প্রেমিক অন্য জাতের

আমায় বন্দী করে আয়েস, পেছন টানে বিলাস। উন্মাদনায় মত্ত হাতে জনি ওয়াকারের গেলাস। আমি বাউল জীবন কাটাই নিজে নিজের কুনাম রটাই পাড়ায় গুঞ্জন ওঠে সালা সব বেটারাই জেলাস। ওই পাহাড় চুড়ায় রুমি কেন দাঁড়িয়ে আছো তুমি! পাথর কেটে রাস্তা গড়তে হাঁপিয়ে যাচ্ছি আমি। মনে স্বপ্নের মেঘ ভরে আমায় শিতল স্পর্শ করে তোমার আদুর সঙ্গ আমার […]

প্রেম চাই

এই মুহূর্তে, এক্ষুনি আমার একটু প্রেম দরকার। একটু আগেই কলমটা একগাদা নোংরা বমি করল। শুরুতেই ‘বিবর্ণ ধুসর প্রান্তর’। আমি দুহাত দিয়ে আপ্রান চেপে ধরলাম নীপটাকে। ফস্কে গেল, ছড়াত! কালি ছড়িয়ে পরল খাতার মধ্যিখানে। সেখান থেকে বেরিয়ে এলো এক নিকষ অন্ধকার, এবার সেই অন্ধকার ধীরে ধীরে হয়ে উঠল ‘রক্তস্রাব’। ঘিনঘিনে পোকাগুলো কিলবিলিয়ে সাঁতরাতে লাগল তার ওপর। […]

কল্পনার স্মৃতি

কিরে? তোর মনে পরে? মনে পরে সেই দর্জিপাড়ার অন্ধগলিটা? যেখানে প্রথমবার তোর মখমল হাত ছুঁয়ে গেল আমার হাতে। হাল্কা কেঁপে, চট্‌ করে একটু তফাৎ বানিয়ে নিয়েছিলি। তারপর দুজনেই চুপ। সেখান থেকে এগলি সেগলি পথ হারানো জটিল বাঁক স্যাঁতস্যাঁতে নোনালাগা দেয়াল ঘোরের মধ্যে পেরতে পেরতে হঠাৎ পৌঁছে গেলাম বড় রাস্তার মোড়ে। রাস্তার ওপারে তখন নিয়ন আলোয় […]

বাউন্ডুলে

সময়ের সাথে পাতিয়েছি ঘুম রাত্রি যখন ক্লান্ত নিঝুম শামুখ সময় গা এলিয়ে সে ঘুমায় আমি তাড়াই। কাজের সাথে পাতিয়েছি অলস দাঁড় কাকেতেও ভরায় কলস মত্ত আমি মহুয়া চড়াই সে ছোটে আমি দাঁড়াই। কাশবনে আজ পাল তুলেছি শিশির ফোঁটায় চান করেছি শরত এসে শিউলি বিছায় সে ঝরে আমি নাড়াই। উড়িয়েছি রাত ব্রহ্মাণীতে মন ডুবেছে জল বালিতে […]

দামাল মেয়ে

দুরন্ত, দামাল, দস্যি মেয়ে তার অনেক ডাক নাম। পায়ে সরষে দিয়ে চড়কি কেটে বেড়াত সারা গ্রাম। ওপাড়ার হারান কাকার বাগান থেকে রোজ আমড়া চুরি করত তারপর পুঁচকে সাগরেদদের নিয়ে বসতো দামোদরে তীরে কাঁচা লঙ্কা, নুন সহযোগে জমে উঠত চরুইভাতি। একবার তো নেপালদের বাগান থেকে গোটা কলার কাঁদ কেটে নিয়ে এসেছিল। নেপালের বাবা জানতে পেরে, সে […]

বীজ

পশ্চিম থেকে কালো মেঘ উঠে ছেয়ে দিয়েছে আকাশ। ভরদুপুরে কুলুঙ্গিতে লম্ফু জ্বলছে। সে জানে চুল আজ শুকোবে না তাও মাথা ঘসেছে গুঁড়ো সাবান দিয়ে ভেজা চুলে সুগন্ধি তেল মাখিয়েছে। মাটির দাওয়ায় বসে আছে মুন্ডুরি রাঙ্গা মোড়াম এর পথ চেয়ে। চিনিলাল- এর ভাবনায় গায়ের গন্ধ তীব্র হয়। দিগন্তে চুমু খাওয়া মাঠ পেরিয়ে শাল পিয়ালের বন পাশ […]

দেখা শোনা

কত কি বলতে চাইতে তুমি। তোমার মা, স্কুল, ছাত্রী বাসের ভিড়, রাস্তার ময়লা, মোড়ের বখাটে ছেলেটা, আরও কত কি। আমি শুনতাম না, সময় ছিল না। সংকটমোচন টুপি মাথায় গলিয়ে বাতলে দিতাম সহজ উপায়। একনিষ্ঠ শ্রোতার খোঁজে…… সেদিন বেরিয়ে গেলে তুমি। আজ আমি সব শুনি। নৈশব্দের এই গ্রামের সব শব্দ আমি স্পষ্ট শুনি। পাগল বাতাস যখন […]

দিকশূন্যপুর

এই শহর বা সেই শহর হয়তোবা নাম না জানা কোনও গ্রাম তুই আছিস সেখানে। স্বামী সন্তানের আদরে জড়ানো ঘরকন্না করছিস সুখে। এখনো হয়তো দুপুরবেলা বিছানায় উপুর হয়ে শুয়ে সুনীল বাবুর উপন্যাস পড়িস। হ্যাঁরে, কোনও চরিত্রের সাথে আমার মিল খুঁজে পাস? আমি পাই। আমার ভীষণ নীল হতে ইচ্ছে করে। এখন আমি কোথায় জানিস? ভাটিনার জঙ্গলে। লাল […]

হকার

নিস্তব্ধ রাতের শহরে টালমাটাল পদক্ষেপ। নোনা লাগা, শ্যাওলা জড়ানো দেয়ালে ভর দিয়ে এগিয়ে চলা। নিষিদ্ধ পল্লী ফেরত পথে কুকুরদের এলাকা দখলের লড়াই পাশ কাটিয়ে গলির মুখে এসে দাঁড়াল। দীর্ঘ দিন যাপনের ক্লান্তি তার চোখে মুখে প্রতিটি লোমকূপে। পকেটে সরকারি নোটিস। ত্রিফলা বাতির নিচে গিয়ে বসলো সৌম্য। মনের বোতলে কান্নারা ভিড় করে কিলবিল করে ঢেকুরের সাথে […]

খচ্চর

আজও সেই একই জায়গা। নিথর, নিঃশ্চুপ দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রানীটা। যদিও এক নজরে দেখলে প্রানহীন মনে হয়। চোখ দুটো বারে বারে বুজে আসে। সারা গায়ে ঘা হয়ে লোম উঠে গেছে। বৈশাখের খাঁখাঁ রোদ্দুর। নিঝুম পথ। গঞ্জের বুক চিঁরে বয়ে চলা সর্পিল নয়ানজুলির ওপর এই কাঠের সাঁকো। এপাড়ার সাথে গঞ্জের একমাত্র সংযোগ। তার ওপরেই দণ্ডায়মান নিরিহ প্রান […]