তোমারই নাম বলব

cithiমিতা ,
তোমাকে আবার কখনো লেখার সৌভাগ্য হবে এমনটা কল্পনারও বাইরে ছিল।সম্পর্কটা সব ধরনের যোগাযোগের উর্ধে চলে গিয়েছিল।
তোমার কত স্বীকারোক্তি,অনুযোগ সম্পর্কের justification শুনেছি,শুনছি। আমার নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করার মত কোন যুক্তি আমার জানা নেই। আমি
ব্যাখ্যাও দিতে যাব না,কারন আমি জীবনটাকে অনেক সহজ করে দেখতে চাই,এখানে বেশী বুঝতে গেলে,মারপ্যাচ খুঁজতে গেলে জীবনের মানে এবং আনন্দগুলো জঠিল হয়ে যায়। নদীর মতো একটা জীবনেরও আছে অনেক গুলো অলিগলি । নদীর প্রতিটা বাঁকে তার ক্ষুদ্র নালা,খাল,শাখা নদীর মিলনে নদীকে যেমন মুখরিত করে রাখে ,তেমনি আমার উপলব্দি হচ্ছে জীবনের গলি পথগুলো , বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক,ছেলেমেয়েদের সঙ্গে সম্পর্ক,আত্মীয় পরিজনের সঙ্গের মধুর সম্পর্ক আর ভালবাসার আর ভাল লাগার মানুষটার সাথে সম্পর্ক সব মিলে মিশে একাকার হলে জীবন অনেক ছন্দে, অনেক আনন্দে ভরা থাকে। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি জীবনের এই স্তরে এসে একান্ত আপনজন ভাললাগার মানুষ বলতে যা বোঝায় সে তুমি,তুমি এবং তুমি …।
শুধু তুমি কেন তার ব্যাখা শুনতে চাও ? যে সম্পর্ক বেশি কিছু দাবি না করে, অনেক কিছুই দিয়ে যায় তার চেয়ে নিরেট আনন্দ আর কি হতে পারে ? তোমার সঙ্গে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে,সব বিষয় ভাগাভাগি করে করে মুঠোয় মুঠোয় সময় পার করা যায় । অন্যদের সংগে যেখানে তিনটি বাক্য বিনিময়ের পর কথা ফুরিয়ে যায়,মতের অমিল হয় ,সে সম্পর্ক শুধু সামাজিক ভাবে রক্ষা করতে হয় বলেই জিইয়ে রাখা, এই সম্পর্ক থেকে মুক্তিও নেই । যখন সামান্য আনন্দ ও মুক্তির আস্বাদ পেতে ইচ্ছে করে তখন মনে হয়, আমার রয়েছে নিরন্তর প্রেনের উৎস ,অপার আনন্দের খনি সে তো তুমি …।
কোন বিষয়ে বেশী ভাবতে পছন্দ করি না,সবকিছুতেই আনন্দ খোঁজার চেষ্টা করি ।জীবনটা অনেক মুল্যবান এবং দুর্লভও ,যা বয়ে নিয়ে যাওয়ার জিনিষ নয়, উপভোগের। যতগুলো বোধ নিয়ে এ পৃথিবীতে এসেছি সবগুলোর সঠিক মুল্য দিতে হবে। সঠিক সময়া সব সিদ্বান্ত নিয়ে একে ভাগ করে নিয়ে উপভোগ করতে হয় ।না হয় জীবনটাই বৃথা
হয়ে যায়।
খুব ছোটবেলার একটা কথা মনে পড়ে গেল ,অসুস্থতার কারনে পিকনিকে যাবার অনুমতি পাইনি বাড়ি থেকে তারপরো আমার জেদ আর প্রতিজ্ঞা দিয়ে চলে গিয়েছিলাম সব বাধা উপেক্ষা করে । আমার আত্ম জিজ্ঞাসাকে প্রাধান্য দিয়েছি সবসময়, কোন বাঁধা সিদ্বান্তের প্রতিবন্ধকতা হতে পারেনি । এখনও নিজেকে প্রশ্ন করে, নিজের মতো করেই পথ চলছি ।
অনেক আপত্তি আর অনেক “না” কে অগ্রাহ্য করেই বাকী দিনগুলো কাটাতে চাই।সফল হতে চাই।আশে পাশে মানুষ গুলোকে সুখী করে যেতে চাই,সুখী দেখতে চাই ।
মাঝে মাঝে মনে হয় তোমাকে এত কিছু বলার কোন মানে নেই ,আবার আছেও । আমার অনেক খানিই জুড়ে আছ তুমি । তুমি কি ভাব, তা ভেবে সময় নষ্ট করতে চাই না ।তোমার কাছে আমি কিছুই চাইতে পারি না ,যদি কখনো সুযোগ হয় ,সময় হয় তোমাকে নিয়ে অনেকটা সময় পার করতে চাই কথায় গল্পে আর গানে গানে, ভালোলাগার কিছু ক্ষন ! তার চেয়ে বড় কোন প্রাপ্তি আমার হবে না । তোমার কাছে এই শুধু আমার চাওয়া ।
তোমার সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো গল্পে গল্পে কেটে যাওয়া সারাদুপুর ,চন্দ্রালোকিত রাতে হাতে হাতে রেখে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকে , ঘুম ভেঙ্গে রাতে হঠাৎ তোমার কাছে ছুটে যাওয়া এসব বিষয়গুলো খুব মিস করি । সেদিন অফিস ছুটি বাসায় কেউ নেই দুপুরের খাঁ খাঁ রোদ্দুরের দিকে তাকিয়ে তোমার কথা ভাবছিলাম ।এ অনুভুতি গুলো না পাওয়ার হয়েই থেকে যাবে ।স্মৃতি হয়েই থাকবে,আবার এভেবে নিজেকে সান্তনা দেই যেটুকু পেয়েছি,পাচ্ছি এটাই বা কি কম আনন্দের ?
আমি সবচেয়ে ভারমুক্ত হয়েছি সেদিন, যেদিন আমি “ও”কে বোঝাতে পেরেছি , একদিন আমি তোমাকে ভালবাসতাম ,তোমাকে আপন করে পেতে চাইতাম । তাঁর অবস্থানের কারনেই সে মেনে নিতে পারছে না ,মেনে নেওয়া সম্ভবও নয়। বাবা মায়ের সিদ্বান্তেই তাঁর সাথে আমার বিয়ে সংসার,সে বুঝতে পারতো আমি তাকে মন থেকে মেনে নিতে পারি না। এখন সে জেনেছে তার কারন তুমি , হয়ত অনেক কিছুই ভাবছে সে । কিন্তু আমি কি করে বোঝাই ,এতটা পথ এসে ওকে ছেড়ে যাবার যেমন কিছু নেই, তেমনি নতুন করে পাবারও কিছু নেই ?
লিখার অভ্যেস চলে গিয়েছে, লিখার চেয়ে ভাবাই হয় বেশী ।আবার কবে লিখব জানিনা । তুমি লিখো । একরাশ দক্ষিন হাওয়ার মতো,প্রথম বর্ষনের মতো আমার সমস্ত কিছু ওলট পালট করে দিয়ে যায়,আমাকে আকন্ঠ ভিজিয়ে দিয়ে যায়,তোমার লিখা । এর চেয়ে বেশী আর কিই বা বলতে পারি !
ভালো থেকো সবসময়,নিজের জন্যে,আমার জন্যে …।
বন্যা
৭ অক্টোবর ২০১৫

রেটিং করুনঃ
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (No Ratings Yet)
Loading...
মিতা- র আরো পোষ্ট দেখুন