তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়

তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায় কোন্‌খানে রে কোন্‌ পাষাণের ঘায়॥ নবীন তরী নতুন চলে, দিই নি পাড়ি অগাধ জলে– বাহি তারে খেলার ছলে কিনার-কিনারায়॥ ভেসেছিলেম স্রোতের ভরে, একা ছিলেম কর্ণ ধ’রে– লেগেছিল পালের ‘পরে মধুর মৃদু বায়। সুখে ছিলেম আপন-মনে, মেঘ ছিল না গগনকোণে– লাগবে তরী কুসুমবনে ছিলেম সেই আশায়॥

আজি বর্ষারাতের শেষে

আজি বর্ষারাতের শেষে সজল মেঘের কোমল কালোয় অরুণ আলো মেশে॥ বেণুবনের মাথায় মাথায় রঙ লেগেছে পাতায় পাতায়, রঙের ধারায় হৃদয় হারায়, কোথা যে যায় ভেসে॥ এই ঘাসের ঝিলিমিলি, তার সাথে মোর প্রাণের কাঁপন এক তালে যায় মিলি। মাটির প্রেমে আলোর রাগে রক্তে আমার পুলক লাগে– বনের সাথে মন যে মাতে, ওঠে আকুল হেসে॥  

আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে

আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে দুয়ার কাঁপে ক্ষণে ক্ষণে, ঘরের বাঁধন যায় বুঝি আজ টুটে॥ ধরিত্রী তাঁর অঙ্গনেতে নাচের তালে ওঠেন মেতে, চঞ্চল তাঁর অঞ্চল যায় লুটে প্রথম যুগের বচন শুনি মনে নবশ্যামল প্রাণের নিকেতনে। পুব-হাওয়া ধায় আকাশতলে, তার সাথে মোর ভাবনা চলে কালহারা কোন্‌ কালের পানে ছুটে॥ 16. Aaj Sraboner Amontrone

আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার

আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার পরানসখা বন্ধু হে আমার॥ আকাশ কাঁদে হতাশ-সম, নাই যে ঘুম নয়নে মম– দুয়ার খুলি হে প্রিয়তম, চাই যে বারে বার॥ বাহিরে কিছু দেখিতে নাহি পাই, তোমার পথ কোথায় ভাবি তাই। সুদূর কোন্‌ নদীর পারে, গহন কোন্‌ বনের ধারে গভীর কোন্‌ অন্ধকারে হতেছ তুমি পার॥ রাগ: মল্লার তাল: ঝম্পক রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): […]

আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে

আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে। এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে ॥ আমার এই দেহখানি তুলে ধরো, তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো– নিশিদিন আলোক-শিখা জ্বলুক গানে ॥ আঁধারের গায়ে গায়ে পরশ তব সারা রাত ফোটাক তারা নব নব। নয়নের দৃষ্টি হতে ঘুচবে কালো, যেখানে পড়বে সেথায় দেখবে আলো– ব্যথা মোর উঠবে জ্বলে ঊর্ধ্ব পানে ॥ 06. Aguner […]

অলি বার বার ফিরে যায়

অলি বার বার ফিরে যায়, অলি বার বার ফিরে আসে। তবে তো ফুল বিকাশে। কলি ফুটিতে চাহে ফোটে না, মরে লাজে মরে ত্রাসে। ভুলি মান অপমান, দাও মন প্রাণ, নিশি দিন রহ পাশে। ওগো আশা ছেড়ে তবু আশা রেখে দাও, হৃদয়-রতন আশে। ফিরে এস ফিরে এস, বন মোদিত ফুলবাসে। আজি বিরহ-রজনী ফুল্ল কুসুম শিশির-সলিলে ভাসে। […]

অনেক কথা যাও যে ব'লে

অনেক কথা যাও যে ব’লে কোনো কথা না বলি। তোমার ভাষা বোঝার আশা দিয়েছি জলাঞ্জলি॥ যে আছে মম গভীর প্রাণে ভেদিবে তারে হাসির বাণে, চকিতে চাহ মুখের পানে তুমি যে কুতূহলী। তোমারে তাই এড়াতে চাই, ফিরিয়া যাই চলি। আমার চোখে যে চাওয়াখানি ধোওয়া সে আঁখিলোরে– তোমারে আমি দেখিতে পাই, তুমি না পাও মোরে। তোমার মনে […]

চোখের আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে

চোখের আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে। অন্তরে আজ দেখব, যখন আলোক নাহি রে।। ধরায় যখন দাও না ধরা হৃদয় তখন তোমায় ভরা, এখন তোমার আপন আলোয় তোমায় চাহি রে।। তোমায় নিয়ে খেলেছিলেম খেলার ঘরেতে। খেলার পুতুল ভেঙে গেছে প্রলয় ঝড়েতে। থাক তবে সেই কেবল খেলা, হোক-না এখন প্রাণের মেলা তারের বীণা ভাঙল, হৃদয়-বীণার গাহি রে।।

বড় আশা করে এসেছি গো

বড় আশা করে এসেছি গো কাছে ডেকে লও ফিরাইও না জননী। দিনহীনে কেহ চাহে না তুমি তারে রাখিবে জানি গো। আর আমি যে কিছু চাহিনে চরণও তলে বসে থাকিব, আর আমি যে কিছু চাহিনে জননী বলে শুধু ডাকিব । তুমি না রাখিলে গৃহ আর পাইব কোথায় কেঁদে কেঁদে কোথা বেড়াব ঐ যে হেরী তমশ ঘন […]

এই কথাটি মনে রেখো

এই কথাটি মনে রেখো তোমাদের এই হাসিখেলায়। আমি যে গান গেয়েছিলেম মনে রেখো। জীর্ণ পাতা ঝরার বেলায় মনে রেখো।। শুকনো ফাসি শূণ্য বনে আপন মনে অনাদরে অবহেলায় গান গেয়েছিলেম।। দিনের পথিক মনে রেখো আমি চলেছিলেম রাতে সন্ধ্যা প্রদীপ নিয়ে হাতে যখন আমায় ওপার থেকে গেল ডেকে ভেসেছিলেম ভাঙা ভেলায় গান গেয়েছিলেম।।