আদি সত্যের পাশে

আদি সত্যের পাশ দিয়ে একটি নদী বইছিল আমি সামান্য মানুষ, নদীকে বললাম, থামো আর দেখো, উতরোল জলস্রোতে কাঁপতে কাঁপতে নিশ্চল সত্য কত অনায়াসে ডুবে গেল। নিমজ্জিত সত্যের ওপর এখন কালান্তক ঢেউয়ের বুদবুদ। পাখি উড়ছে কোয়াক কোয়াক করে ডাকছে। একটি যাযাবর হাঁস। একটি মাঝি পালের দড়িছড়া ঠিক করতে করতে গাইল ‘মনমাঝি তোর বৈঠা নেরে আমি আর […]

আমি আগামী গোধূলির সাক্ষী

প্রকৃতপক্ষে আমারই সাহস যে দুঃসাহস মাত্র, তা এখন হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছি। সবাই পথের পাশে দাঁড়িয়ে বলছে, কোথায় যাবে এই লোকটি কে জানে? আমিও বলি- না গো, আমিও জানি না। যদি পৌঁছতে পারি তাহলে চিৎকার করে বলব, আমি এসেছি আমার গন্তব্যে, আমাকে আশ্রয় দাও প্রভু আমি লেখক হবো, এমন একটা স্বপ্ন থাকলেও আরো অনেক আকাক্সক্ষা […]

এই ধারা বর্ষণে

এই ধারা বর্ষণের সন্ধ্যাবেলায় ভাবনা একটি ভেজা পাতার মতো দুলতে লাগলো। কেন যেন মনে হলো এসো মৃত্যুর কথা ভাবি মাঠের ওপাশের কবরগুলো বৃষ্টির ধোয়ায় আবছা শান্ত হয়ে আছে। মনে হয় নিঃশ্বাস ফিরিয়ে দিলেও এদের কেউ পৃথিবীতে বাস করতে চায় না। কতো মৃত্যুর কথা মনে পড়তে লাগলো। পিতা-পিতামহের মৃত্যু অপরিচিতদের মৃত্যু পাখির নিঃসীম ওড়াওড়ির মতো সেই […]

মানুষের ভাষা ও কবির ভাষা

সাহিত্য মানুষের দেশ-কাল-সংস্কৃতি চেতনার সাক্ষ্য দেয়। বহমান কালের মধ্যে দেশের উথালপাথাল আন্দোলন এবং যা কিছু ঘটছে তারই লিপিবদ্ধ বিবরণ উত্থাপন করে। এমনিতে কবিদের সাক্ষ্যকে কেউ কেউ গ্রহণ করতে দ্বিধাবোধ করলেও মাঝে মধ্যে বলে উঠতে হয়Ñ ‘এই কবি এই দেশ ও কালের বিবর্তন সম্বন্ধে এসব কথা বা পঙ্ক্তি রচনা করে গেছেন। এমনিতে কবিকে কেউ সত্যবাদী বলেন […]

প্রেমেই বৃদ্ধি পরমায়ু

লোকে কয়— প্রেমেই নাকি বৃদ্ধি হয় পরমায়ু স্নায়ুর ভেতর খেলতে থাকে নানান তৃষ্ণা কেউবা শ্যামল কেউবা শাদা কেউবা কৃষ্ণা— তবু প্রেমের নাই বিতৃষ্ণা। বাছাই করতে পারলে তবে ধরতে যেন ইচ্ছে হবে, ছুঁয়ে দেখতে মনটা ব্যাকুল, পরাণ কাঁপে— হাঁটতে গেলে ইচ্ছে করে ছুঁয়ে দেখি, আরে আরে আমি তবে করছি একি! এ কভু নয় আমার লজ্জা-শরম ও […]

মজা নদী

মজা নদী ওগো মজা নদী মনে আছে? তীর ভাঙা তিন তরঙ্গে খান খান হয়েছিল বুক, ঠুকরে নিলো কি মাছে? ওষ্ঠের সব চুম্বন অভিমান? মনে করো সেই ঢেউয়ে ভরা দিনগুলি দিন চলে গেছে শেওলার স্মৃতি ভরা, আজও কি ডাকে না কলমির অঙ্গুলি? নদী করেছিল নদীকে স্বয়ম্বরা! নদী তুমি নেই, তবু যে দীর্ঘ রেখা কল্পিত স্রোতে ভেসে […]

ঝংকার তোলে কাব্যের রানি

আমি কবি। আমি কথা বলে যাই নিজের ছন্দে আমার শব্দ আমারই গন্ধে— আনন্দে মাতে—দু-হাত তুলে; নূপুর ঘুঙুর কে পরেছে পায়—নৃত্যপরা নাচের মুদ্রা ঘুরে ঘুরে শুধু দিচ্ছে ধরা কী নাম তোমার, কোথায় বা ধাম। কীবা পরিচয়? তবু বলি জয় তোমার বিজয় আসছে ধীরে, নৃত্যের ঢেউয়ে খেলছে দেহের অঙ্গ বুঝি তালে তালে নাচো তরঙ্গ তুলে। আসুক ফিরে— […]

আগুন হয়ে জ্বলছে প্রাণ

কোথাও যদি ফুটেছে ফুল ফুটুক না পাগলা হাওয়ার মাতলামিতে হৃদয় জেগে উঠুক না! বন্ধ ঘরের অন্ধকারে সুর তোলা তো সহজ নয়, লড়াই ছাড়াই মানবো কী গো কাব্য-কথার পরাজয়! না কভু না,এই ফাগুনে আগুন হয়ে জ্বলছে প্রাণ, প্রাণের পাখি গান ধরেছে শব্দে বুঝি বয় তুফান। ঝড় উঠেছে চতুর্দিকে বন্ধ ঘরে থাকবো না- পরাজয়ের কালিমা আর নিজের […]

সোনার বৈঠার ঘায়ে পবনের নাও

​ কবির জীবন কাব্যময় নয়। অধিকাংশ কবি এ দেশে দুঃখ-দারিদ্র্যের মধ্যে লিখে যান। তারা অবশ্য নিজেদের কথা বলতে তেমন আগ্রহ প্রকাশ করেন না। কবিকে বলা হয় কালের সাক্ষী। কেউ কেউ কবিকে রহস্যঘন ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করেন। প্রশ্ন হলো রহস্যটা কোথায়? সবি তো বাস্তবতা এবং সংগ্রামের কাহিনী মাত্র। কবির যত বড়াই-ই থাকুক লড়াইটাই তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ […]

বিজয়ের বিবরণ

একদা আমি ভাবতাম, মানুষ হলো গতি, বেগ ও আবেগের পুত্র। একদিন এই সূত্র নিয়ে চিন্তা করতে করতে দেখি আমার চিন্তাসূত্র ছিঁড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে একটি রশ্মির ছটা। মানুষ আলোরই স্ফুলিঙ্গ বলে। আমি বিশ্বাস করে ভূপৃষ্ঠে পা রেখে হাঁটতে চেয়েছিলাম। হাঁটতে হাঁটতে দেখি আমি একদিন বিশ্বের সমস্ত নগরের ফুটপাথ বেয়ে চলে এসেছি আমার নিজেরই বাড়িতে। এই তো […]