আনন্দধারা বহিছে ভুবনে

আনন্দধারা বহিছে ভুবনে, দিনরজনী কত অমৃতরস উথলি যায় অনন্ত গগনে ॥ পান করি রবে শশী অঞ্জলি ভরিয়া– সদা দীপ্ত রহে অক্ষয় জ্যোতি– নিত্য পূর্ণ ধরা জীবনে কিরণে ॥ বসিয়া আছ কেন আপন-মনে, স্বার্থনিমগন কী কারণে? চারি দিকে দেখো চাহি হৃদয় প্রসারি, ক্ষুদ্র দুঃখ সব তুচ্ছ মানি প্রেম ভরিয়া লহো শূন্য জীবনে ॥

প্রেম এসেছিল নিঃশব্দচরণে।

প্রেম এসেছিল নিঃশব্দচরণে। তাই স্বপ্ন মনে হল তারে– দিই নি তাহারে আসন। প্রেম এসেছিল বিদায় নিল যবে, শব্দ পেয়ে গেনু ধেয়ে। বিদায় নিল যবে, শব্দ পেয়ে গেনু ধেয়ে। সে তখন স্বপ্ন কায়াবিহীন নিশীথতিমিরে বিলীন– দূরপথে দীপশিখা রক্তিম মরীচিকা॥ প্রেম এসেছিল নিঃশব্দচরণে। প্রেম এসেছিল তাই স্বপ্ন মনে হল তারে– দিই নি তাহারে আসন। প্রেম এসেছিল 04 […]

আধেক ঘুমে নয়ন চুমে স্বপন দিয়ে যায়

আধেক ঘুমে নয়ন চুমে স্বপন দিয়ে যায়। শ্রান্ত ভালে যুথীর মালে পরশে মৃদু বায়।। বনের ছায়া মনের সাথি, বাসনা নাহি কিছু- পথের ধারে আসন পাতি, না চাহি ফিরে পিছু- বেণুর পাতা মিশায় গাথা নীরব ভাবনায়।। মেঘের খেলা গগনতটে অল্‌স লিপি-লিখা, সুদূর কোন্‌ শ্মরণপটে জাগিল মরীচিকা। চৈত্রদিনে তপ্ত বেলা তৃণ-আঁচল পেতে শূন্যতলে গন্ধ-ভেলা ভাসায় বাতাসেতে- কপোত […]

মধুর বসন্ত এসেছে

মধুর বসন্ত এসেছে মধুর মিলন ঘটাতে। মধুর মলয়-সমীরে মধুর মিলন রটাতে। কুহক লেখনী ছুটায়ে কুসুম তুলিছে ফুটায়ে, লিখিছে প্রণয়-কাহিনী বিবিধ বরন-ছটাতে। হেরো পুরানো প্রাচীন ধরণী হয়েছে শ্যামল-বরনী, যেন যৌবন-প্রবাহ ছুটিছে কালের শাসন টুটাতে; পুরানো বিরহ হানিছে, নবীন মিলন আনিছে, নবীন বসন্ত আইল নবীন জীবন ফুটাতে। 06 Modhur boshontto esheche

তোমরা হাসিয়া বহিয়া চলিয়া যাও

তোমরা হাসিয়া বহিয়া চলিয়া যাও কুলুকুলুকল নদীর স্রোতের মতো । আমরা তীরেতে দাঁড়ায়ে চাহিয়া থাকি, মরমে গুমরি মরিছে কামনা কত ।। আপনা-আপনি কানাকানি কর সুখে, কৌতুকছটা উছলিছে চোখে মুখে, কমলচরণ পড়িছে ধরণী-মাঝে, কনকনূপুর রিনিক ঝিনিকি বাজে ।। অঙ্গে অঙ্গ বাঁধিছ রঙ্গপাশে, বাহুতে বাহুতে জড়িত ললিত লতা । ইঙ্গিতরসে ধ্বনিয়া উঠিছে হাসি, নয়নে নয়নে বহিছে গোপন […]

শুধু তোমার বাণী নয় গো

শুধু তোমার বাণী নয় গো, হে বন্ধু, হে প্রিয়, মাঝে মাঝে প্রাণে তোমার পরশখানি দিয়ো।।. সারা পথের ক্লান্তি আমার সারা দিনের তৃষা. কেমন করে মেটাব যে খুঁজে না পাই দিশা- এ আঁধার যে পূর্ণ তোমায় সেই কথা বলিয়ো।।. হৃদয় আমার চায় যে দিতে, কেবল নিতে নয়, বয়ে বয়ে বেড়ায় সে তার যা-কিছু সঞ্চয়।. হাতখানি ওই […]

হে ক্ষণিকের অতিথি

হে ক্ষণিকের অতিথি, এলে প্রভাতে কারে চাহিয়া ঝরা শেফালির পথ চাহিয়া ॥ কোন্‌ অমরার বিরহিণীরে চাহ নি ফিরে, কার বিষাদের শিশিরনীরে এলে নাহিয়া ॥ ওগো অকরুণ, কী মায়া জানো, মিলনছলে বিরহ আনো। চলেছ পথিক আলোকযানে আঁধার-পানে মনভুলানো মোহনতানে গান গাহিয়া ॥

ওরা অকারণে চঞ্চল

ওরা অকারণে চঞ্চল। ডালে ডালে দোলে বায়ুহিল্লোলে নব পল্লবদল॥ ছড়ায়ে ছড়ায়ে ঝিকিমিকি আলো দিকে দিকে ওরা কী খেলা খেলালো, মর্মরতানে প্রাণে ওরা আনে কৈশোরকোলাহাল॥ ওরা কান পেতে শোনে গগনে গগনে নীরবের কানাকানি, নীলিমার কোন্‌ বাণী। ওরা প্রাণঝরনার উচ্ছল ধার, ঝরিয়া ঝরিয়া বহে অনিবার, চির তাপসিনী ধরণীর ওরা শ্যামশিখা হোমানল॥

বাদল-ধারা হল সারা

বাদল-ধারা হল সারা, বাজে বিদায়-সুর। গানের পালা শেষ ক’রে দে রে, যাবি অনেক দূর॥ ছাড়ল খেয়া ও পার হতে ভাদ্রদিনের ভরা স্রোতে রে, দুলছে তরী নদীর পথে তরঙ্গবন্ধুর॥ কদমকেশর ঢেকেছে আজ বনতলের ধূলি, মৌমাছিরা কেয়াবনের পথ গিয়েছে ভুলি। অরণ্যে আজ স্তব্ধ হাওয়া, আকাশ আজি শিশির-ছাওয়া রে আলোতে আজ স্মৃতির আভাস বৃষ্টির বিন্দুর॥

আমার জীর্ণ পাতা যাবার বেলায় বারে বারে

আমার জীর্ণ পাতা যাবার বেলায় বারে বারে ডাক দিয়ে যায় নতুন পাতার দ্বারে দ্বারে ।। তাই তো আমার এই জীবনের বনচ্ছায়ে ফাগুন আসে ফিরে ফিরে দখিন-বায়ে, নতুন সুরে গান উড়ে যায় আকাশ-পারে, নতুন রঙে ফুল ফুটে তাই ভারে ভারে ।। ওগো আমার নিত্য-নূতন, দাঁড়াও হেসে । চলব তোমার নিমন্ত্রণে নবীন বেশে । দিনের শেষে নিবল […]