পিকাসোর জন্য

এই এক ছবি দেখি, দিন রাত দুর্বোধ্য আয়নায় বিকেলের মতো এক ক্লান্ত নারী রহস্য ভিতরে ; কিংবা আমাদের মন আছে কিনা, অস্ফুট বার্তায় প্রশ্ন শুনি যেন ; কিংবা যতটুকু এ হৃদয়ে ধরে ততটুকু নিতে গিয়ে দেখি ছবি অগাধ গভীর কোথায় যে নিয়ে যায়? তারপর সকলি নিবিড় চেতনা চেতনা শুধু! এক ছবি বহু ছবি হয় তখন […]

তোমার কাছে

তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি আমি, যদিও অনেক দেরী হলো। তোমার মাথার সমস্ত চুল এখন সাদা ; আমিও আর শিশুটি নেই, তোমার পায়ের শুকনো পাতা চোখের জলে ধুয়ে দেবো! কী করে যে ক্ষমা চাইবো? তোমার মাথার সমস্ত চুঁল এখন সাদা ; এই কী ক্ষমা চাওয়ার সময়! অথচ দুরে ঘন্টা বাজছে আর দেরী নয়— যেতেই হবে। […]

সময় ঝরিয়া পড়ে

সময় ঝরিয়া পড়ে নির্জন দুপুরে যেখানে বসিয়াছিলে একদিন মুখোমুখি, তোমার চুলের গন্ধ বাসি হয়ে ধুলো হয়ে উড়ে ক্লান্ত ক’রে দিয়ে যায় যেখানে সূর্যের গান, তোমার আমার সেই ছোট চিলে ঘরে। সময় ঝরিয়া পড়ে শব্দ তার শুনি আনমনে স্মৃতি থেকে চুমুগুলি তুলে এনে গুনি কত তারা? …তারপর সব গোনা হয়ে গেলে চোখ মেলে আবার তাকাই ; […]

চিড়িয়াখানা

কোলা ব্যাঙের ছা কথা বলেন না কথা বললে ভাঙবে ধ্যান তিনি শুধুই ভাষণ দ্যান জাগুয়ার খাবেন না সাগু আর রোজই বলেন মেজদিকে খাবেন তিনি শেঠজিকে রাত দুপুরে তিনটে বানর, কেবল বলে, “পকেটে পোর |” “কাকে রে কাকে ?” —“সূর্যটাকে |” ভোট দিও না হাতিকে, ভোট দিও তার নাতিকে | ভোট দিও না গাধাকে, ভোট দিও […]

আমার সন্তান যাক প্রত্যহ নরকে

আমার সন্তান যাক প্রত্যহ নরকে ছিঁড়ুক সর্বাঙ্গ তার ভাড়াটে জল্লাদ ; উপড়ে নিক চক্ষু, জিহ্বা দিবা-দ্বিপ্রহরে নিশাচর শ্বাপদেরা ; করুক আহ্লাদ তার শৃঙ্খলিত ছিন্নভিন্ন হাত-পা নিয়ে শকুনেরা | কতটুকু আসে-যায় তাতে আমার, যে-আমি করি প্রত্যহ প্রার্থনা, “তোমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে |” যে-আমি তোমার দাস ; কানাকড়ি দিয়ে কিনেছ আমাকে রাণী, বেঁধেছ শৃঙ্খলে আমার বিবেক, […]

হওয়া না-হওয়ার গল্প

সে চেয়েছিলো একটি সত্যিকারের প্রেমের কবিতা লিখতে। তার তো একটাই জীবন। মানুষের জীবনে প্রেমের চেয়ে নির্মল পিপাসার জল আর কী থাকতে পারে? সে আরও অনুভব করতো প্রেমই কবিতার প্রাণ, তার শব্দ, তার ধ্বনি – তার মন্ত্র। কিন্তু তবু তার কবিতা, একটার পর একটা তার নিজের লেখা কবিতা কি প্রেম কি জল এমনকি পায়ের নিচের শক্ত […]

মাতলামো

উত্তেজনা ছড়ায়েন না কেননা এই মৃত বৎসা দেশে আগুনের ফুলকি গুলি শ্মশানের বাহবা বাড়ায় দূর থেকে শুনা যায় শৃগালের হাসি আর হায়েনার গর্জন, যত রাত দীর্ঘ হয় ততই বাঘের চোখ ভৌতিক আলোর মতন পাড়ায় পাড়ায় ছড়ায় আতংক ক্রমে উলঙ্গের দীর্ঘশ্বাস হাভাত হাভাত শব্দ ক্ষীন হয়ে বাতাসে মেলায় । উত্তেজনা ছড়ায়েন না বরং এই শ্মশানের শান্তি […]

উলঙ্গের স্বদেশ

এক অদ্ভুত মাটির উপর আমরা দাঁড়িয়ে আছি ; অর্থাৎ দাঁড়িয়ে থাকার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছি এ মাটির গর্ভে কী আছে আজও আমাদের জানা নেই যদিও কান পাতলে শুনতে পাওয়া যায় এক লক্ষ সাপের গর্জনের চেয়েও কোন ভয়ঙ্কর পরিণাম, যা ক্রমেই আসন্ন হচ্ছে | কিন্তু আমরা এক পা-ও এদিক ওদিক নড়ছি না ; যেন স্থির দাঁড়িয়ে […]

জন্মভূমি আজ

একবার মাটির দিকে তাকাও একবার মানুষের দিকে। এখনো রাত শেষ হয় নি; অন্ধকার এখনো তোমার বুকের ওপর কঠিণ পাথরের মত, তুমি নি:শ্বাস নিতে পারছ না। মাথার ওপর একটা ভয়ঙ্কর কালো আকাশ এখনো বাঘের মত থাবা উঁচিয়ে বসে আছে। তুমি যেভাবে পারো এই পাথরটাকে সরিয়ে দাও আর আকাশের ভয়ঙ্করকে শান্ত গলায় এই কথাটা জানিয়ে দাও তুমি […]

নীরেন, তোমার ন্যাংটো রাজা

নীরেন! তোমার ন্যাংটো রাজা পোশাক ছেড়ে পোশাক পড়েছে! নাকি, তোমার রাজাই বদলেছে? সেই শিশুটি কোথায় গেল যেই শিশুটি সেদিন ছিল? নীরেন, তুমি বলতে পারো, কোথায় গেল সে? নাকি, তুমি বলবে না আর ; তোমার যে আজ মাইনে বেড়েছে! হেইও হো! হেইও হো! পোষাক ছাড়া নীরেন, তুমি, তুমিও ন্যাংটো | কিন্তু ঘরে তেমন একটি আয়না রাখে […]