মেঘের মতো মানুষ

আমার সামনে দিয়ে হেঁটে যায় ওই এক মেঘের মতো মানুষ ওর গায়ে টোকা দিলে জল ঝরে পড়বে বলে মনে হয়। আমার সামনে দিয়ে হেঁটে যায় ওই এক মেঘের মতো মানুষ ওর কাছে গিয়ে বসলে ছায়া নেমে আসবে মনে হয় ও দেবে, না নেবে? ও কি আশ্রয়, না কি আশ্রয় চায়? আমার সামনে দিয়ে হেঁটে যায় […]

মহা নিমগাছ

ঈশানে নৈঋতে দুই হাত ছড়িয়ে দিয়ে মাটির উপর মুখ রেখে সে এখন শুয়ে আছে শেষ রাতের খোলা প্রান্তরে আর কেউ নেই শুধু তার পিঠের দিকে তাকিয়ে আছে লক্ষ লক্ষ তারা হাতের ডানায় লেগে আছে ঘাসের সবুজ, বুকে ভেজা মাটি এইটুকু ছাতা যেন কোনো কোমলতা ছিল না কোথাও কোনোখানে তারপর আকাশ আর পৃথিবীর ঢাকনা খুলে বেরিয়ে […]

আমাদের ভালোবাসা

আপন আলোয় আমি নেমে আসি তোমার দক্ষিণে যেমন সূর্যাস্ত এসে ঘিরে নেয় মন্দির, বটতলা গ্রামান্তে মন্থর দিন নতজানু নদীর কিনারে এই প্রেম, আমাদের ভালোবাসা। যদি বলো ব্যক্তিগত, তবে তাই; এরই তো বীজের মধ্যে দশ দিক ঘুরে আসা নিজেরই ধরনে আমি তাপ রেখে সবার দুহাতে ‘ভালো আছো? বন্ধু, ভালো আছো?’ অনেকেই ভালো নেই, ফিরে চলে আসি […]

নদী নিঃশেষিত হলে

আনোয়ার পাশার সহপাঠী ছিলেন কলকাতার খ্যাতিমান লেখক শঙ্খ ঘোষ। ১৯৭১ সালে তাঁর মৃত্যুর পর ১‍৯৭২–এ বন্ধুর স্মৃতিচারণা করে তিনি লিখেছিলেন মর্মস্পর্শী এই লেখা। ছাপা হলো সেই লেখার নির্বাচিত অংশ ‘নদী নিঃশেষিত হলে’—এই নামে একটা কবিতার বই লিখেছিল আনোয়ার। আমাদের বন্ধু, আনোয়ার পাশা। নীলিমা ইব্রাহিমকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আনোয়ারের খবর কিছু জানেন? কাগজে যা লিখেছে তা কি […]

শাস্তি

নিচু গলায় কথা বলার অপরাধে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলো। হামলে পড়ল তার ওপর তিনটে ভালুক ঠিক ভালুক নয়, প্রহরী ঠিক প্রহরীও নয়, সত্যি বলতে, দণ্ডমুণ্ডের কর্তা মেরুদণ্ড থেকে শাঁস তুলে নিতে নিতে বলল তারা, খবরদার এদিক-ওদিক তাকাবে না, কেবল গলা খুলে চেঁচাও।

বিবেক

নীল জল। হঠাৎ ঝাপট মারে মাঝে মাঝে খয়েরি শুশুক ওই ওই রব ওঠে ওই ওই– তর পর সব শান্ত নিরুদ্বেগ সবুজ পৃথিবী ধোয়া তুলসীপাতা!

কথার ভিতরে কথা

সকলে না, অনেকেই কথার ভিতরে কথা খোঁজে সহজের ভাষা তুমি ভুলে গেছ । এই বৃষ্টিজলে এসো, স্নান করি । জলের ভিতরে কত মুক্তিপথ আছে ভেবে দেখো । অবধারিতের জন্য বসে থেকে বসে থেকে আরো বেশি বসে থেকে থেকে হৃদয় এখন কিছু কুঞ্চন পেয়েছে মনে হয় । তবে কি তোমার কোনো নিজস্ব গরিমাভাষা নেই ? কেন […]

অপচয়

এই রাত্রি নিঃস্ব। খোলা আকাশকে মুখোমুখি রেখে শূন্যতার মাঝখানে অবলম্বনহীন ভেসে আছি। অনন্তশয়ানছবি, দূরে দূরে বুদবুদের মতো তারাগুলি ধরে আছে সাবেকযুগের কাতরতা। বিশ্বাস? কোথায় তার বাসা ছিল ভেবেছ কখনো? আঘাত কোথায়? সে কি ডমরুর মতো বেজে ওঠে? তোমার মুখের ডৌল মাঝো মাঝে তবু মনে পড়ে কালরাত্রে, প্রবাহণে, আগুনে না অবিমৃশ্য ঝড়ে— তুৃৃমিহীন তুমি দিয়ে ভরে […]

হাজারদুয়ারি

একবার তাকাবে না? নিজের মুখের দিকে চোখ ভরে? মাঝে-মাঝে ফিরে দেখা ভালো নয়? তুমি হাত ধুতে পারো এত গঙ্গাজল জানে কোন দেশ! মাঝে-মাঝে ধুয়ে নেওয়া ভালো নয়? তাই আমি আমার দক্ষিণ হাত রেখেছি নিজের বুকে, তুমি এসো, মাথা পাতো, যেন কত ঘর ঘুরে এলে এখন লহরী নয় যত চুপ তত দূর দুয়ারে দুয়ার খুলে যায় […]

ভিখারি বানাও কিন্তু তুমি তো তেমন গৌরী নও

আমাকে কি নিতে চাও? কত জরি ছড়াও সুন্দরী দুই হাতে ঝরাও ঝালর আমাকে কি নেবে তুমি? কখনো দেখিনি আগে চোখে এত নিরুপম ভালোবাসা তোমার মেদুর হাসি ধরেছি বিশ্বের পাশাপাশি আণবী ছটায় জ্বলে ঠোঁট আমাকে কি নিতে চাও? নেবে কোন শূন্য মাঠ থেকে? হায় তুমি অন্নপূর্ণা আজ! চাও শুধু সমর্পণ, একে একে সব নাও খুলে মেদ […]