কল্পনার স্মৃতি

কিরে?
তোর মনে পরে?
মনে পরে সেই দর্জিপাড়ার অন্ধগলিটা?
যেখানে প্রথমবার তোর মখমল হাত
ছুঁয়ে গেল আমার হাতে।
হাল্কা কেঁপে, চট্‌ করে একটু তফাৎ বানিয়ে নিয়েছিলি।
তারপর দুজনেই চুপ।
সেখান থেকে এগলি সেগলি
পথ হারানো জটিল বাঁক
স্যাঁতস্যাঁতে নোনালাগা দেয়াল
ঘোরের মধ্যে পেরতে পেরতে
হঠাৎ পৌঁছে গেলাম বড় রাস্তার মোড়ে।
রাস্তার ওপারে তখন নিয়ন আলোয়
দাঁড়িয়ে পরেছে কঙ্কালসার মূর্তিরা।
সস্তার মেকআপ আর উগ্র পোশাক।
ভয়ার্ত তুই আঁকড়ে ধরেছিলি আমার জামা।
সেদিন প্রথমবার হাত রেখেছিলাম
তোর নরম কাঁধে ।
ভুলেছিস তো?
বাদ দে।
সেই দিন টা নিশ্চয় মনে আছে…
সেদিন গোটা দিন খেয়েই যাচ্ছিলাম।
সকালে মালঞ্চর মাংসের সিঙ্গারা
দুপুরে জগন্মাতার কলাপাতায়
কাঁকড়ার ঝোল দিয়ে গরম ভাত
বিকেলে নেতাজীর পেঁয়াজি
আর সন্ধ্যায় গোল বাড়ির কষা মাংস।
সারাদিন খাচ্ছিলাম আর চরে বেড়াচ্ছিলাম
শিমলা, হেদুয়া, রুপবানী,
শ্যামবাজার, আহিরিটোলা, কুমোরটুলি
ট্রাম লাইন, পাথর বাঁধানো রাস্তা।
সন্ধ্যের কিছু পরে গিয়ে বসেছিলাম
নিমতলা ঘাটের অন্ধকার কোনাটায়।
সেদিন প্রথমবার কাঠপিঁপড়ে কামড় বসিয়েছিলাম
তোর গোলাপ পাঁপড়ি ঠোঁটে।
সেটাও ভুলেছিস!
আর এই যে সেদিন খুন্তি নাড়লি
আমার বাসার ছোট্ট রান্না ঘরে।
কলমির শাক ভাজা
পটল দিয়ে কুমড়োর ছেঁচকি
আর লাউ চিংড়ি।
আয়েস করে খেয়ে
বসেছিলাম আমার সিঙ্গল চৌকিতে।
তোর গায়ে জুঁই ফুলের গন্ধ
শুঁকে নিয়েছিলাম প্রান ভরে
চুমু খেয়েছিলাম
ললাট, কপল, অধর, গ্রিবা
উদ্দাত্ত স্তন, অতল নাভি, উষ্ণ যোনি
তোর প্রত্যেকটা লোমকূপে।
সেদিন প্রথমবার প্রবেশ করেছিলাম তোর ভেতর।
হায়রে! এটাও ভুলেছিস?

আসলে এসব মিথ্যে কথা।
তোকে না অদেখার অতৃপ্ত আত্মা নিয়ে
এখন নিঃস্ব আমি
কল্পনাতে স্মৃতি আঁকি।