আমার সন্তান যাক প্রত্যহ নরকে

আমার সন্তান যাক প্রত্যহ নরকে
ছিঁড়ুক সর্বাঙ্গ তার ভাড়াটে জল্লাদ ;
উপড়ে নিক চক্ষু, জিহ্বা দিবা-দ্বিপ্রহরে
নিশাচর শ্বাপদেরা ; করুক আহ্লাদ
তার শৃঙ্খলিত ছিন্নভিন্ন হাত-পা নিয়ে
শকুনেরা | কতটুকু আসে-যায় তাতে
আমার, যে-আমি করি প্রত্যহ প্রার্থনা,
“তোমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে |”

যে-আমি তোমার দাস ; কানাকড়ি দিয়ে
কিনেছ আমাকে রাণী, বেঁধেছ শৃঙ্খলে
আমার বিবেক, লজ্জা ; যে-আমি বাংলার
নেতা, কবি, সাংবাদিক, রাত গভীর হ’লে
গোপনে নিজের সন্তানের ছিন্ন শির
ভেট দিই দিল্লীকে ; গঙ্গাজলে হাত ধুয়ে
ভোরবেলা বুক চাপড়ে কেঁদে উঠি, “হায়,
আত্মঘাতী শিশুগুলি রক্তে আছে শুয়ে!”

আমার সর্বাঙ্গ জ্বলে আশ্চর্য চুমায়
তোমারই দাক্ষিণ্য, রাণী দিয়েছ নিভৃতে ;
এবার পাঠিয়ে দাও প্রকাশ্যে ঘাতক,
বাগানে যে-ক’টি ফুল আছে ছিঁড়ে নিতে |
প্রত্যেক কাগজে আমি লিখবো ফুলের
ভেতর পোকার নিন্দা, খুনীর বাহবা
প্রত্যহ বাংলার শিশু-গোলাপ ক’টির
সর্বনাশে সরগরম করবো আমি সভা |

আমার সন্তান যাক প্রত্যহ নরকে
ছিঁড়ুক সর্বাঙ্গ তার ভাড়াটে জল্লাদ ;
উপড়ে নিক চক্ষু, জিহ্বা দিবা-দ্বিপ্রহরে
নিশাচর শ্বাপদেরা ; করুক আহ্লাদ
তার শৃঙ্খলিত ছিন্নভিন্ন হাত-পা নিয়ে
শকুনেরা | কতটুকু আসে-যায় তাতে
আমার, যে-আমি করি প্রত্যহ প্রার্থনা,
“তোমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে |”