হাত দেখার কবিতা

আমি শুধুই কবিতা লিখি এটা মোটেই কাজের কথা নয় কথাটা শুনলে অনেকেরই হাসি পাবে আমি কিন্তু হাত দেখতেও জানি আমি বাতাসের হাত দেখেছি বাতাস একদিন ঝড় হয়ে সবচেয়ে উঁচু বাড়িগুলোকে ফেলে দেবে আমি বাচ্চা ভিখিরিদের হাত দেখেছি ওদের আগামী দিনে কষ্ট যদিও বা কমে ঠিক করে কিছুই বলা যাচ্ছে না আমি বৃষ্টির হাত দেখেছি তার […]

তুমিই শুধু তুমি

তোমার দেহে লতিয়ে ওঠা ঘন সবুজ শাড়ি। কপালে ওই টকটকে লাল টিপ। আমি কি আর তোমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারি? তুমি আমার পতাকা, আমার কৃষির বদ্বীপ। করতলের স্বপ্ন-আমন ধানের গন্ধ তুমি তুমি আমার চিত্রকলার তুলি। পদ্য লেখার ছন্দ তুমি−সকল শব্দভুমি। সন্তানের মুখে প্রথম বুলি। বুকে তোমার দুধের নদী সংখ্যা তেরো শত। পাহাড় থেকে সমতলে যে […]

এখন আমার

আমার এখন নিজের কাছে নিজের ছায়া খারাপ লাগে …রাত্রিবেলা ট্রেনের বাঁশি শুনতে আমার খারাপ লাগে জামার বোতাম আটকাতে কি লাগে, কষ্ট লাগে তুমি আমার জামার বোতাম অমন কেনো যত্ন করে লাগিয়ে দিতে? অমন কেন শরীর থেকে অস্তে আমার ক্লান্তিগুলি উঠিয়ে নিতে? তোমার বুকের নিশীথ কুসুম আমার মুখে ছড়িয়ে দিতে? জুতোর ফিতে প্রজাপতির মতোন তুমি উড়িয়ে […]

প্রেম

একটি রাতের কাছে পরাভব মানো কি যুবতী? ভাবো চাঁদ নক্ষত্রের পাশেই রয়েছে। তারপর নোদী গেছে বাঁক ধরে ঢেউয়ে ঢেউয়ে মৃদু মন্দগতি বালিশ ভাসিয়ে দিয়ে নামে জল তোমার ওপর। পুরুষ পাথর বটে কিন্তু যদি দশটি চুম্বনে পাষাণ বিদীর্ণ হয়ে ভাস্করের কান্না হয়ে যায় শিলার কাঠিন্য নিয়ে তবে আর স্বপ্নে জাগরণে বলো কোন নদী আর প্রস্তরের বদনাম […]

স্থিরচিত্র

এই তো তোমার স্পষ্ট সমাজ সংসার ঘরদোর, এই যে তোমার প্রিয় দৃশ্যমান শস্যের প্রান্তর, হরিৎ পত্রালি আর বহমান লাবণ্যের ধারা, সুখী গৃহকোণ ঘিরে সবুজের ধারাবাহিকতা দক্ষিণ সমুদ্র থেকে ভেসে আসা বিহ্বল বাতাস, চালবাহী বিদেশি জাহাজ, নীল নাবিকের গলা, সমতল জলের ওপরে ভাসমান মূল্যবোধ- তোমার এসব কিছু সুমসৃণ জীবনের দায়। বিপরীত চিত্রটিও অাঁকা আছে চোখের সম্মুখে। […]

স্বপ্ন

জয়ী হতে কী কী চাই? এক ডিভিশন সৈন্য? আধুনিক রণতরী? এক স্কোয়াড্রন বোমারু বিমান? ইঙ্গ-মার্কিন ক্যাপিটাল? না, এসবের কিছু নয়, আমি অন্যভাবে জয়ী হই প্রতিদিন। দৃষ্টি কেড়ে নেয়া একটি হঠাৎ জবা হেমন্তের হিম কুয়াশায় আমাকে ফুলের সাথে বেঁধে দিয়ে যায়। আমার বাহিনী এক ডিভিশন জবাফুল। নানা বর্ণে, নানা গন্ধে, আধুনিক স্বপ্ন-কল্পনায় রণতরী হয়ে ধেয়ে চলে […]

বিবর্তন

ফাঁকা বুলির ক্রসফায়ার শেষে আমরা জমাট অাঁধার চাদরাবৃত অবস্থায় গুটিসুটি মেরে শুয়েছিলাম কাঁটারো শয্যায় ভেবেছিলাম রণক্লান্ত মূষিক বুঝি বা তুমি রয়েছ গহন গভীর ঘুমের ঘোরে, অচেনা অজানা কোনো প্রেতিনীর কাতর বিলাপ শুনতে শুনতে যা ছিল হয়তো কামজ্বরতপ্ত সার্জার যুগলের আজব শীৎকার ধ্বনি কিংবা কোনো ধাড়ি নিষ্কর্মা বুড়ো হাবভার প্রবল আকাঙ্ক্ষার অনুপ্রবেশ। আমি ধরে নিয়েছিলাম তোমারই […]

ভয় যদি ভেঙে ফেলি

আমি এরকমই বটে- যা কিছু বলতে চাই কেন যেন পয়ারেই ঘটে মাঝেমধ্যে বিরক্তিও লাগে; আমি চাই পয়ারের ডান্ডাবেড়ি থেকে মুক্ত হয়ে অবারিত নীলিমায় উড়ে বেড়ানোর স্বাধীনতা- যদিও পয়ার দীর্ঘকাল ধরে বাঙালি সংস্কৃতি নিজের দখলে রেখে বেশ শাসন করেছে কাব্য- তবু আজ মুক্তি চাই কৃত্তিবাস কাশীরাম থেকে! বাঙলার সম্পন্ন ছন্দ জানি আমি পয়ার পয়ার: তবু এই […]

আমার এখন কী চাই

আমার এখন কী চাই, মুঠো মুঠো সোনার মোহর, মেঘমহলে ছিমছাম বাড়ি, আলিঙ্গন, মাতাল বসন্তকাল? না, এসব কিছুই আমার চাই না। চাওয়া বলতে শুধু একখানা পর্ণকুটিরের মতো তুমি। কিন্তু তুমি কে? কী নাম, কী স্থিতি, কী অবয়ব? যে নামেই হও, নক্ষত্রমালা বৃষ্টিজল আমি কাউকেই চাই না, সত্য হচ্ছে কোনো নামই চাই না আমি। আমি যাকে চাই—সে […]

সৃজনের শিহরণ

হাওয়ায় তুফান ছোটে থরথর কাঁপা ঠোঁটে যেন কার কথা আমারে পাঠাল বুঝি গূঢ় কোনো শব্দের বারতা তবু জেগে ওঠা এ বক্ষের বাসনা—চোখ তুলে চেয়ে থাকি। চোখ তুলে চেয়ে থাকি এ কোন নৈঃশব্দ্যের বেগ তুলেছে ঝড়ের দৃশ্য? তুলেছে প্রচণ্ড আবেগ আমার মুঠোর মধ্যে— খুলে দেখি আঁকিবুঁকি রেখার রচনা। কী কথা পাঠাল কেউ, চারিদিকে উড়ছে পাতারা— আমি […]