যদি মনে করো

যদি মনে করো ভালোবাসা মরে গেছে যদি মনে করো ভালোবাসা আর নেই যদি মনে করো ভালোবাসা বলে কখনো ছিল না কিছু— তখন তাকিয়ে দেখো বাগানের দিকে— সূর্যের দিকে শিমলতা চেয়ে আছে! অথবা গাছের গুঁড়িতে পিঁপড়ে বাসা করে দেখে নিয়ো, বেরিয়েছে ওরা তোমার গলার মতির মালার মতো দীর্ঘ সারিতে মানুষের দিকে শর্করা সন্ধানে, যদি মনে করো […]

মৃত্তিকার ঘন অন্ধকারে

মৃত্যুপরে মৃত্তিকায় এই দেহ প্রোথিত ফসল, অন্তিম প্রার্থনা শেষে ফিরে যায় সকল স্বজন চল্লিশ কদম দূরে পৌঁছুতে না পৌঁছুতে তখন— বলা হয় ফেরেশতা কবরে নামে সংখ্যায় দুজন— সম্ভবত সেই তারা যারা ছিল কাঁধের ওপরে যখন জীবিত ছিল এই লোক, কাঁধের ওপরে যারা প্রতি মুহূর্তের পাপপুণ্য যা কিছু সে করে সব লিখে রাখে তারা বিবরণ বিশ্বস্ত […]

জলেশ্বরীর ট্রেনের বাঁশি

গল্পের ঘন নীল পথের ওপর সবুজ সোনালি রঙে একটা বাঁশি এসে পড়ে। আহা, বাঁশি। সেই বাঁশি, বুকে যার সাতটি ছিদ্র। এই ছিদ্র গরম লোহার শিকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে তৈরি। পোড়া ছিদ্রের ভেতর থেকে আগুনের দগ্ধতাকে ফুলের বাগান করে স্বর্গ থেকে সুর টেনে আনে। কৃষ্ণ বাজায়, রাধা ঘর ছেড়ে যমুনার তীরে বাহিরায়। আমাদের পল্লি গায়ক টুংসু মামুদের […]

নূরলদীনের সারা জীবন (প্রস্তাবনা)

নিলক্ষা আকাশ নীল, হাজার হাজার তারা ঐ নীলে অগনিত আর নিচে গ্রাম, গঞ্জ, হাট, জনপদ, লোকালয় আছে ঊনসত্তর হাজার। ধবলদুধের মতো, জ্যোৎস্না তার ঢালিতেছে চাঁদ-পূর্ণিমার। নষ্ট ক্ষেত, নষ্ট মাঠ, নদী নষ্ট, বীজ নষ্ট, বড় নষ্ট যখন সংসার তখন হঠাৎ কেন দেখা দেয় নীলক্ষার নীলে তীব্র শিষ দিয়ে এত বড় চাঁদ? অতি অকস্মাৎ স্তব্ধতার দেহ ছিঁড়ে […]

মৃত্যুর শরীর ভেঙে

বিদ্যুতেরও সাধ্য নেই রুদ্ধ করে রক্তের প্রবাহ— যেভাবে রাতের ঘরে এলে তুমি দাঁড়ালে যখন শরীরের বস্ত্র ছেড়ে, চুলে ঝড়, যখন উধাও লজ্জার সকল শীল, মরে যাই আমি যে তখন! বিপুল সমুদ্র দেখে ছোট এক জাহাজের মাঝি— ধ্রুবতারা লক্ষ্যহারা, কম্পাসের কাঁটাও বিকল— তখন যে হয় তার হাহাকার, কীভাবে যে বাঁচি— চারদিকে নাচে তার রাক্ষুসীর জল ছলচ্ছল। […]

পরানের গহীন ভিতর ৩১

কে করে পরশ তার জীবনের এত জটিলতা? তোমার অধিক টান দেয় বৃক্ষ দেয় বিষলতা; একবার আমারে আছাড় দিয়া সোজা করে ফের, আমারই মতন যারা বেশুমার সন্তান মায়ের। কিসে যে চালনা করে এই দেহ এই ভবিষ্যৎ- কিছুই বুঝি না, দেখি আচানক শেষ হয় পথ; যে পথেই মেলা দেই সেই পথে ভয়ানক ভুত- এ বড় কঠিন জাগা, […]

হাসপাতালে লেখা

আবার এখানে এসে বসা গেলো তবে, এই জল নীলের নিকটে ফের বহুদিন পরে, এখনো এখানে রোদ সেদিনের উজ্জ্বল বৈভবে আমাকে করালো স্নান, আরো কিছু ঘটে তার পরে। একটি বালিকা এসে হাত পেতে দাঁড়ায় সে আজও, ভিক্ষা চায়, বুকের ওড়না থেকে বকুলের ফুল, তবে বাঁশি সেদিনের ইমনের সুরে তবে বাজো, যেন ভেসে যেতে থাকে পৃথিবীর একূল […]

৩০ লাখের আর্তনাদ

রাতের আঁধার ছিন্ন করে ভোরে যখন আলো ফুটতে থাকবে, আকাশ হয়ে উঠবে ধূসর নীলাভ, মাঠের বুকে প্রকাশিত হতে থাকবে সবুজ, তারপর যে লাল সূর্যটি দিগন্ত ঠেলে উঠবে, আজ বিজয় দিবসের ভোরে তার দিকে তাকিয়ে আমাদেরই সব গরিমায় তাকে আমরা বিশেষ করে দেখে উঠব স্বাধীন-সার্বভৌম বাঙালির রাষ্ট্র বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ওই—আমার দেশমায়ের সবুজ আঁচলে টকটকে লাল […]

ভাষার গভীরে ভাষা

ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়া নীল এই মখমল রাতে চাঁদের সোনালি থালা, রাশি রাশি নক্ষত্রের ফুল; মনে হয় মানুষ এমন রাত দেখেছে বোগদাদে। অথচ কী অগ্নিদাহ, স্তব্ধতার দীর্ঘ কালো চুল খুলে পড়ে আছে পথে রাজপথে অন্ধকারময়। ছদ্মবেশে—হারুনর রশিদের মতো—নামী পথে, এখন আমার সঙ্গী সেদিনের হাবশি খোজা নয়— আমারই কবিতাগুলো, নাছোড় সঙ্গী সে কোনোমতে। শব্দের অমৃত আমি পান […]

নীরবতার কয়েক অক্ষর

পায়ের কাছে সবুজ এক সাপ, ফণা তোলে না, ফণাই নেই তার। গুটিয়ে আছে মানব-মনস্তাপ। নির্জনতায় পুরনো পুকুরপাড়। কী হতো ওই ফণাটি যদি পেত, বিষের নীলে আকাশভরা নীল জাড্য তবে কোথায় দূরে যেত! তারায় তারা হাসত খিলখিল! চমকে সরে গেলাম চলার পথে, বিষ আছে কি বিষ নেই ও সাপে? বাঁচাটাই তো এখন কোনোমতে! পাল্লাতে কে পাপের […]