অনন্ত অরুন্ধতী তুমি, অন্ধকারে

পৃথিবীর সর্বত্র সেই একই অন্ধকার, যে অন্ধকারে তোমাকে দেখি না অনন্ত অরুন্ধতী তুমি, অন্ধকারে বহুদিন পড়ে আছি বেদনাহত। মানুষের মনে এক অন্তহীন অন্ধকার, অন্ধকারের ব্যথা ও বেদনায় সমস্ত আকাশ যখন নীল হয়ে ওঠে, সূর্যাস্তের পর আরো বেশি ঘন হয় অনন্ত অরুন্ধতী তুমি, অন্ধকারে জেগে ওঠো। সমস্ত দুঃখের মধ্যে, সমস্ত শিল্পের মধ্যে পুনরায় যখন পল্লবিত হও […]

পুনর্জন্মে নয়

পুনর্জন্মে নয়, প্রতি জন্মে তোমাকে আমার চাই রক্তে ধমনিতে জ্বলে লাল অগ্নিশিখাঃ কবিতার থেকে যতদূরে যাই বন্দিশিবিরে দেখি উদ্ধত কনীনিকা। তোমাকে আমার চাই, তুমি ছাড়া এ-বিশ্বের অস্তিত্ব আদৌ মানি না__ সমস্ত পদাবলী, রবীন্দ্রসংগীত তুমি ছাড়া সব বৃথা এমনকি সূর্যোদয়, তারা-ছাওয়া সৌর-আকাশ, কোনোকিছু চিনি না__ _আমি নই রাম, লোকভয়ে ছেড়ে দেব সীতা। _পারি, সমস্ত উপেক্ষা করে […]

গীতাঞ্জলির ভাষা

নদী ও রাত্রি বণ্টন হয়ে গেলে আলোকরঞ্জন দায় নিয়ে উদ্দালক, পাহারাদার। মহাত্মা গান্ধীর মতো নতজানু হয়ে বললাম, ‘চরের জনগণ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে দ্বারস্থ আপনার ‘যথার্থ মুরুবি্ব পাওয়া দুষ্কর এখন, বিশ্বজুড়ে হরেক কিসিমের তালেবর, হাওয়া বুঝে দিচ্ছে সবক; ঘরের শত্রু বিভীষণ; বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ নিচ্ছে কেড়ে বাস্তু-ভিটেঘর’ আমার কথায় আলোকরঞ্জন, “এই প্রজন্মের হাতে সহাবস্থান আর সৌহার্দ্যের গুরুবার […]

আমার রোবুদা

ডাকপিয়ন ছাড়া বোধহয় সাধারণ মানুষের অজানা বালিগঞ্জ রোডের নাম আশুতোষ চৌধুরী এভিনিউ। এই এভিনিউয়ে বিড়লা মন্দির। বিপরীতে মদের দোকান, পেট্রল পাম্প, মৈনাক (বিল্ডিং), সুখাবতী ভবন। এ রকম ভৌগোলিক চেহারাসুরত ছিল না আগে। মদের দোকান, পেট্রল পাম্প, মৈনাক, সুখাবতী ভবন মিলিয়ে যে জায়গা-জমিন, ওখানেই ছিল মুখার্জিদের ভিলা। মনে পড়ছে না ভিলার নাম। মুখার্জিকুলের এক ছেলে সিদ্ধার্থ। […]

বলেছিলাম

সমস্ত আবর্ত থেকে ফিরে আসো, বলেছি কি ? সে কথা বলিনি৷ বলেছিলাম, আমাদের কালপর্বে যে-ভাঙন উত্‍স কোথায় এই চণ্ড-সামাজিকতার ? আজকে যে-স্তরগুলি তৈরি হয়ে আছে আমরাই কি নির্মাণ করিনি ঘূর্ণিপাক ? শববাহকেরা এখন বৃত্তের ভিতরে ঘুরে বেড়াচ্ছে শ্মশানযাত্রীরা নদীর ঠিকানা ভুলে দণ্ডকারণ্যের দিকে ধাবমান আর দ্যাখো, ভূমিকে নির্ভূম করে ভূস্বামীরা আগুন দিচ্ছে চুল্লীতে সব প্রতিরোধ […]

