কথোপকথন-২৪

-তোমাকে আজকাল এত রোগা লাগে কেন শুভঙ্কর?
খুব ম্রিয়মান লাগে
যেন ঘন বর্ষাকাল,মেঘের ধুসর ডানা,জল-কোলাহল
ছিড়ে-খুঁড়ে ফেলেছে তোমাকে।
ভাঙা কোন মন্দিরের পুরনো গন্ধের মত লাগে।
অতীত কালের কনো স্তম্ভে আঁটা শ্যাওলার মতো
অতীতে সবুজ ছিলে,এখন শোকের মতো হীন।
তোমাকে কি ঘিরে আছে কোন কারাগার?
গ্রাদের কালো হাত,ঘন বৃক্ষজাল?
অথবা তুমি কি হারিয়েছ,অত্যন্ত আপন কোন কিছু?
সন্ধ্যাতারা ডুবে গেলে কোন কোন পাখি শুধু কাঁদে
তোমার সোনার আংটি জলের গহ্বরে ভেসে গেছে?
তোমার গায়ের সেই চাঁপা রঙ, চমৎকার শোভন প্রচ্ছদ
শুভঙ্কর কোথায় হারালে?

-নন্দিনি,তুমি তো জান আমার বাগান-পাট নেই,
যেটুকু বাগান ছিল শৈশবের সঙ্গে ঝরে গেছে।
তুমি ফুল ভালোবাসো বলে
তোমাকে ফুলের বৃন্তে মাঙ্গলিক উৎসবের মতো লাগে বলে
আমাকে ফুলের খোঁজে যেতে হয় পথ খুঁজে খুঁজে
সিন্ধুনদ,হিন্দুকুশ,হরপ্পার মতো দূরান্তরে।
সেই সব পথে বহু ভাঙ্গা চোরা বিমানবন্দর
বহু যুদ্ব জাহাজের হাড়-গোড় ,মেশিন গানের
কঙ্কাল-কবর রুঢ় কলকব্জা-কাঠ-কয়লা-খড়।
সেই সব পথে বহু পতাকার সার কিন্তু প্রাণ চিহ্ন নেই।
দুরারোগ্য অসুখের শ্বাসকষ্টে বিদীর্ণ বাতাস
এবং পাথরও খুব,বড় বড় ডাকাতের মতন পাথর।
যেতে যেতে রক্তপাত হয়।
যেতে যেতে সর্বাঙ্গের উদ্যমে ও অভিলাষে,বাসনায়,বাহুতে,বল্কলে
নীল মরচে পড়ে।