"শেয়ালের মৃত্যু কখন কীভাবে হয়, আমরা জানি না"

 

               

 //শেয়ালের মৃত্যু কখন কীভাবে হয়, আমরা জানি না//                            

                        

  ………………………………………শীতের নিঃসীম অন্ধকারে হুক্কাহুয়ায় একটি শেয়াল কেবলি অবহিত করে দিয়ে যায়
………………………………………..ঠাণ্ডার বিরূপ জ্বালাতন; আর সেই অতি রুক্ষ নিবেদনে জান্তব সঙ্গীত যেন কান্নার
……………………………………….অপূর্ব  সুরারোপ  হয়ে মানুষের নিরূপণে কেন বিনোদন, কেন  মুহূর্ত  মন্থনে একটি
……………………………………….চমকপ্রদ সঙ্গমের অবলীলা তৈরি করে, সেই শ্বাপদ প্রশ্নটি এখন আমাকে কুড়ে খায় ।

 

 

শুনেছি শেয়াল তার মৃত্যুর খবর
আগেই জানতে পারে । তখন খুঁড়তে থাকে মাটি ।
যেন তার অন্তর্ধান, অচির বিলোপ
শঙ্কাপন্ন স্বজনের কাছে চিরদিন
অজানা থাকতে পারে; তার গান, মধু প্রণয়ের
সব হাঁক, আর স্মৃতি সুপাঠ্য চতুর
উদ্দীপনা হঠাৎ বিনাশ হলে নিরূপায়,
আকীর্ণ প্রেমের এক ভব্যতা শরীরে নিয়ে
………………যদি ফিরে যায় শেয়ালিনী–
অন্তরঙ্গ স্মৃতিকাষ্ঠ–পুড়িয়ে পুড়িয়ে সেই অনন্য সম্ভোগ, অভিসার
বাণীবেদনার
সমস্ত মুলুকে যেন কেউ
তার ফুল্ল যৌবনের পরোক্ষ প্রস্থান নিয়ে
অচ্ছুত বিলাসিতায় মেতে উঠতে না পারে;
তাই মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে একদিন খোড়লের বিশীর্ণ রেখায় বহুদূর
হঠাৎ তাকিয়ে দেখে বিবরের অনন্ত শূন্যতা
সূর্যের পুলক বলে রাখেনি কিছুই ।
হিরন্ময় মৃত্যুর দরোজা খোলা রেখে
দলা দলা অন্ধকার
উপেক্ষিত পারিজাত নিয়ে বসে আছে জীবনের ।
তার গন্ধ নিরন্ন আশ্বাসসহ
রুধির বিদ্যুতে জ্বেলে দিয়ে মোহন অমরাবতী
সহসা জানিয়ে দিল আজ,
সেও অমৃত লোলুপ এক আকাঙ্খার জীব ।
…………………অমরত্ব প্রয়াসী মাধব জন্তু ।
আর মৃত্যু–মাটির ঘোড়ার মতো
কেশর ছাড়াই এক দৌড়হীন পদাতিক,
…………… তাকেও বিবশ করে দিয়ে গেছে ।
রোমশ শরীর জুড়ে সেই মূক অপত্যসংহার—
…………………… নিজের খনন করা মর্মরিত মাটির কীলক
………………………………………… চেপে আসে, ঝুর ঝুর…
সেকি চায় তার লাশ না দেখে বিদীর্ণ এক অবচেতনায়
সবাই জানুক সে-ও আছে ?
অশ্রুবিম্বে কেবলি পড়ুক ছায়া পৃথিবীর ?
……………………………মৃত্যু-পরিণয়ে
নামুক অনন্ত উল্লাসের মতো অমোঘ নির্ভার হিমালয়,
…………………………তার গান আর হুক্কাহুয়ায়–ললিত এই জান্তব সঙ্গীতে ?

(নোটঃ এখানে লাইন এলাইনমেন্ট ঠিক রাখতে ডট ডট ব্যবহার করা হয়েছে । মূল কবিতায় ডট গুলো নেই)