ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা

মেঘবালিকা
তোমার চিঠি পেলাম। চিঠির তারিখ দেখেই চমকে উঠছি। তুমি যখন আমাকে লিখছিলে তার কয়েক ঘন্টা পর অনেকেই মেতে উঠবে ভ্যালেন্টাইন দিবসের উল্লাসে। একটা দিন ফুল দেয়া নেয়াতে মেতে উঠবে।

জানা হয়নি তোমার ফুল দেওয়ার বা নেওয়ার মতো কেউ আছে কিনা। ইচ্ছে করলে জানাতে পার। কি জান ফুল এমন একটা জিনিস তুমি মৃতকে হাজারো দাও কেউ প্রশ্ন তুলবে না কিন্তু জীবিতকে একটা দিলেই লক্ষ জিজ্ঞাসা। হয়তো এ কারনেই জাপানে ভ্যালেন্টাইন দিবসে চকোলেট দেওয়া হয়। সেটা মেয়েদের কাছ থেকে পুরুষকে এবং তা শুধু প্রেমিকই নয় অফিসের বস থেকে কলিগ সবাইকে দেয়। এমনকি প্রাইমারী স্কুলের মেয়েরাও দেয় …। এদিন পুরুষেরা শুধু নেবে। আর ১৪ই মার্চ পুরুষেরা তার জবাবে “কুকি” দেবে। ১৪ই এপ্রিল কে এদেশে হোয়াইট ডে বলা হয়।

জবাব দিতে দেরী হলো, বলতে পার ইচ্ছে করেই সময় নিয়েছি।
ইতিমধ্যে মেলা শেষ হয়েছে। এক বছর পর আবার জমবে মেলা। বসবে নতুন পসরা নিয়ে। সেদিন আমি আর তুমি কে কোথায় থাকবো জানিনা। জীবন এমনই। কখন কোথায় কার সাথে কি ভাবে দেখা হয়ে যাবে কেউ বলতে পারে না।

ভালোই বলেছ “তু‌মি আ‌মি অাধা কাল্প‌নিক”। সত্যিই তাই। একসাথে একই ছাদের নীচে থাকলেও আমরা একে অন্যকে কতটুকু জানতে পারি। মানুষের মন এমন একটা জায়গা যেখানে অন্য কারোরই প্রবেশাধিকার নেই। আমার মনে হয় কল্পনাই ভালো। মনের মাধুরী মিশিয়ে গড়ে নেওয়া যায় নিজের মতো,স্বপ্নের মতো। সমস্যা হচ্ছে আমরা স্বপ্নের মতো জীবন সাজাই, যাই বলো না কেন জীবন আর স্বপ্ন দুটো কখনো এক হয়না। স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। তবু আমরা স্বপ্ন দেখি, স্বপ্ন রেখেই আমরা চলে যাই।

চা খাবার আমন্ত্রন রেখেছ, যদি কোনদিন সুযোগ হয়। গুড়ের চা। আবার ভয়ও করে। ছোট বেলায় আমার দাদার প্রতিষ্ঠানে গুড় তৈরী হতো সেটি ছিল আমাদের বাড়ী থেকে অনেক দূরের একটা জেলাতে। এখন নেই, দাদাও গত হয়েছেন অনেক বছর হলো। আমার কখনো দেখার সুযোগ হয়নি। তবে মাঝে মাঝে দাদা কলসীতে করে গুড় নিয়ে আসতেন। গ্রামের লোকদেরকে দিতেও দেখেছি। আমার খুব মনে পড়ে সেই গুড়ের কলসীর উপরের দিকের গুড় গুলো অনেকটা চিনির মতো দানাদার ছিলো। তুমিই মনে করিয়ে দিলে।

মিষ্টি জিনিষটা কমই খাই, তাই বলে খাই না বললে ভুল হবে। দেশে যখন চা খাই মাঝে মাঝে চিনির সরবত মনে হয়। এমনকি দোকানেও চিনি ছাড়া চা পাওয়াও দুস্কর। চা বানানো একটা গুন, রান্নার মতোই। অনেকে খুব চমৎকার চা বানাতে পারেন। সেরকম একজন মানুষের দেখা পেয়েছিলাম। আমি তখন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় কর্মরত। আমার উপর তলায় থাকতেন ভদ্রমহিলা। এখন কোথায় আছেন জানি না। জানার চেষ্টাও করিনি, যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন।

এই জীবনে আমি অনেক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। ভালোবাস কত্ত রকমের হয়। মাঝে মাঝে মনে হয় সেরকম সৌভাগ্য কজনেরই বা হয়।
ভালো থেকো।
মিতা
২ এপ্রিল ২০১৭

রেটিং করুনঃ
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (No Ratings Yet)
Loading...
মিতা- র আরো পোষ্ট দেখুন

৫ টি মন্তব্য

  1. অন্যের চিঠি পড়া অমার্জনিয় অপরাধ জেনেও পড়লাম, ভাই কিঞ্ছু মাইন্ড করেন নাইতো?
    মাইন্ড করলেই বা কি করুম! চিঠি এমনে কইরা খুইলা রাখলে…………………।

  2. চিঠিটা পড়ে নিলাম।

    আজ ৫ মার্চ। বছরের প্রথম বৃষ্টি হচ্ছে। মাঝে মাঝে গুড়ু গুড়ু ডাকছে বাংলাদেশের আকাশ।
    মেঘবালিকাকে লেখা শুভেচ্ছা চিঠিটি বেশ আয়েশ কীে পড়লাম।

  3. মেঘবালিকাকে লিখা চিঠিতে কিছু তথ্য আর জীবনের কিছু জানা জানা হলো।
    চিঠি হচ্ছে মনের আয়না। স্বচ্ছ আয়নার অবয়ব অনেক পরিষ্কার। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

Comments are closed.