কেন বলেছিলাম

পরমাণু-দেশে নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কথা বলতে চাই। বেয়োনেট উঁচিয়ে আমার অস্থি-মজ্জা পাহারা দেবে, এটাই তবে সাংবিধানিক? কীভাবে গর্দান নেবে, ভাবছো? তুমি কি সেই অস্ত্রধারী, আধিকারিক? আজ রাতে পাখিদের উৎসব চলছিল আমন্ত্রিত আমাকে একটি খড়কুটো দিল, তাই নিয়ে উৎসাহে মেতে উঠি −লক্ষ করি, চারপাশে বিরুদ্ধ ভ্রুকুটি নিরস্ত্রীকরণে কেন আমি পাখির সঙ্গ নিয়েছিলাম কেন বলেছিলাম, চাই বনজঙ্গলঘেরা একটি […]

অভিধান

ঘরময় একটি পাতাবাহার। আজ, জন্মদিন অরুণার চোখ দুটি যামিনী রায়ের আঁকা, মুখখানি প্রথম কদমফুল। মন্দাক্রান্ত ছন্দ-মাখা আষাঢ়স্য প্রথম দিবস। বিরহের গান আজ তার জন্মদিন। নদীও আবেগে ছন্দময়। দু’কূল প্লাবিত। সূর্যাস্তেও সূর্যোদয় তোমাকেই জানি জীবনের চলন্তিকা, অভিধান

বৃষ্টির সন্ধ্যায়

ভীষণ ক্ষুধার্ত, ভীষণ তৃষিত। দিন যায় অনাহারে। অক্ষর বর্জিত জ্বলন্ত সময়। ব্রাত্য মানুষের গল্প কে লেখে?_ যেটুকু লেখা হয় অতীব সামান্য, অল্প নিকট স্মৃতির মধ্যে জেগে আছে একটি ঘটনা। বাকি সব গৌণ। মাতৃভাষায় যে শব্দ কাম, তথা যৌন উথালপাতাল হলো বৃষ্টির সন্ধ্যায়। মেঘের গর্জন। জলের নষ্টামি। বারান্দায়। নস্টালজিয়ার নিম্নচাপ-উচ্চচাপ আছে। ভাবানুষঙ্গে হঠাৎ জড়ো হলে বেড়ে […]

ধৃতরাষ্ট্র-বিলাপ

জন্মান্ধ বললে ভুল হবে৷ ইদানীং আমার চোখ ক্রমশ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বাতাস কি মুখরিত, আর্তনাদে? সঞ্জয়, যুদ্ধের গতি কোন দিকে? পাণ্ডবরা কী রচনা করেছে বূ্হ্য? অর্জুণ কী এখনো কুরুক্ষেত্রে? কোন্ মন্ত্রবলে প্রতিপক্ষ দুর্জয়, সঞ্জয়? বলো, তবে কী শূন্য হাতে কেবলি বিলাপ, আমার? গর্ভগৃহে পালিয়ে জীবন? না-কি অন্ধতাই জীবন, করুণাঘন মৃত্যু?

তোমার কথা

মাঝে মাঝে তোমার কথা ভাবি আকাশে জমেছে মেঘ, বাতাসে বৃষ্টির গান রাত্তির বড় দীর্ঘ; কিছুতেই ঘুম আর আসছে না । একবার এপাশ, একবার ওপাশ, আর বিশ্বচরাচর জুড়ে… নিথির স্তব্ধতা । মাঝে মাঝে মনে হয় অসীম শূন্যের ভেতর উড়ে যাই । মেঘের মতন ভেসে ভেসে, একবার বাংলাদেশে ঘুরে আসি । মনে হয়,মনুমেন্টের চূড়ায় উঠে চিতকার ক’রে […]