সূর্যমুখী

ইচ্ছে হলো ব্যাকুল, তবু খুলল না সে ঘর অন্ধকারে মুখ লুকিয়ে কেঁদে উঠল স্বর ‘এ যে বিষম! এ যে কঠিন!’ কী যে ছোট্ট বাড়ি— সকালও তার মুখ দেখে না, বিকেল করে আড়ি! পীতল মুখে শূন্যে ঝোলে সূর্য সারা দুপুর ঘরেতে তার তাপ পৌঁছয়, জ্বর হয়েছে খুকুর। শুকনো ভাঙা বেদানা তার মাথার কাছে খোলা, ছোট্ট দুটো […]

প্রাক্তন

ঠিক সময়ে অফিসে যায়? ঠিক মতো খায় সকালবেলা? টিফিনবাক্স সঙ্গে নেয় কি? না ক্যান্টিনেই টিফিন করে? জামা কাপড় কে কেচে দেয়? চা করে কে আগের মতো? দুগগার মা ক’টায় আসে? আমায় ভোরে উঠতে হত সেই শার্টটা পরে এখন? ক্যাটকেটে সেই নীল রঙ টা? নিজের তো সব ওই পছন্দ আমি অলিভ দিয়েছিলাম কোন রাস্তায় বাড়ি ফেরে? […]

সময় ঝরিয়া পড়ে

সময় ঝরিয়া পড়ে নির্জন দুপুরে যেখানে বসিয়াছিলে একদিন মুখোমুখি, তোমার চুলের গন্ধ বাসি হয়ে ধুলো হয়ে উড়ে ক্লান্ত ক’রে দিয়ে যায় যেখানে সূর্যের গান, তোমার আমার সেই ছোট চিলে ঘরে। সময় ঝরিয়া পড়ে শব্দ তার শুনি আনমনে স্মৃতি থেকে চুমুগুলি তুলে এনে গুনি কত তারা? …তারপর সব গোনা হয়ে গেলে চোখ মেলে আবার তাকাই ; […]

বুদ্ধিজীবী

তোমাদের হাত থেকে টাকা নিই, বোধ নিই, বিবেক-খচিত এক পিকদানি নিই। গলা শিরদাঁড়া তাতে ধরে রাখি। আর শোনো, বিষণ্ণতা ছুঁয়ে থাকি রোজ। শুধু, যে কদিন জ্বর হয়, মাধুকরী অসমাপ্ত থাকে, পেটের ভিতরে কেউ কথা বলে। প্রাথমিক কষ্টটুকু সহ্য হয়ে গেলে ভেদবুদ্ধি মাথা চাড়া দেয়। বোঝা যায়, আরো বহুদিন তোমাদের উপদংশে চুমু খেতে হবে। রাত ১২.৫৫ […]

দিগ্বিজয়ী তোমার স্বামী

চলতে চলতে বলতে থাকি তোমার কথা পথের মাঝে ছড়িয়ে আছে বৃক্ষলতা। দুলছে যেন এ প্রকৃতি! কালো কালো কেশের মতো, দেখতে লাগে হঠাৎ, কোনো দেশের মতো। হেঁটেছি তো বহুদূরের পথের শেষে কোথায় গেলাম, কোথায় আছি; অবশেষে। দেখছি ছায়া মায়াভরা চোখের কাজল কাঁদছে যেন এ প্রকৃতি! একি তোমার দেহের প্রবল! বা দিকটা ধরতে গেলাম, স্কন্ধে কী গো? […]

কুরুক্ষেত্রে আলাপ

আমার চোয়ালে রক্ত হে অর্জুন আমি জানতাম, আমি ঠিকই জানতাম আমি শিশু হত্যা থামাতে পারবো না, যুবতী হত্যাও নয়! ভ্রূণহত্যা! সেতো আরো সাঙ্ঘাতিক, আমি জানতাম হে অর্জুন মানুষ জন্ম চায় না, মানুষের মৃত্যুই আজ ধ্রুব! আমার নাভিতে রক্ত-আমি জানতাম আমি ঠিকই জানতাম আমি মানুষের এই রোষ থামাতে পারবো না, উন্মত্ততা থামাতে পারবো না। দুর্ভিক্ষ ও […]

ফুল ফুটেছে

ওইখানে ওই বাগানে তার ফুল ফুটেছে কতো জানতে পারি, ওর মধ্যে কি একটি দেবার মতো? একটি কিম্বা দুটির ইচ্ছে আসতে আমার কাছে তাহার পদলেহন করতে সমস্ত ফুল আছে। সব ফুলই কি গোষ্ঠীগত, সব ফুলই কি চাঁদের একটি দুটি আমায় চিনুক, বাদবাকি সব তাঁদের গাছ তো তাঁহার বাগানভর্তি, আমার রোপণ ছায়া– প্রবীণ তাঁদের ভালোবাসা, আমার বাসতে […]

কীভাবে এলাম এই শহরে

কীভাবে এলাম এই শহরে, সে মস্ত ইতিহাস! হামাগুড়ি দিয়ে আর ট্রেনের পিছনে ট্রেন ধরে রেললাইনে হাতেপায়ে তালা ও শিকল বেঁধে শুয়ে ট্রেন এসে পড়ামাত্র চক্ষের নিমিষে ড্রাইভারের কেবিনের জানলা দিয়ে জনতার প্রতি হাত নেড়ে টুপির ভেতর থেকে পায়রা খরগোশ ধরে, ছেড়ে, মাথার এদিক দিয়ে রড ঢুকিয়ে ওদিকে বার করে সম্মোহন করে নিজ সহকারিণীকে বাক্সে ভরে […]

বালক ভুল করে পড়েছে ভুল বই

বালক জানে না তো পুষবে অনুরাগ হৃদয়ে কতোদিন, কার বা চলা-পথে ছড়াবে মুঠো-মুঠো বকুল ফুলগুলো; কোথায় যেতে হবে, যাবে না কোন দিকে, ব্যাপক হাঁটাহাঁটি করবে কোন পথে! বালক জানলো না—মানুষ ম্লানমুখে কেন যে তারা গোনে; পায়ের নীচে কার কেন যে ফুল ঝরে, কতোটা ফুল ঝরে! মানুষ ভুল পথে গিয়েছে কতো দূর, বেপথু কাকে বলে বালক […]

না থাকা

একটি ভীষণ না-থাকাকে সঙ্গে নিয়ে আমি প্রতি রাত্তিরে ঘুমোতে যাই; ঘুমোই, ঘুম থেকে উঠি, কলঘরে যাই — না-থাকাটি সঙ্গে থাকে। দিনের হই চই শুরু হয়ে যায় দিনের শুরুতেই, একশ একটা লোকের সঙ্গে ওঠাবসা– এই কর সেই করর দৌড়োদৌড়ি– লেখালেখি– এ কাগজ পাচ্ছি তো ও কাগজ গেল কই! হাটবাজার, খাওয়াখাদ্যি, সব কিছুর মধ্যে ওই না-থাকাটি থাকে। […]