– কি করছো? – ছবি আকঁছি। – ওটা তো একটা বিন্দু। – তুমি ছুঁয়ে দিলেই বৃত্ত হবে। কেন্দ্র হবে তুমি। আর আমি হবো বৃত্তাবর্ত। – কিন্তু আমি যে বৃত্তে আবদ্ধ হতে চাই না। আমি চাই অসীমের অধিকার। – একটু অপেক্ষা করো। . . . এবার দেখো। – ওটা কি? ওটা তো মেঘ। – তুমি ছুঁয়ে […]
কথোপকথন-২/১
কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি
ওরা চল্লিশজন কিংবা আরো বেশি যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে—রমনার রৌদ্রদগ্ধ কৃষ্ণচূড়ার গাছের তলায় ভাষার জন্য, মাতৃভাষার জন্য—বাংলার জন্য। যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে একটি দেশের মহান সংস্কৃতির মর্যাদার জন্য আলাওলের ঐতিহ্য কায়কোবাদ, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের সাহিত্য ও কবিতার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে পলাশপুরের মকবুল আহমদের পুঁথির জন্য রমেশ শীলের গাথার জন্য, জসীমউদ্দীনের ‘সোজন বাদিয়ার ঘাটের’ […]
মানচিত্রজুড়ে ছয়টি অক্ষর
আমি বর্ণমালা হাতে নিয়ে দেখি তার ছয়টি অক্ষর কখন যে হয়ে গেছে বাঙালির নাম, কখন যে হয়ে গেছে বাংলার সজল আকাশ হয়ে গেছে তেরো শত নদী; এই ছয়টি অক্ষর আমি বুকে গেঁথে নিয়ে কোথায় না গেছি, দেশে দেশে, সভায় সম্মেলনে, জাতিসঙ্গের সদর দরজায় সবখানে বলেছি, এই যে বাঙালি আমি, আমার পরিচয়পত্র শেখ মুজিবর, এই ছয়টি […]
সৌর সুনামি
সূর্য ভেঙে ভেঙে তৈরি হচ্ছে বলয় আলো লয় পেয়ে পেয়ে নতুন আলো না, আঁধার নেই, নেই কোনো ক্ষয় পিতা সূর্যটা পৃথিবীর জন্যে এতো ভালো হিউস্টন ধরে রাখলো টেলিস্কোপ তার অগ্রডগায় মিলেনিয়াম টোপ ভাঙছে আলোর ঢেউ, দশ কোটি বছর পর সেই ঢেউ জ্বালিয়ে দিচ্ছে বাবুই পাখির ঘর ভবিষ্যতের সেই সৌর সুনামি দেখবো না আমি আমি দেখবো […]
দাঁড়াও বা না-দাঁড়াও
দাঁড়াও বা না-দাঁড়াও মৃত্যু ঠিকই দাঁড়িয়ে আছে তোমার জন্যে। তুমি কে? তুমি কি কেউ না? তাহলে আমিও কেউ না। দৌড়ুতে দৌড়ুতে আমরা যেখানে যাচ্ছি হাঁপাতে হাঁপাতে আমরা যেখানে পা রাখছি সেখানে না গর্ত, না বাড়ি_ আমরা কিছুই পাড়ি দিচ্ছি না, কিছুই না; আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে নেই কোনো গাড়ি। কোথায় যাবে?_যাবো না। কোথায় থামবে?_থামবো না। আমরা […]
অন্ধকূপ থেকে
তুমি উঠে এসেছো অন্ধকূপ থেকে তোমার মাথায় জ্বলছে চিতার আগুন তোমার বাহু বেয়ে নেমে যাচ্ছে ঝর্ণা-সরীসৃপ তোমার শরীরে বলয়িত হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় তোমার পা পিচ্ছিল কর্দমে প্রোথিত ভয় পেয়ো না, আমি তোমাকে বাঁধবোই আমার বন্ধনের নাম ভালোবাসা আমার ভালোবাসার নাম মুক্তি এই পৃথিবীর দূর এক প্রান্তে আমি তোমার হাতে, পায়ে, মাথায়, গায়ে এঁকে দেবো জন্মের স্বার, […]
নরের অধিক
এতেক গাহিয়া কবি কী কাণ্ড করিল গণ্ড ঘষে মণ্ডকোষ চাপিয়া ধরিল কহিল সুউচ্চ নাদে আর রক্ষা নাই এইবার সৃষ্টিসুখে মর্ত্যগান গাই তারপর কী বাঁধিল কী গাহিল গান নারী করে ছত্রখান নারীর বাগান বাগানে নরের কলি যা-কিছু ফুটিল বীর্যর বীরত্বে হায় সকলি ভাসিল ভাসিতে ভাসিতে ধরা নূহের বন্যায় পূর্ণচন্দ্রে দিবালোকে ধরিল গন্নায় ফুকারি উঠিল উলু, কোথাও […]
হাবু মিয়া
জুয়েল হাসান…. হাবু মিয়া রাগ করেছে গাছ তলাতে বসে, মামা নাকি ভোর বেলাতে চড় মেরেছে কষে। হাবু মিয়া ভোরবেলাতে বই না পড়ে শুনেছিল গান, তাইতো মামা রাগ করে তার মলে দিয়েছে কান। হাবু মিয়া রাগ করেছে বলবে না আর কথা, বুকে তাহার জমা আছে অনেক অনেক ব্যাথা। মামা তাকে কিনে দিবে একটা খেলনা গাড়ি, কিনে […]
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে
এই পৃথিবীতে আর আকাশ দেখিনি আমি এতো_ অবনত_ ঘুমন্ত শিশুর মুখে যেন চুমো খাবে পিতা নামিয়েছে_ মুখ; প্রান্তর এতোটা বড় যেন মাতৃশরীরের ঘ্রাণলাগা শাড়ি; আদিকবি পয়ারের মতো অন্তমিল নদী এতো শান্তস্বর; এতোই সজল মাটি কৃষকের পিঠ যেন ঘামে ভিজে আছে; যদিও বৃষ্টির কাল নয় তবু গাছ এতো ধোয়ানো সবুজ; দেখিনি এমন করে পাখিদের কাছে ব্যর্থ […]
নিঃসঙ্গ কবি, নির্জন রেস্তোরাঁ
মাথার ভেতরে লেখা। অদূরে রেস্তোরাঁ। আষাঢ় সেজেছে খুব মেঘে মেঘে-মনে সে করাবে বিরহ বিপন্ন দিন-রাস্তাঘাট আদ্যোপান্ত খোঁড়া। মাটির পাহাড়গুলো কতদিনে কে জানে সরাবে! এরই মধ্যে পথ করে নিতে হবে আজ। অপেক্ষায় কবিতা ও কফি। হঠাৎ বৃষ্টির শুরু, ধমকাল বাজ। পিছলে পা পড়ে গেল কবি। সমস্ত শরীরে কাদা। এভাবে কি যাওয়া যেতে পারে? বিমূঢ় দাঁড়িয়ে থেকে […]