তেলেসমাতি

মনে করেন সাধনাই।

মধু বাবুর চোখে চোখে তাকিয়ে একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে বলে লোকটা। মধু এবার আলগা একটা ভক্তি নিয়ে তার দিকে তাকায়। সেই দুপুর থেকে পেছনে লেগে আছে। কোনোদিন এদিকটায় দেখেছে বলে মনে হয় না। তবু কত দিনের চেনা ভঙ্গিতে যখন এগিয়ে এল তখন মধু আর নাম-পরিচয় জিজ্ঞেস করতে পারেনি। আলাপ যখন জুড়েছে তখন পরিচয়ও হয়ে যাবে। দুপুরের রোদে দুই কিলো হেঁটে এসে বটতলায় একটু জিরিয়ে নিয়ে হোটেলে ঢুকেছে। এই সময়টা ঘরে থাকতে ঠিক মনে সায় দেয় না। সারাজীবনের অভ্যাস দুপুর বেলা বাইরে থাকার। তো গনগনে সূর্যটা মাঝ আকাশে উঠলেই তাকে যেন বাইরে বেরুবার জন্য ডাক দিতে থাকে। নির্মলা কত করে বলে, একটু ঘরে থাকার অভ্যাস করো। মধু পারে না। ঠিকই ছাতাটা হাতে করে বেরিয়ে পড়ে।

আকবরের হোটেলে তখন চা খাচ্ছিল মধু। চায়ে একটু বেশি চিনি না দিলে ইদানিং ঠিক মুখে রোচে না। লিকারও কড়া চাই। কড়া লিকার আর কড়া মিষ্টি দেওয়া চায়ে শেষ চুমুক দিতে দিতে মধু তাকিয়ে ছিল মিষ্টির আলমারির ওপর রাখা টেলিভিশনের দিকে। বাংলা সিনেমার গান হচ্ছে। হাই ভলিউমে। গানটা মনে ধরেছে। গান শেষে যদি সিনেমাটা মনে ধরে তো আরেক কাপ চায়ের অর্ডার দিয়েই ফেলবে, ভাবছিল। দোকানের নিয়মও অবশ্য এই। অর্ডার যদি না-ও দেয় তারপরও আধাঘণ্টা পরপর চা দিতেই থাকবে। টিভি চলতে থাকলে হাটুরেরা ওঠার নাম করে না। তাই আকবর ভেবেচিন্তে এই ব্যবস্থা করেছে। ব্যবস্থাটা এখন সব হোটেলেই চলছে। গান শেষ হতে না হতে আলমারির নিচের তাকে রাখা চাঙ্গারিতে গরম শিরায় ডোবানো জিলাপি এনে রাখল মৃদুল। জিলাপির গন্ধটা নাকে এসে লাগল আর অমনি ওই ভদ্রলোক এসে হাজির। হাতে একটা ব্যাগ, চোখে চশমা, গলায় টাই, চুলগুলো সাজের সঙ্গে বেমানান, বেশ লম্বা। মধুর সামনের চেয়ারে এসে বসল লোকটা। বসেই আড়াইশ জিলাপির অর্ডার দিল। মধু ভাবছিল, লোকটা যখন এক টেবিলে বসে জিলাপি খাবে, তখন সেও অর্ডার দেবে নাকি? পকেটের ওজনও নিচ্ছিল মনে মনে। পুরো দুপুর বাজারে কাটিয়ে বিকাল নাগাদ বাজার-সদাই করে সন্ধ্যার আগ ঘরে ফিরতে হবে তাকে। লাউ কিনতে হবে, চিংড়ি কিনতে হবে, মশলাপাতির কিছু কেনাকাটাও আছে। জিলাপি খেয়ে সবটা কি কুলাবে? ভাবতে ভাবতে ঢোক গিলছিল সে। ওই সময় লোকটা নিজে থেকে হাত বাড়িয়ে পরিচয় করল। নামটা বলল না, মধু ইতস্তত করছে দেখে বলল মধুদা, আছেন কেমন?

