দিকশূন্যপুর

এই শহর বা সেই শহর
হয়তোবা নাম না জানা কোনও গ্রাম
তুই আছিস সেখানে।
স্বামী সন্তানের আদরে জড়ানো
ঘরকন্না করছিস সুখে।
এখনো হয়তো দুপুরবেলা
বিছানায় উপুর হয়ে শুয়ে
সুনীল বাবুর উপন্যাস পড়িস।
হ্যাঁরে, কোনও চরিত্রের সাথে আমার মিল খুঁজে পাস?
আমি পাই।
আমার ভীষণ নীল হতে ইচ্ছে করে।

এখন আমি কোথায় জানিস?
ভাটিনার জঙ্গলে।
লাল মোড়ামের পরিত্যক্ত খাদানে
শালপাতার বিছানায় শুয়ে রয়েছি।
বড় শান্ত এই জায়গাটা
নিজের শিরা উপশিরা দিয়ে বয়ে চলা
রক্তস্রোতের শব্দও
স্পষ্ট শোনা যায়।
ধানুমুনি আজ মাথায় ধুতরো ফুল গুঁজেছে।
ওকে দেখে রবি ঠাকুরের কৃষ্ণকলি মনে পরে।
এক হাঁড়ি মহুয়া
গরম ভাত আর তেঁতুল ছেঁচা
রেখে গেছে আমার মাথার কাছে।

তুই হয়তো বিশ্বাস করবিনা,
এখন আমি উড়ছি।
বক সাদা মেঘের ওপর দিয়ে ভাসতে ভাসতে
পাহাড় জঙ্গল মাঠ সমুদ্র
পেরিয়ে যাচ্ছি অনায়াসে।
হতে পারে এই পথেই পেরিয়ে এসেছি তোরও বাড়ি,
তোর এলোচুল মেঘ পাশ কাটিয়ে
এসে পৌঁছেছি হরিণ চোখ মেয়েটার কাছে।
এখন বৃষ্টি ধুয়ে দিচ্ছে তার কষ্টিপাথর শরীর।
আমি অবাক চোখে দেখছি তার রূপ।
এইতো দিকশূন্যপুর।