আরো একটু বসো তুমি, আরো একটু বলো

আরো একটু বসো তুমি, আরো একটু বলো। পথিক, কেন অথির হেন– নয়ন ছলোছলো ॥ আমার কী যে শুনতে এলে তার কিছু কি আভাস পেলে– নীরব কথা বুকে আমার করে টলোমলো ॥ যখন থাক দূরে আমার মনের গোপন বাণী বাজে গভীর সুরে। কাছে এলে তোমার আঁখি সকল কথা দেয় যে ঢাকি– সে যে মৌন প্রাণের রাতে […]

আমারে করো তোমার বীণা

আমারে করো তোমার বীণা, লহো গো লহো তুলে। উঠিবে আজি তন্ত্রীরাজি মোহন অঙ্গুলে॥ কোমল তব কমলকরে, পরশ করো পরান-‘পরে, উঠিবে হিয়া গুঞ্জরিয়া তব শ্রবণমূলে॥ কখনো সুখে কখনো দুখে কাঁদিবে চাহি তোমার মুখে, চরণে পড়ি রবে নীরবে রহিবে যবে ভুলে। কেহ না জানে কী নব তানে উঠিবে গীত শূন্য-পানে, আনন্দের বারতা যাবে অনন্তের কূলে॥ Amare koro […]

আমার নিশীথরাতের বাদলধারা

আমার নিশীথরাতের বাদলধারা, এসো হে গোপনে আমার স্বপনলোকে দিশাহারা ॥ ওগো অন্ধকারের অন্তরধন, দাও ঢেকে মোর পরান মন– আমি চাই নে তপন, চাই নে তারা ॥ যখন সবাই মগন ঘুমের ঘোরে নিয়ো গো, নিয়ো গো, আমার ঘুম নিয়ো গো হরণ করে। একলা ঘরে চুপ চুপে এসো কেবল সুরের রূপে– দিয়ো গো, দিয়ো গো, আমার চোখের […]

একি গভীর বাণী এল

একি গভীর বাণী এল ঘন মেঘের আড়াল ধ’রে সকল আকাশ আকুল ক’রে॥ সেই বাণীর পরশ লাগে, নবীন প্রাণের বাণী জাগে, হঠাৎ দিকে দিগন্তরে ধরার হৃদয় ওঠে ভরে॥ সে কে বাঁশি বাজিয়েছিল কবে প্রথম সুরে তালে, প্রাণেরে ডাক দিয়েছিল সুদূর আঁধার আদিকালে। তার বাঁশির ধ্বনিখানি আজ আষাঢ় দিল আনি, সেই অগোচরের তরে আমার হৃদয় নিল হ’রে॥ […]

তোমার গীতি জাগালো স্মৃতি

তোমার গীতি জাগালো স্মৃতি নয়ন ছলছলিয়া, বাদলশেষে করুণ হেসে যেন চামেলি-কলিয়া ।। সজল ঘন মেঘের ছায়ে মৃদু সুবাস দিল বিছায়ে, না-দেখা কোন্‌ পরশঘায়ে পড়িছে টলটলিয়া ।। তোমার বাণী-স্মরণখানি আজি বাদলপবনে নিশীথে বারিপতন-সম ধ্বনিছে মম শ্রবণে । সে বাণী যেন গানেতে লেখা দিতেছে আঁকি সুরের রেখা যে পথ দিয়ে তোমারি, প্রিয়ে, চরণ গেল চলিয়া ।। Tomar […]

আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর

আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর ॥ মহিমা তব উদ্ভাসিত মহাগগনমাঝে, বিশ্বজগত মণিভূষণ বেষ্টিত চরণে ॥ গ্রহতারক চন্দ্রতপন ব্যাকুল দ্রুত বেগে করিছে পান, করিছে স্নান, অক্ষয় কিরণে ॥ ধরণী’পরে ঝরে নির্ঝর, মোহন মধু শোভা ফুলপল্লব-গীতবন্ধ-সুন্দর-বরনে ॥ বহে জীবন রজনীদিন চিরনূতনধারা, করুণা তব অবিশ্রাম জনমে মরণে ॥ স্নেহ প্রেম দয়া ভক্তি কোমল করে প্রাণ, কত সান্ত্বন করো বর্ষণ […]

শেষ বেলাকার শেষের গানে

শেষ বেলাকার শেষের গানে ভোরের বেলার বেদন আনে॥ তরুণ মুখের করুণ হাসি গোধূলি-আলোয় উঠেছে ভাসি, প্রথম ব্যথার প্রথম বাঁশি বাজে দিগন্তে কী সন্ধানে শেষের গানে॥ আজি দিনান্তে মেঘের মায়া সে আঁখিপাতার ফেলেছে ছায়া। খেলায় খেলায় যে কথাখানি চোখে চোখে যেত বিজলি হানি সেই প্রভাতের নবীন বাণী চলেছে রাতের স্বপন-পানে শেষের গানে॥

সে দিন আমায় বলেছিলে আমার সময় হয় নাই

সে দিন আমায় বলেছিলে আমার সময় হয় নাই– ফিরে ফিরে চলে গেলে তাই॥ তখনো খেলার বেলা– বনে মল্লিকার মেলা, পল্লবে পল্লবে বায়ু উতলা সদাই॥ আজি এল হেমন্তের দিন কুহেলীবিলীন, ভূষণবিহীন। বেলা আর নাই বাকি, সময় হয়েছে নাকি– দিনশেষে দ্বারে বসে পথপানে চাই। Sedin amay bolechile

যেতে দাও যেতে দাও

যেতে দাও যেতে দাও গেল যারা। তুমি যেয়ো না, তুমি যেয়ো না, আমার বাদলের গান হয় নি সারা ॥ কুটিরে কুটিরে বন্ধ দ্বার, নিভৃত রজনী অন্ধকার, বনের অঞ্চল কাঁপে চঞ্চল– অধীর সমীর তন্দ্রাহারা ॥ দীপ নিবেছে নিবুক নাকো, আঁধারে তব পরশ রাখো। বাজুক কাঁকন তোমার হাতে আমার গানের তালের সাথে, যেমন নদীর ছলোছলো জলে ঝরে […]

কেটেছে একেলা বিরহের বেলা

কেটেছে একেলা বিরহের বেলা আকাশকুসুম-চয়নে। সব পথ এসে মিলে গেল শেষে তোমার দুখানি নয়নে। দেখিতে দেখিতে নূতন আলোকে কি দিল রচিয়া ধ্যানের পুলকে নূতন ভুবন নূতন দ্যুলোকে মোদের মিলিত নয়নে। বাহির-আকাশে মেঘ ঘিরে আসে, এল সব তারা ঢাকিতে। হারানো সে আলো আসন বিছালো শুধু দুজনের আঁখিতে। ভাষাহারা মম বিজন রোদনা প্রকাশের লাগি করেছে সাধনা, চিরজীবনেরি […]