যাকে চেয়েছিলাম তাকে

যাকে চেয়েছিলাম তাকে পেলাম না যে-ঘাট ছাড়ে নৌকা তাতে গেলাম না কপাল আমার মন্দ তাতে সন্দেহ কি চোখ বুজলে প্রিয় কেবল তোমায় দেখি। ফুলগাছে জল দিলাম তাতে ধরেছে ফল যে-ঘরে পৌঁছুলাম দেখি ভাঙা আগল অমূল্য রাখবো না বলেই গেলাম না যাকে চেয়েছিলাম তাকে পেলাম না। সারা জীবন সন্ধে-সকাল করেও ফাঁকি কপাল আমার মন্দ তাতে সন্দেহ […]

যে যায় সে দীর্ঘ যায়

একজন দীর্ঘ লোক সামনে থেকে চলে গেলো দূরে — দিগন্তের দিকে মুখ, পিছনে প্রসিদ্ধ বটচ্ছায়া কে জানে কোথায় যাবে— কোথা থেকে এসেছে দৈবাৎ-ই এসেছে বলেই গেলো, না এলে যেতো না দূরে আজ। সমস্ত মানুষ, শুধু আসে বলে, যেতে চায় ফিরে। মানুষের মধ্যে আলো, মানুষেরই ভূমধ্য তিমিরে লুকোতে চেয়েছে বলে আরো দীপ্যমান হয়ে ওঠে — আশা […]

মনে মনে বহুদূর চলে গেছি

মনে মনে বহুদূর চলে গেছি ৷ যেখান থেকে ফিরতে হলে আরো একবার জন্মাতে হয় ৷ জন্মেই হাঁটতে হয়, হাঁটতে-হাঁটতে, হাঁটতে-হাঁটতে একসময় যেখান থেকে শুরু করেছিলাম সেখানে পৌঁছুতে পারি ৷ পথ তো একটা নয় – তবু, সবগুলোই ঘুরে ফিরে, ঘুরে ফিরে শুরু আর শেষের কাছে বাঁধা নদীর দু – প্রান্তের মূল একপ্রান্তে জনপদ অন্যপ্রান্ত জনশূণ্য দুদিকেই […]

শব্দ শুধু শব্দ

যেন পাহাড় ভাঙতে আমার একটি জীবন নষ্ট হবে প্রভু কি তাই ভাঙলে তুমি? বাউলগানের মতন সৃজন হয় না ব’লে অগৌরবের প্রভু আমার জন্মভূমি নাকি হিসেব সমস্ত ভুল, কালবিনাশী সহাস্যতায় নদীতে বাঁধ বাঁধলে কথায় শব্দ শুধু শব্দ এবং শব্দ মানেই সাশ্রু কুমীর।

ভুল থেকে গেছে

নিশ্চিত কোথাও কোনো ভুল থেকে গেছে… প্রধান অসুখ নিয়ে কলকাতায় ঘোরে লক্ষ লোক আজ কিছুদিন হলো তারই মধ্যে বসন্ত এসেছে প্রত্যক্ষ পলাশে, পাশে মুচকুন্দ চাঁপার নোলক— নিশ্চিত কোথাও কোনো ভুল থেকে গেছে ব্যবহারে। মানুষের সব গিয়ে এখন রয়েছে হিংসা বুকে প্রেম-পরিণয় গিয়ে এখন সে রক্তের অসুখে মোহ্যমান, প্রাণ নিতে পারে নিশ্চিত কোথাও কোনো ভুল থেকে […]

ভালোবাসা তিনশতাব্দীর

দু’চোখে কলমির ফুল যেন তুমি বৃষ্টির সে বনঘ্রাণ পেয়ে গেছো, সকালে, সুন্দর বহুকাল বাদে যেন মাছস্পর্শ পাও দাঁতের মাড়ির মধ্যে, নেবুগাছ গন্ধের মতন তীব্র ছেলেখেলা আর মিথ্যে মিথ্যে কথা! বয়স হয়েছে, তবু বৃদ্ধ, তুমি নিজেকে হারাও! অদ্ভূত দুঃখের গন্ধ তোমার শরীরে— বৃদ্ধ, মনঃ ছিলো নাকি তোমার শরীরে বড়ো কষ্ট, বৃদ্ধ, আজ তোমার শরীরে অতিস্বাভাবিকতার হাওয়া […]

নির্জনতা ভালো

নির্জনতা ভালো, কিন্তু কতটুকু ভালো? বনের ভিতর যাও, থাকো কিছুদিন ঘাস পাতা খাও, কিছু ফুল খাও শুয়ে থাকো হিম অন্ধকারে, ঘুমঘোরে শিকড়ের পরে—- দিন যাবে। কিন্তু, তা কী করে যাবে? দিনরাত্রি নেই— এই বন স্থির হয়ে বহুক্ষণ আছে। কিছুদূর থেকে ঐ কোলাহল ভেসে আসে কানে ঝর্না ভেঙে পড়ে থাকে বাতাসের গানে— নির্জনতা ভালো, কিন্তু কতটুকু […]

কোনোদিনই পাবে না আমাকে

চন্দ্রমল্লিকার মাংস ঝরে আছে ঘাসে ‘সে যেন এখনি চলে আসে’ হিমের নরম মোম হাঁটু ভেঙে কাৎ পেট্টলের গন্ধ পাই এদিকে দৈবাৎ কাছাকাছি নিজের মনেরই কাছে নিত্য বসে আছি দেয়ালে দেয়ালে হাটের কাচকড় কুপি অনেকেই জ্বালে নিভন্ত লন্ঠন অস্তিত্ব সজাগ করে বারান্দার কোণ বসে থাকে ‘কোনদিন পাবে না আমাকে— কোনদিনই পাবে না আমাকে!

কিন্তু, আরো কতোদিন

অনুবাদঃ শক্তি চট্টোপাধ্যায় বস্তুত, একটা মানুষ কতোদিন বাঁচে? হাজার দিন? না, শুধু একটি দিন? এক সপ্তাহ? না কয়েক শতাব্দী? কতোদিন পর্যন্ত একটা মানুষ মরতে খরচ করে? কী মানে হয় ‘চিরকালের জন্য’ কথাটার? এইসব ভাবনা-চিন্তার ভেতর গড়াতে-গড়াতে আমি আশপাশটা পরিষ্কার করবো বলে ঠিক করে ফেললাম। আমি খুঁজে বের করলাম জ্ঞানীগুণী পুরুতমশাইদের, তাদের পুজোপাঠ শেষ হওয়া পর্যন্ত […]

দাঁড়াও

মানুষ বড়ো কাঁদছে, তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও মানুষই ফাঁদ পাতছে, তুমি পাখির মতো পাশে দাঁড়াও মানুষ বড়ো একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও। তোমাকে সেই সকাল থেকে তোমার মতো মনে পড়ছে সন্ধ্যে হলে মনে পড়ছে, রাতের বেলা মনে পড়ছে মানুষ বড়ো একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও। এসে দাঁড়াও ভেসে দাঁড়াও এবং ভালোবেসে দাঁড়াও […]