এই নদী, একা

গা থেকে সমস্ত যদি খুলে পড়ে যায়, আবার নতুন হয়ে ওঠা সজীবতা এর কোনো মানে আছে? অপরাধী? প্রতিদিন কত পাপ করি তুমি তার কতটুকু জানো ? হাতের মায়ায় কত অভিশাপ সঞ্চিত রেখেছি, পাশাপাশি নদী, তাও সব খুলে যায়; চেনা শহরের থেকে দূরে উঁচুনিচু সবুজের ঢল তার পাশে মাঝে মাঝে নত হতে ভালো লাগে লাবণ্যে উদ্ভিদ […]

বাবরের প্রার্থনা

এই তো জানু পেতে বসেছি, পশ্চিম আজ বসন্তের শূণ্য হাত – ধ্বংস করে দাও আমাকে যদি চাও আমার সন্ততি স্বপ্নে থাক। কোথায় গেল ওর স্বচ্ছ যৌবন কোথায় কুরে খায় গোপন ক্ষয়। চোখের সমুখে এই সমূহ পরাভব বিষায় ফুসফুস ধমনী শিরা। জাগাও শহরের প্রান্তে প্রান্তরে ধূসর শূণ্যের আজান গান; পাথর করে দাও আমাকে নিশ্চল আমার সন্ততি […]

যমুনাবতী

নিভন্ত এই চুল্লিতে মা একটু আগুন দে, আরেকটুকাল বেঁচেই থাকি বাঁচার আনন্দে! নোটন নোটন পায়রাগুলি খাঁচাতে বন্দী- দুয়েক মুঠো ভাত পেলে তা ওড়াতে মন দিই! হায় তোকে ভাত দেবো কী করে যে ভাত দেবো হায় হায় তোকে ভাত দিই কী দিয়ে যে ভাত দিই হায় ‘নিভন্ত এই চুল্লি তবে একটু আগুন দে, হাড়ের শিরায় শিখার […]

গঙ্গাযমুনা

আর সবই মৃত্যুর কবিতা, কেবল এইটে জীবনের আর সবই আমার কবিতা, কেবল এইটে তোমার আর সবই থেমে-যাওয়া চোয়ালে-চোয়াল লাগা উচ্চাশার ঝুল লাগা নেমে জাওয়া ভাঙা বর্ষার প্লাবনশেষে ম্যানহোল থেকে তোলা অন্ত্রময় ভয় আর ধ্বস্তদেহ ফেলে রেখে ছুটে যাওয়া টায়ার টায়ার ব্রিজ ধ্বস আর সবই শহরের কবিতা, কেবল এইটে প্রান্তরের। আর সবই মৃত্যুর কবিতা, কেবল এইটে […]

বুক পেতে শুয়ে আছি ঘাসের উপরে চক্রবালে

বুক পেতে শুয়ে আছি ঘাসের উপরে চক্রবালে তোমার ধানের মুখে ধরে আছি আর্ত দুই ঠোঁট তুমি চোখ বন্ধ করো, আমিও দুচোখ ঢেকে শুনি যেন কোন্ তল থেকে উঠে আসে পাতালের শ্বাস সমস্ত দিনের মূর্ছা সেচন পেয়েছে এইখানে মুহূর্ত এখানে এসে হঠাত্ পেয়েছে তার মানে নিজের পায়ের চিহ্ন নিজে আর মনেও রাখেনি আমিও রাখিনি কিছু, তবু […]

বৃষ্টি হয়েছিল পথে সেদিন অনন্ত মধ্যরাতে

বৃষ্টি হয়েছিল পথে সেদিন অনন্ত মধ্যরাতে বাসা ভেঙে গিয়েছিল, গাছগুলি পেয়েছিল হাওয়া সুপুরিডানার শীর্ষে রূপোলি জলের প্রভা ছিল আর ছিল অন্ধকারে – হদৃয়রহিত অন্ধকারে মাটিতে শোয়ানো নৌকো, বৃষ্টি জমে ছিল তার বুকে ভেজা বাকলের শ্বাস শূন্যের ভিতরে স্তব্ধ ছিল মাটি ও আকাশ শুধু সেতু হয়ে বেঁধেছিল ধারা জীবনমৃত্যুর ঠিক মাঝখানে বায়বীয় জাল কাঁপিয়ে নামিয়েছিল অতীত, […]

শবসাধনা

বুঝি তোমার চাউনি বুঝি থাকবে না আর গলিঘুঁজি থাকবে না আর ছাউনি আমার কোথাও ও প্রমোটার ও প্রমোটার তোমার হাতে সব ক্ষমতার দিচ্ছি চাবি, ওঠাও আমায় ওঠাও | তুমিই চিরনমস্য, তাই তোমার পায়ে রত্ন জোটাই তোমার পায়েই বিলিয়ে দিই শরীর— যাঁর যা খুশি বলুন তিনি করবে তুমি কল্লোলিনী ভরসা কেবল কলসি এবং দড়ির | আমার […]

শূন্যের ভিতরে ঢেঊ

বলিনি কখনো? আমি তো ভেবেছি বলা হয়ে গেছে কবে। এভাবে নিথর এসে দাঁড়ানো তোমার সামনে সেই এক বলা কেননা নীরব এই শরীরের চেয়ে আরো বড়ো কোনো ভাষা নেই কেননা শরীর তার দেহহীন উত্থানে জেগে যতদূর মুছে নিতে জানে দীর্ঘ চরাচর তার চেয়ে আর কোনো দীর্ঘতর যবনিকা নেই। কেননা পড়ন্ত ফুল, চিতার রুপালি ছাই, ধাবমান শেষ […]

পুনর্বাসন

যা কিছু আমার চার পাশে ছিল ঘাসপাথর সরীসৃপ ভাঙা মন্দির যা কিছু আমার চার পাশে ছিল নির্বাসন কথামালা একলা সূর্যাস্ত যা কিছু আমার চার পাশে ছিল ধ্বংস তীরবল্লম ভিটেমাটি সমস্ত একসঙ্গে কেঁপে ওঠে পশ্চিম মুখে স্মৃতি যেন দীর্ঘযাত্রী দলদঙ্গল ভাঙা বাক্স প’ড়ে থাকে আমগাছের ছায়ায় এক পা ছেড়ে অন্য পায়ে হঠাত সব বাস্তুহীন | যা […]

সবিনয় নিবেদন

আমি তো আমার শপথ রেখেছি অক্ষরে অক্ষরে যারা প্রতিবাদী তাদের জীবন দিয়েছি নরক করে | দাপিয়ে বেড়াবে আমাদের দল অন্যে কবে না কথা বজ্র কঠিন রাজ্যশাসনে সেটাই স্বাভাবিকতা | গুলির জন্য সমস্ত রাত সমস্ত দিন খোলা বজ্র কঠিন রাজ্যে এটাই শান্তি শৃঙ্খলা | যে মরে মরুক, অথবা জীবন কেটে যাক শোক করে— আমি আজ জয়ী, […]