মধু দারুণ একটা হাসি ঝুলিয়ে দিল মুখে। কতজনাই তো তাকে চেনে। মধু মাস্টার সে। চাইকি লোকটা হয়তো তারই ছাত্র। নাকি কোনো ছাত্রের বাবা। কখনো দেখেছে বলে তো মনে পড়ে না। তবে, তার চেনাজানার গণ্ডি তো কম নয়। পাক্কা ত্রিশ বছরের মাস্টারি জীবন। কত অজানা অচেনা লোক যে রাস্তায় আদাব-সালাম দেয়, সবাইকে তো চেনা যায় না। সম্ভব নাকি? একটা বয়স থাকে যখন চিনতে চিনতে বয়স বাড়ে। আরেকটা সময় আসে যখন ভুলে যেতে যেতে বয়স বাড়ে। সবাইকে চেনা যায় না। প্লেট থেকে জিলাপি নেবার আগেই মধুর দিকে প্লেট বাড়িয়ে দিল লোকটা। চিনির জিলাপি। গন্ধটা মধুর। প্লেট থেকে হাত বাড়িয়ে নেবে নাকি অফারটা ফিরিয়ে দেবে ভাবছিল মধু। লোকটা বলল, মধুদা, আপনাকে দেখেই কিন্তু দুজন খাবো বলে আড়াইশ অর্ডার দিলাম। আমি তো মিষ্টি একটু কম খাই। আপনার তো আবার ডায়াবেটিস। বাজারে না এলে তো মিষ্টি, চিনি খাবার সুযোগই পান না। বুুঝলেন, মধুদা প্রত্যেক ডায়াবেটিস রোগীই কিন্তু লুকিয়ে চিনি খায়। অবশ্য আপনার অত চিন্তা নেই। বিকাল বেলা নিয়ম করে হাঁটেন যে। এত কিছু যখন জানে তখন খুব চেনাজানা কেউ হবে, ভাবছে মধু। ভাইপো-বোনপোদের কেউ নয়তো, হলে তো আর দাদা ডাকতো না। দূরসম্পর্কের ভাইও হতে পারে। কত জনাই এখন শহরে থাকে। গ্রামে যাওয়া আসা করে না হয়তো কিন্তু খবর ঠিকই রাখে। হয় না এরকম?

মধু ভাবছিল, চেনাজানা কেউ হলে আর বাড়িতে বলে দিলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। নির্মলা রাগ করবে।

বলল, বাড়িতে কিন্তু বলা যাবে না।

লোকটা হেসে বলল, কী যে বলেন দাদা। আমি কি গোয়েন্দা হয়ে এসেছি নাকি?

সত্যের মতো করে মিথ্যা বলাটা তার এতই রপ্ত যে বলেই ফেলল, জানেন তো ডায়াবেটিসে মিষ্টি অত ক্ষতিকর না। ঠিকঠাক হাঁটলে আপনি মিষ্টি খাচ্ছেন না টক খাচ্ছেন সেটা একদমই কোনো ব্যাপার না। আপনি তো হাঁটছেনই ঠিকঠাক। তাই না?

হাইপাওয়ার চশমার ফাঁক গলে মধু হাসে। তার মনের মতো করে কথা বলায় কৃতজ্ঞতা বোধ করে।

সে তো বটেই।

বৌদির শরীরটা এখন কেমন? বাতের ব্যথাটা ওঠে নাকি এখনো?

এ দেখছি মধুর হাঁড়ির খবর জেনে বসে আছে। তুমি কে হে? জিজ্ঞেস করতে গিয়েও থমকে গেল। হয়তো খুব কাছের কেউ হবে। চিনতে না পারাটাই উল্টো তাকে অপরাধবোধে ফেলে দেয়।

সে তো রেগুলার উঠছে। অমাবশ্যায়-পূর্ণিমায় তো একদম রেহাই নেই। মুখে আধখানা জিলাপি চালান করে বলে মধু।

এই বয়সের একটা ব্যাপার জানেন তো মধু দা? রোগশোক নিয়ম করে আসবেই আসবে। তাই ওসব কেয়ার না করে একটু এনজয় করা দরকার। সারাজীবন ছাত্র তাড়িয়ে বেড়ালেন। হেডমাস্টার হয়েও তো রেহাই পেলেন না। এখন যদি ডায়াবেটিস আর বাত-বেদনার পেছনে হাঁটতে থাকেন, আর অবসর কোথায় পাবেন? জীবনটা এনজয়ই বা করবেন কখন? ভুলে থাকুন এসব।

