চাবি

আমার কাছে এখনো পড়ে আছে তোমার প্রিয় হারিয়ে যাওয়া চাবি কেমন করে তোরংগ আজ খোলো? থুতনিপরে তিল তো তোমার আছে এখন? ও মন নতুন দেশে যাবি? চিঠি তোমায় হঠাত্ লিখতে হলো । চাবি তোমার পরম যত্নে কাছে রেখেছিলাম, আজই সময় হলো – লিখিও, উহা ফিরত্ চাহো কিনা? অবান্তর স্মৃতির ভিতর আছে তোমার মুখ অশ্রু-ঝলোমলো লিখিও, […]

এবার হয়েছে সন্ধ্যা

এবার হয়েছে সন্ধ্যা। সারাদিন ভেঙেছো পাথর পাহাড়ের কোলে আষাঢ়ের বৃষ্টি শেষ হয়ে গেলো শালের জঙ্গলে তোমারও তো শ্রান্ত হলো মুঠি অন্যায় হবে না – নাও ছুটি বিদেশেই চলো যে কথা বলনি আগে, এ-বছর সেই কথা বলো। শ্রাবনের মেঘ কি মন্থর! তোমার সর্বাঙ্গ জুড়ে জ্বর ছলোছলো যে কথা বলনি আগে, এ-বছর সেই কথা বলো। এবার হয়েছে […]

একবার তুমি

একবার তুমি ভালোবাসতে চেষ্টা কর – দেখবে, নদির ভিতরে, মাছের বুক থেকে পাথর ঝরে পড়ছে পাথর পাথর পাথর আর নদী-সমুদ্রের জল নীল পাথর লাল হচ্ছে, লাল পাথর নীল একবার তুমি ভাল বাসতে চেষ্টা কর | বুকের ভেতরে কিছু পাথর থাকা ভাল – ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায় সমস্ত পায়ে-হাঁটা পথই যখন পিচ্ছিল, তখন ওই পাথরের […]

আতাচোরা

আতাচোরা পাখিরে কোন তুলিতে আঁকি রে হলুদ ? বাঁশ বাগানে যইনে ফুল তুলিতে পাইনে কলুদ হলুদ বনের কলুদ ফুল বটের শিরা জবার মূল পাইতে দুধের পাহাড় কুলের বন পেরিয়ে গিরি গোবর্ধন নাইতে ঝুমরি তিলাইয়ার কাছে যে নদিটি থমকে আছে তাইতে আতাচোরা পাখিরে কোন তুলিতে আঁকি রে —হলুদ ?

এক অসুখে দুজন অন্ধ

আজ বাতাসের সঙ্গে ওঠে, সমুদ্র, তোর আমিষ গন্ধ দীর্ঘ দাঁতের করাত ও ঢেউ নীল দিগন্ত সমান করে বালিতে আধ-কোমর বন্ধ এই আনন্দময় কবরে আজ বাতাসের সঙ্গে ওঠে, সমুদ্র, তোর আমিষ গন্ধ | হাত দুখানি জড়ায় গলা, সাঁড়াশি সেই সোনার অধিক উজ্জ্বলতায় প্রখর কিন্তু উষ্ণ এবং রোমাঞ্চকর আলিঙ্গনের মধেযে আমার হৃদয় কি পায় পুচ্ছে শিকড় আঁকড়ে […]

কিছু মায়া রয়ে গেলো

সকল প্রতাপ হল প্রায় অবসিত… জ্বালাহীন হৃদয়ের একান্ত নিভৃতে কিছু মায়া রয়ে গেলো দিনান্তের, শুধু এই – কোনোভাবে বেঁচে থেকে প্রণাম জানানো পৃথিবীকে। মূঢ়তার অপনোদনের শান্তি, শুধু এই – ঘৃনা নেই, নেই তঞ্চকতা, জীবনজাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক, বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু।

আমি যাই

যেখানেই থাকো এপথে আসতেই হবে ছাড়ান্ নেই সম্বল বলতে সেই দিন কয়েকের গল্প অল্প অল্পই আমি যাই তোমরা পরে এসো ঘড়ি-ঘন্টা মিলিয়ে শাক-সবজি বিলিয়ে তোমরা এসো

যেতে পারি, কিন্তু কেন যাবো?

ভাবছি, ঘুরে দাঁড়ানোই ভালো। এতো কালো মেখেছি দু হাতে এতোকাল ধরে! কখনো তোমার ক’রে, তোমাকে ভাবিনি। এখন খাদের পাশে রাত্তিরে দাঁড়ালে চাঁদ ডাকে : আয় আয় আয় এখন গঙ্গার তীরে ঘুমন্ত দাঁড়ালে চিতাকাঠ ডাকে : আয় আয় যেতে পারি যে-কোন দিকেই আমি চলে যেতে পারি কিন্তু, কেন যাবো? সন্তানের মুখ ধরে একটি চুমো খাবো যাবো […]

অবনী বাড়ি আছো

দুয়ার এঁটে ঘুমিয়ে আছে পাড়া কেবল শুনি রাতের কড়ানাড়া ‘অবনী বাড়ি আছো?’ বৃষ্টি পড়ে এখানে বারোমাস এখানে মেঘ গাভীর মতো চরে পরাঙ্মুখ সবুজ নালিঘাস দুয়ার চেপে ধরে– ‘অবনী বাড়ি আছো?’ আধেকলীন হৃদয়ে দূরগামী ব্যথার মাঝে ঘুমিয় পড়ি আমি সহসা শুনি রাতের কড়ানাড়া ‘অবনী বাড়ি আছ