর বসে পড়েছে। বেলা দেড়টা বাজে। শেষ চৈত্রের রোদ আগুনের মতো, বাতাসটা গরম, মুখ পুড়ে যায়। […]

বৃষ্টি ছড়িয়ে পড়ছে কাছে এবং দূরে

বৃষ্টি ছড়িয়ে পড়ছে কাছে এবং দূরে মোটা দানার বৃষ্টি আমি গন্ধ পাচ্ছি তোমার হাতে আমার হাত রেখে, যেন চোখের পানি বৃষ্টির সঙ্গে লড়াই চোখের পানির আমি কান্না দেখছি এবং শুনছি চতুর্দিকে, খালি গায়ে দেবদূতরা ঘুরছে গাছের শিকড়ে পানি দেওয়া দেখছে, বৃষ্টি আসুক ঝড় যেন না আসে একটা দীর্ঘ কবিতার লাইনের মতো বৃষ্টির শব্দ, মহিলারা চুল […]

কেন ক্রোধ শেষ হয় না

একজিবিশন দেখে যখন বার হই, তখন বোধ হয় মিল্কী, কি নাম দেব তার, বখতিয়ার, আমাকে একটি মৃত শহরে পৌঁছে দিয়েছেন। অথচ মৃত শহরের ভয়ঙ্করতা আমার একেবারে চেনাজানা। আমার মনে হচ্ছে তিনটা গ্রাম মিলে একটা গ্রাম হয়েছে, তিনটা নদী মিলে একটা নদী হয়েছে, তিনটা নারী মিলে একটা নারী হয়েছে: বখতিয়ার তিনটা গ্রাম মিলে একটা মৃত গ্রাম […]

এক কষ্টের ভেতর অনেক কষ্ট

যেদিন ঢাকার রাস্তায় ট্যাঙ্ক নামে, সাধারণ নির্বাচন স্থগিত হয়, কারফিউর ঘোষণা থেকে থেকে জানানো হয় এবং বলা হয় রাস্তায় বের হলে সরাসরি গুলি করা হবে, সেদিন রহমত আলী তার খামারবাড়িতে নিবিষ্ট মনে আম্রপালী গাছগুলোর গোড়ায় সার দিচ্ছিল। গত বছর আম ধরেনি। এ বছরও কি খালি যাবে? রহমত আলী মানতে পারছিল না ফলহীন আম গাছগুলোর চেহারা। […]

ফিরে যাবার সময়

আমার ফিরে যাবার সময় ঘনিয়ে আসে। কবে আবার গ্রামে ফিরব জানি না। কিন্তু এটাও সত্য ঢাকা শহর আমাকে ঘাড় ধরে গ্রামে ফেরত পাঠাবে। আমি না শহরের না গ্রামের। আমার মধ্যের এ অস্থিরতা দেখে মলি ঠোঁট টিপে হাসে। আমি গ্রামের আকাশকে বিদায় দিতে পারি না, তেমনি শহরের আকাশকে গ্রহণ করতে পারি না। গুডবাই বলা আমার হয় […]

আমরা আমাদের কাছে আশ্চর্য

তুমি বলো : কেন আমরা ভালোবাসতে পারি না কেন আমাদের ভালোবাসা নিরাপদ না, আমি আকাশের দিকে চেয়ে মৌন হয়ে থাকি। তুমি তো আমাকে হাত ভরে দাও আমিও তো তোমাকে হাত ভরে দিই আমাদের ভেতরে ভালোবাসার মঞ্জরি ফুটতে থাকে আস্তে আস্তে, যেমন আস্তে আস্তে আকাশ ফুটতে থাকে তোমার শরীরে যখন তুমি বেড়িয়ে ফেরো, আমি বহুদূর থেকে […]

হেমন্তের আলোর ভিতর

তোমার হাতে তোমার নতুন নামটা দিতে চাই আমার গিফট তুমি হাসতে হাসতে বলেছ : আমার গিফট আমাকে দাও আমার গিফট তোমার আঙ্গুলে আংটির মতো জ্বলজ্বল করে হেমন্তের আলো চারপাশে নরম মদির মায়াবী আমরা হাসতে হাসতে অনেকদূর চলে যাই হেমন্তের আলোর ভিতর, আমার ভিতর তুমি খুঁজে পাও হেমন্ত শেষের উজ্জ্বলতা।

আমার পালা কবুতরগুলি কে দেখবে

যত আমার বয়স বাড়ছে তত আমি পেনশনার হয়ে উঠছি বয়স আমারে অনামা করে তুলেছে নিজের কাছে এবং অন্যদের কাছে (আমার এখন কোনো নাম নেই সবার কাছে আমি প্রান্ত কা কিংবা দাদাভাই) কে কি আমার সম্বন্ধে ভাবছে আমার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই, আমার ঘরবাড়ি থেকেও নেই যত শেষের দিনগুলো কাছে আসে চিরন্তন অভাব আমাকে ঘিরে ধরে কেন […]