ঐ মহামানব আসে

ঐ মহামানব আসে;

দিকে দিকে রোমাঞ্চ লাগে

মর্ত্যধূলির ঘাসে ঘাসে।

সুরলোকে বেজে উঠে শঙ্খ,

নরলোকে বাজে জয়ডঙ্ক–

এল মহাজন্মের লগ্ন।

আজি অমারাত্রির দুর্গতোরণ যত

ধূলিতলে হয়ে গেল ভগ্ন।

উদয়শিখরে জাগে মাভৈঃ মাভৈঃ রব

নব জীবনের আশ্বাসে।

জয় জয় জয় রে মানব-অভ্যুদয়,

মন্দ্রি উঠিল মহাকাশে।

 

   উদয়ন শান্তিনিকেতন  ১ বৈশাখ ১৩৪৮
“সভ্যতার সংকট” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সর্বশেষ অভিভাষণ। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দে (ইং ১৯৪১ খ্রি.) মৃত্যুর কয়েক মাস পূর্বে আশিতম জন্মদিন উপলক্ষ্যে কবি এই অভিভাষণটি রচনা করেন। পরে এটিই ‘সভ্যতার সংকট’ নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছিল। উক্ত বছরে বাংলা নববর্ষের দিন শান্তিনিকেতন আশ্রমে এই অভিভাষণটি পঠিত হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমসাময়িক কালে রচিত এই প্রবন্ধটিতে যেমন ইতিহাস বিশ্লেষণ করে কবি মানব সভ্যতার বর্তমান সংকটের একটি ব্যাখ্যামূলক চিত্রাঙ্কণ করেছেন, অন্যদিকে তেমনই ভারতে ইংরেজ শাসনের আসন্ন সমাপ্তির ভবিষ্যৎবাণীও করেছেন। তবে যুদ্ধের ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও কবির এই রচনায় নৈরাশ্যের কোনো অভিব্যক্তি পরিস্ফুট হয়নি। জীবনের শেষ নববর্ষোৎসব উপলক্ষ্যে রচিত গান ‘ঐ মহামানব আসে’ সংকলিত হয়েছে প্রবন্ধের শেষাংশে।