উঠোন

সুখ আমাকে বলেনি, ‘দুঃখের দিকে যেও না’। দুঃখ আমাকে বলেছিলো, ‘যাও বাপু যাও, আগে সুখের ঘরটাকেই সামলাও’। সুখের একটি উঠোন ছিল। দুঃখের একটি উঠোন ছিল। থাকুক, যার উঠোন তারই থাকুক। কেবল সেই উঠোনটি ছিল না আমার বুক। বেড়ে ওঠা শামস আল মমীন কিন্ডারগার্টেন ক্লাস। নরোম নরোম হাত পা গুটিয়ে গোল হয়ে বসে ওরা.. মন দিয়ে […]

কবির হাতে সোনার ছাই

  সাঁইত্রিশ বছর আগের কথা। ৩ আগস্ট ১৯৭৫ সাল।  প্রকাশিত  হলো আবদুল মান্নান সৈয়দের নির্বাচিত কবিতা। প্রকাশক মুক্তধারা। একই সঙ্গে একই তারিখে বের হলো রফিক আজাদেরও নির্বাচিত কবিতা। ষাট-দশকের প্রথমার্ধে আবির্ভুত সমকালীন বাংলা কবিতার দুই তাৎপর্যপূর্ণ কারুকৃৎ। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশে মুক্তধারা এই দুই কবির নির্বাচিত কবিতা দিয়েই  কোনো ব্যক্তি-কবির এই ধরনের প্রতিনিধিত্বশীল রচনার একক সঙ্কলন […]

নান্দনিক সৃষ্টিসত্তা

দূরত্বটা যে কত কম বা কত বেশি, তা মাপার কোনো উপায় নেই। হয়তো তা মুহূর্তমাত্র, হয়তো তা অনন্তকাল। যে ভুবনে হুমায়ূন প্রবেশ করেছে, তা থেকে ফেরারও কোনো উপায় নেই। স্বীকার্য, হুমায়ূন সেখানে গেছে আমাদের সকলের আগে। যাব; আমরাও যাব। কিন্তু কখন যাব, কীভাবে যাব আমরা জানি না। শেষ পর্যন্ত তার যুদ্ধটা চলছিল ঠিকই; কিন্তু যে […]

বৃষ্টিবন্দনা ১৪১৯

বৃষ্টি চেয়েছো? চেয়েছে আমার দৃষ্টি লঙ্কা-পান্তা; এই তো পলির কৃষ্টি। যখন দু’হাতে লাঙলের ফাল ঝলেছে, দৃষ্টিতে পিতা অনেক কথাই বলেছে: কখন এ-গাঁয়ে গড়া হলো এই বাড়িটি পলিবউ কবে প্রথম চড়ালো হাঁড়িটি, নিড়ানির দাঁত সাবাড় করলো আগাছা লাউডগা এসে বাঁধালো মাচাঙে তামাসা শোল-সরপুুঁটি ছাড়লো পোনার ডিম্ব গরজে সঘন গগনের প্রতিবিম্ব কৈ-মাগুরের কাঁটায় বিদ্ধ অঙুলি ঈশানের মেঘে […]

হে রজনীগন্ধার স্রষ্টা

না, পূর্ণ হলো না এমনকি একটি বছর; হুমায়ূন, তুমি আবার বেলভ্যূ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা-কেন্দ্রে। কেন এমন হলো? কেন এমন হবে? না, আমরা মানি না; আমরা মানতে পারি না এমন অশুভ সংবাদ। এইতো সেদিন তুমি ফিরে এসেছিলো জননী ও জন্মভূমির কাছে। তোমার সাধের নুহাশপল্লীতে। ফিরে যাবার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে পূর্ণ আরোগ্যের। তারপর ফিরে আসার । রক্ষিত […]

হেমন্তে সোনালি ডিম

হেমন্তে সোনালি ডিম ভাসমান দ্বীপ-সোনাদিয়া পুবে চন্দ্র, পশ্চিমে ডুবন্ত সূর্য, দরিয়া-দুনিয়া হাজার পাখির ডানা আকাশকে করে না আড়াল উদোম সাঁতারপটু মাছেদেরও নেই আবডাল বালিগুলি উড়ে উড়ে ঢিবি-স্তন, ঢালু উপত্যকা তরঙ্গ সুড়ঙ্গমুখী, পর্দাহীনা, লাল কাঁকড়ার সখা ঝাউডানা সাঁতরায় দিনে-রাতে রোদে, জোছনায় প্রজাপতিবন জুড়ে মানুষ ও মানুষীর ছায়ারা শুকায় হেমন্তে দরিয়া হাসে, দূরে-কাছে ভাসে আদিনাথ অনাতিশীতোষ্ণ তার […]

মাথিনের বৃষ্টি

বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে, ঘরে ঘরে, দরিয়ানগরে। বৃষ্টি পড়ে কিয়াঙে, মন্দিরে আর রোয়াং শহরে । বৃষ্টি পড়ে নারকেল জিনজিরা হয়ে জলের কবরে । নাফের হূদয় থেকে রক্তকণা উঠে আসে জলকণা হয়ে। জাতিযুবকের দা’য়ে ঐতিহ্যসম্মত ওই জাতিরক্ত যায় বয়ে বয়ে। ধীরাজ দেখে না কিছু, মাথিন-বর্ষণে ভেজে দিনরাত, নিবিড়-নির্ভয়ে। আকাশের বুকে দেখো হাজার হাজার বোঁটা যায় ছিঁড়ে […]

বস্ত্র নিয়ে

বস্ত্র নিয়ে কথা শুরু, শস্ত্র যখন চুপ মুগ্ধমতী মহামায়ার অঙ্গভরা রূপ বাবুই পাখির পুচ্ছ বাসা গুচ্ছ চুলে দোলে রংবেরঙের বস্ত্রে বধুর রূপের বাহার খোলে নকশিকাঁথার ফোঁড়ে ফোঁড়ে দাদিনানির বর গামছাবাঁধা দইয়ের বুকে খাঁটি দুধের সর তরুলতার কথকতায় মায়াবতীর বাড়ি জলবিহঙ্গ ব্যাকুল ডানায় দিচ্ছে আকাশ পাড়ি স্বপ্ন যখন অসম্ভবা, সত্য তখন শুরু গুরু গুরু ডাকলো দেয়া, […]

সৌর সুনামি

সূর্য ভেঙে ভেঙে তৈরি হচ্ছে বলয় আলো লয় পেয়ে পেয়ে নতুন আলো না, আঁধার নেই, নেই কোনো ক্ষয় পিতা সূর্যটা পৃথিবীর জন্যে এতো ভালো হিউস্টন ধরে রাখলো টেলিস্কোপ তার অগ্রডগায় মিলেনিয়াম টোপ ভাঙছে আলোর ঢেউ, দশ কোটি বছর পর সেই ঢেউ জ্বালিয়ে দিচ্ছে বাবুই পাখির ঘর ভবিষ্যতের সেই সৌর সুনামি দেখবো না আমি আমি দেখবো […]

দাঁড়াও বা না-দাঁড়াও

দাঁড়াও বা না-দাঁড়াও মৃত্যু ঠিকই দাঁড়িয়ে আছে তোমার জন্যে। তুমি কে? তুমি কি কেউ না? তাহলে আমিও কেউ না। দৌড়ুতে দৌড়ুতে আমরা যেখানে যাচ্ছি হাঁপাতে হাঁপাতে আমরা যেখানে পা রাখছি সেখানে না গর্ত, না বাড়ি_ আমরা কিছুই পাড়ি দিচ্ছি না, কিছুই না; আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে নেই কোনো গাড়ি। কোথায় যাবে?_যাবো না। কোথায় থামবে?_থামবো না। আমরা […]