কী করব বলো।

মধু আপনি থেকে তুমিতে নেমে এসেছে দেখে একটু আশ্বস্ত হয় লোকটা।

ইচ্ছা যে হয় না তা তো নয়। একেবারে নিঃসন্তান জীবনে যাবই বা কোথায়? ছেলে-মেয়ে থাকলে তাদের কাছে যাওয়া যেত। মাঝে মাঝে ভাবি, দার্জিলিং-শিলিগুড়ি না হোক হাতের কাছে কক্সবাজারটা ঘুরে আসি। যাওয়া আর হলো কই?

বাজার থেকে বাড়ি আর বাড়ি থেকে বাজার করে করে জীবনটা চলে যাচ্ছে? তাই তো?

লোকটা কীভাবে যেন মনের কথাটা ধরে ফেলে। কে এ লোক? আশপাশে কাউকে চেনা ঠেকছে না যার সাথে এর পরিচয় করিয়ে দেওয়া যায়। পরিচয় করালে নিশ্চয়ই নামটা বলবে।

আমি বলি কি মধু দা, ব্যাংকের টাকাটা একটু ব্যবসায় খাটান। হিসাব করে চললে ওই টাকা দিয়ে আপনাদের বুড়োবুড়ির দিন চলে যাবে। কিন্তু, খাটালে লাভ পাবেন, তাতে কিন্তু হেসে খেলে কাটাতে পারবেন।

মধু এবার একটু সজাগ হয়ে বসে।

সে আর কত টাকা।

চার লাখ কিন্তু কম নয়।

বাপরে এ দেখি মধুর ব্যাংকের হিসাবও জেনে বসে আছে।

মধু মাস্টার এলাকায় হিসাবি লোক হিসেবে পরিচিত। চলাফেরায় সাধারণ। তাকে দেখে বা তার কথাবার্তায় কেউ আন্দাজ করতে পারবে না, ব্যাংকে কিছু গচ্ছিত টাকা তারও আছে। রিটায়ার করার পর পেনশন, গ্রাচুয়িটি মিলিয়ে কিছু টাকা জমিয়ে ব্যাংকে রেখেছে। সুদ যা আসে তা মিলিয়ে ঝিলিয়ে টানাটানির সংসার চলছে। কিন্তু টাকাটা যে ব্যাংকে আছে তা তো কাউকে বলার নয়।

লোকটা সম্ভবত ব্যাংকেরই। হ্যাঁ, মনে পড়ছে, পড়ছে একটু, ব্যাংকে দু-একবার বসে থাকতে দেখেছে কি?

মুখে বলল, এই বয়সে আর টাকা খাটানোর রিস্ক নিতে মন সায় দেয় না। একবার লস হলে আর কুলাতে পারব না। জানোই তো আমার অবস্থা। আমি বলি কি, ব্যাংকের বদলে এমন একটা জায়গায় টাকাটা রাখুন যেখানে লাভটা বেশি আসে। চার লাখ রাখলে যদি মাসে ১২ করে আসে তবে ক্ষতি কী? আর তিন বছর পর যদি মূলধন ডবল হয়ে যায়?

এরকম তো শুনি খুব। কিন্তু এসব কোম্পানি নাকি টাকা নিয়ে হাওয়া হয়ে যায়। এসব বানোয়াট কথা, বুঝলেন? দেশে ব্যবসার উন্নতি যারা চায় না তারাই তো এসব বলে। ইন্ডিয়ায় দেখেন, এমন কত কোম্পানি কাজ করছে। বলি, তোরা কি ইন্ডিয়ার চেয়ে ব্যবসা বেশি বুঝিস? এই সন্দেহ-বাতিকের জন্য এই দেশে কিছু হলো না। বুঝলেন মধু দা। আমি তো জানি মধু দা। আসলে কোম্পানি তো আর আকাশ থেকে এত টাকা দেয় না। আপনার টাকাটা নিয়ে শেয়ারবাজারে খাটাবে। লাভ যা হবে তার পুরোটাও আপনাকে দেবে না। নিজেরটা রেখেই তবে আপনারটা আপনাকে দেবে।

