অপয়া

উনিশ কুড়িটি কানমলা
বাইশ তেইশটি নাকে খত
এমনকি সাতাশ আটাশটি জুতার বাড়ি
খাইবার পরেও আমার মনে হয় নাই
কেহ আমাকে অপমান করিল।
যিনি উহা করিয়াছিলেন
তিনি কিছুক্ষণ আগে আসিয়া আমার নিকট হইতে
ক্ষমা প্রার্থনা করিয়া গিয়াছেন।
ক্ষমা যে মহত্ত্বের লক্ষণ তাহা মানিতে
আমি মোটেই প্রস্তুত নহি,
কেননা, সেদিন আমাকে যেভাবে
প্রকাশ্য দিবালোকে
এমনকি, জনসমক্ষে জুতা দিয়া প্রহার করিয়াছিলেন
তাহার দূর সম্পর্কের এক ভগ্নিপতি,
সেই প্রহারে,
আমার সমস্ত শরীর ক্ষত বিক্ষত হইবার পর পরই, আমার
যে ব্যাথা শুরু হইয়াছিল তাহা
সত্যিকারেই কল্পনাতীত।
ইহার পরেও সেই ষণ্ডামার্কা, ভগ্নিপতিকে গতকল্য
আমাকেই ক্ষমা করিতে হইল।
কেননা ষণ্ডার স্ত্রী,
উম্মে কুলসুমের দূর সম্পর্কের ভগিনী।
একদিন দুপুর বেলায়
কুলসুম আমার দুই হাত দুই পা জড়াইয়া ধরিয়া বলিয়াছিল
আমি যেন তাহাকে ভুলিয়া না যাই।
আমাদের প্রেম, ভালোবাসা,
যেন তাজমহলের মতো চিরদিন অটুট থাকে।
তোমাকে বলিতে আজ আমার কোনো দ্বিধা নাই
পিতৃগৃহ, আমার জন্য চিরতরে রুদ্ধ হইয়া যাইবে,
যদি চিঠি আর সেই একত্রে তোলা স্টুডিওর ফটোগ্রাফখানি
ফেরত না দাও।
সরলমতী নারী, বুঝিতে পারে নাই ফটোগ্রাফ হইতে
অজস্র ফটোগ্রাফ করা যাইতে পারে।
তখনি, আমার মনে হইল ক্ষমা মহত্ত্বের লক্ষণ।
তাড়াতাড়ি চিঠি এবং সেই ফটোগ্রাফটি উম্মের হস্তে সমর্পণের পর পরই
নিজের উদারতাকে আকাশের সহিত তুলনা করিলাম নিজে, নিজে।
ক্ষমা করিবার পর হঠাত্ দেখিতে পাইলাম
উম্মে কুলসুমের দূর সম্পর্কের সেই ভগ্নিপতিটিকে।
তিনি আমাকে দেখিয়া মৃদু মৃদু হাসিতে লাগিলেন।
তাহার পর হইতে স্থির করিয়াছি আর কোনোদিনই কোনো
উম্মে কুলসুমকে বিশ্বাস করিব না।

রেটিং করুনঃ
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (No Ratings Yet)
Loading...
মাকিদ হায়দার- র আরো পোষ্ট দেখুন