গভরমেন্টের টাকা

[ মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রিয় মুহিত ভাইকে, তাঁর আশি বছর পূর্তিতে এই কবিতাটি তাঁকে উৎসর্গ করা হলো।] আম উঠেছে, জাম উঠেছে, কাঁঠাল পাকা-পাকা, কিন্তু কিছুই কেনা যাচ্ছে না, পকেটে নেই টাকা। ‘কোথায় পাবো টাকা? কোথায় গেছে টাকা?’ ধমক দিয়ে বাবা বললেন, ‘পকেট আমার ফাঁকা।’ মায়ের কথা কী আর বলবো, টাকার কথা শুনে- […]

ব্রাজিল ভক্তদের কাছে খোলা চিঠি

সুমি, এতো মন খারাপ করো না। যে প্রশ্নটা আমি অনেকদিন আগে থেকে করে আসছি, তা আবার আজও বলি- ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনা আমাদের কে? সারা ফুটবলবিশ্বই আমাদের বন্ধু। সমগ্র বসুন্ধরাই আমাদের কাছে কুটুম্ববৎ। জাপান আমাদের সবচেয়ে বড় সাহায্যদাতা দেশ। বিশ্বকাপে তাদের আমরা সমর্থন করি না। মুসলমান দেশ হিসেবে ইরানকেও আমরা সমর্থন করি নি। এশীয় দেশগুলির কোনো […]

নির্মলেন্দু গুণ

জন্ম: জুন ২১, ১৯৪৫ (আষাঢ় ৭, ১৩৫২ বঙ্গাব্দ), কাশবন, বারহাট্টা, নেত্রকোণা বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার গুরুত্বপূর্ণ কবিদের একজন। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবিদেরও একজন তিনি। মাত্র ৪ বছর বয়সে মা বীনাপনিকে হারান তিনি ৷ মা মারা যাবার পর তাঁর বাবা আবার বিয়ে করেন৷ শিক্ষাজীবন বারহাট্টা স্কুলে ভর্তি হন শুরুতে৷ স্কুলের পুরো নাম ছিলো করোনেশন কৃষ্ণপ্রসাদ ইন্সটিটিউট। […]

তুমিও আমাকে ডাকবে

মানুষের নাম কোনোদিন লুকোনো থাকে না, একজন যখন আরেকজনকে নাম ধরে ডাকে তখনই মানুষের নাম জানা হয়ে যায়। মানুষ ডাকে, মানুষ না ডেকে পারে না। মানুষের দিকে কান পেতে রাখো, শোনো, তুমি অনেক মানুষের নাম জানতে পারবে। কত বিচিত্র রকমের নাম যে আছে মানুষের। তাদের সঙ্গে কথা না বলেও, তাদের নাম জিজ্ঞেস না করেও অনেক […]

তোমার নাম লিখতে লিখতে

এ পর্যন্ত তেত্রিশ কোটি বার তোমার নাম লিখেছি। তোমার নাম লিখতে লিখতে হাত ক্লান্ত হয়েছে, চোখ তবুও ক্লান্ত হয় না। দেখতে চায় তোমার নামের শ্রী, বানান, ব্যাকরণে এবং সম্মিলিত শব্দের চেহারায়। যেখানে তিনটি অক্ষরের ক্রমিক আড়াল ভেঙে বেড়িয়ে আসে তোমার হারিয়ে যাওয়া মুখ, গৌরচিক্কন কন্ঠনালী, কোঁকড়ানো চুলের এলানো খোঁপায় জড়ানো একটুকরো লাল ফিতে। কালো চশমার […]

লজ্জা

আমি জানি, সে তার প্রতিকৃতি কোনোদিন ফটোতে দেখেনি, আয়নায়, অথবা সন্দ্বীপে বসে যেরকম সর্বনাশা সমুদ্রে দেখা যায়, তার জলে মুখ দেখে হঠাৎ লজ্জায় সে শুধুই ম্লান হতো একদিন । আমি জানি পিঠ থেকে সুতোর কাপড় কোনোদিন খোলেনি সে পুকুরের জলে, -লজ্জা, সমস্ত কিছুতে লজ্জা ; কন্ঠে, চুলের খোঁপায়, চোখের তারায়। আমি জানি আসন্নপ্রসব-অপরাধে, অপরাধবোধে স্ফীতোদর […]

যাদের বেলায় যা প্রযোজ্য

গ্রন্থকীটের কুটকখানি শুনে আমার পিত্তি জ্বলে। কবিই কবির সত্য-স্বজন; তাদের সাথে যুক্ত হয়েই মুক্তি খুঁজি মদ্যপানে। যদিও বই ওরাও কেনে তবুও আমার চিত্ত ঋণী অন্য কোথা, অন্য খানে। পা-িত্যের খ্যাতা পোড়াই আপন তালে তাল মিলিয়ে আমি নাচি আমার টানে। ‘অমরত্ব কবির ভৃত্য’ জেনেও প-িত যখন নৃত্য করেন আমি প্রাতঃকৃত্য সাঙ্গ করি। নাওজুবিল্লাহ, হরি-হরি ‘প্রাতঃকৃত্য’ শব্দ […]

আশাগুলি

জ্যা-মুক্ত হয়নি চিত্ত অধীর মিলনে কোনোদিন । পরশে খুলেছে দ্বার, বারবার কেটেছে অস্থির ঘুমে শূন্য চিরশয্যা তুমি-হীন । অপক্ব মৈথুনে বিবসনা শ্লীলতা ভাঙেনি শব্দ, আমাদের অবিমৃষ্য যুগলযৌবন অথচ জেগেছে কামে সুপ্তোত্থিতে, প্রিয়তমে মুখর মৃণালে, প্রিয় নামে । তোমাকে বেসেছি ভালো তীব্রতম বেদনার লাগি । মৃত্যুর শিয়রে বসি সেই প্রিয় মুখে রাত্রি জাগি একদিন উচ্চরিত প্রার্থনার […]

আকাশ ও মানুষ

কবে থেকে আকাশ দাঁড়িয়ে আছে একা, তার বুক থেকে খসে পড়েছে কত তারা। বেঁচে থাকলে আরো কত তারাই খসবে, তা নিয়ে আকাশ কি দুঃখ করতে বসবে? না, বসবে না, আমি বলছি, লিখে নাও, আকাশকে তো মহান মানি এ-কারণেই। মনুষ্যবৎ হলে কি মানুষ তাকে মানতো? প্রিয়জন চলে গেলে মানুষই ব্যথিত হয়, আকাশ নির্বিকার, আকাশ কখনও নয়। […]

দুঃখ করো না, বাঁচো

দুঃখকে স্বীকার করো না, –সর্বনাশ হয়ে যাবে । দুঃখ করো না, বাঁচো, প্রাণ ভ’রে বাঁচো । বাঁচার আনন্দে বাঁচো । বাঁচো, বাঁচো এবং বাঁচো । জানি মাঝে-মাঝেই তোমার দিকে হাত বাড়ায় দুঃখ, তার কালো লোমশ হাত প্রায়ই তোমার বুক ভেদ করে চলে যেতে চায়, তা যাক, তোমার বক্ষ যদি দুঃখের নখরাঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়; যদি গলগল […]