শেয়ারবাজার খুব লাভের জিনিস বটে। মধু এমনভাবে কথাটা বলে যেন শেয়ারবাজার জিনিসটা তার খুব চেনাশোনা।

লাভের জিনিস আর কী মধুদা। এ হলো, একটা তেলেসমাতি। আপনি তো আর সেখানে যেতে পারছেন না। আমাদের কোম্পানি আপনার হয়ে সেই তেলেসমাতিতে অংশ নেবে। আপনি টাকাটা দিয়ে ঘরে বসে সেই লাভের গুড় খাবেন।

গুড়ের কথায় আর ডায়াবেটিসের চিন্তায় আবারও দোনামোনায় পড়ে যায় মধু। লোকটা তাহলে তেলেসমাতি কোম্পানিতেই কাজ করে? কিন্তু মধুকে চিনছে কী করে এত? আর এত এত টাকাঅলা লোক থাকতে মধুর পেছনেই বা লেগেছে কেন?

আমি বলি কি মধুদা সামনের মাসেই বৌদিকে নিয়ে কক্সবাজার ঘুরে আসুন। আর পাসপোর্টটাও করে ফেলুন। দার্জিলিং কেন শুধু। সামনে ঋষিকেশ, হরিদ্বারটাও ঘুরে আসুন। বৌদি তো সেই কত বছর ধরে একবার ইন্ডিয়া যেতে চাইছে। ঘুরে আসুন না একবার।

ভাবি একটু। মধু উঠি উঠি করছে দেখে লোকটা বলল, চলুন বটতলার দিকে আমিও যাব। হরিপুর বাজারে একটা অফিস হবে আমাদের। অফিসের ঘর দেখতে হবে।

মধুর চায়ের দামটা মিটিয়ে দিল লোকটা। তাকে নিয়ে বেরুতে বেরুতে নিজের কথা কিছু খোলাসা করল।

ভাবছেন তো আপনাকে এত চিনলাম কী করে? আপনার এক ছাত্র আমার বন্ধু বুঝলেন। সেই আপনার কথা বলেছিল। আদর্শ শিক্ষক আপনি। ভাবছিলাম একবার দেখা করে চরণধূলি নেব। তো, এখানে পোস্টিং হয়ে ভালো হলো। আপনাকে পেয়ে গেলাম।

মধুর সঙ্গে লোকটা যখন দুপুরের ফাঁকা বাজারে ঘুরছে তখন সবার চোখ লোকটার দিকে পড়তে শুরু করল। মধু মাস্টারকে সালাম আদাব দিতে দিতে লোকটার দিকে আড়চোখে তাকাতে থাকল সবাই। তবে বিশেষভাবে চোখে পড়ল লোকটার চুল। চুল নিয়ে প্রশ্নটা মধুরও মনে ছিল। অভদ্রতা হয়ে যায় ভেবে আর জিজ্ঞেস করেনি। লোকদের আড়চোখ প্রশ্নে মধু এবার একটু প্রস্তুত হয়ে এল। চুলের দিকে তাকিয়ে বলল, এ কি ফ্যাশন নাকি সাধনা?

প্রশ্ন শুনে একটু লাজুক হাসল লোকটা। বটতলার পাশে একটা টিনের চাল দেওয়া পাকা ঘর দেখিয়ে বলল, এখানে অফিস হলে মন্দ হয় না।

মধু বলল, এ তো আকরামের ঘর। আকরাম আছে তো। কথা বলবে?

লোকটা মধুকে নিয়ে সোজা আকরামের ঘরে ঢুকে গেল। মধুকে দেখে সিগারেট নিবিয়ে স্যার স্যার বলে আকরাম দাঁড়িয়ে গেল।

তো আকরামের সাথে পরিচয় হতে গিয়েই নামটা জানা গেল। পরশ। বাহ ভালো নাম। মনে মনে ভাবতে লাগল মধু।

আকরাম অনেকদিন ধরে ঘরের ভাড়া খুঁজছিল। সমবায় অফিস হবে আর মধুর সুপারিশ আছে শুনে মাসে আটশ টাকা ভাড়ায় রাজি হয়ে গেল।

আকরামের ঘরে আরেক দফা চিনিছাড়া লাল চা খেয়ে বটতলায় বসল মধু আর পরশ।

সাবেকি আলোচনাটা নিজে থেকেই ওঠালো পরশ।

মনে করেন সাধনাই।

যুগ তো ভালো না মধু দা। এখনকার দিনে সাধনা করলেও সাধনার উপযুক্ত লেবাস আর নেওয়া যায় না। গুরুর মতো তো পারি না। গুরুর মতো হলে সেলাই ছাড়া দাফনের কাপড় পরে বেড়াতে হতো। তাতে তো আর চাকরি জুটত না। তো ওই চুলটাই রেখেছি। মুর্দার চুল। কবরে গিয়ে মুর্দার চুল বাড়ে সে তো জানেন?

মধু মাথায় নাড়ায়। বলে—

ভাবছি কক্সবাজার নয়, বেনারস যাব।

যাবেন বটে। তাহলে পাসপোর্টটা করে ফেলুন। অফিসটা আপনাকে দিয়ে উদ্বোধন করাব। আপনিই হবেন প্রথম ক্লায়েন্ট। আমি বলি কি দুই লাখ রেখে দুই লাখ জমা দেন। আপনাকে মান্থলি আট হাজারের ব্যবস্থা করে দেব। ব্যাপারটা নিয়ে বৌদির সাথেও আলাপ করে রাখুন। বৌদির মতটা জরুরি।

এইসব আলাপে আলাপে বিকাল গড়াতে শুরু করলে লোকটা বিদায় নিল। লোকটা বিদায় নিলে যারা তাকে লোকটার সাথে দেখেছে তারা ছেঁকে ধরল বিষয় কী জানার জন্য।

মধু তো আর বলতে পারে না খোলাসা করে। ব্যাংকে চার লাখ আছে—এ ধারণা কেউ পাক সেটা সে কিছুতে চায় না। লাখের গুড় খেয়ে মধু যে বেনারস যেতে চায় তাও বলে না।

আমার এক পুরোনো ছাত্রের বন্ধু। কী একটা অফিস খুলবে বলছিল। এইটুকু বলে বাজারে মন দিল মধু।

ওয়েলডান মাই বয়। পরশের বস ওবাইদুল জাকি বলছিল তাকে। ফোনে। কী যে বলেন স্যার। তবে এটা ঠিক বিজনেসটা অনেকটা রপ্ত হয়ে গেছে স্যার, আপনার সুপারভিশনে।

লোকটার এলাকায় নাম আছে তো? বললাম না স্যার ত্রিশ বছর মাস্টারি করেছে। এক নামে চেনে সবাই। লিডিং ক্যাপাবিলিটি নেই। কিন্তু, হিসাবি সজ্জন হিসেবে নাম আছে। কথারও দাম আছে। তার মতো লোক টাকা রাখলে অন্তত হাজার খানেক লোক কোনো সন্দেহ না করেই টাকা নিয়ে আসবে।

আর মধু মাস্টার লাভ পেতে শুরু করলে আর একবার বেনারস ঘুরে আসতে পারলে আর কোনো চিন্তা নেই স্যার।

তোমার টার্গেট কত?

একহাজার ক্লায়েন্ট স্যার। এক হাজার লোকের অ্যাভাভ টু লাখ সেভিংস আছে? আর ইউ শিওর?

স্যার ব্যাংকের সেকেন্ড অফিসার আমার বন্ধু হয়ে গেছে।

একশ লোককে আমরা টুয়েন্টি পার্সেন্ট লাভ দেব।

একশ লোক স্যার মূলধন ফেরত পাবে।

তুমি একটা কিলার পরশ।

আর মধু বাবুর কী করবে?

লোকটার জন্য আমার মায়া পড়ে গেছে স্যার। শুরু করার জন্য একেবারে পারফেক্ট চয়েস। অনেক সাধনা করে বের করতে হয়েছে।

তা তুমি মনে করো এই লোক ভজানোর বিজনেস—এইটা সাধনা?

মনে করেন সাধনাই, স্যার।