জবানবন্দী

তারাহীন নক্ষত্রবিহীন
আকাশ আছে চেয়ে।

রাতভর গুলি চলার পর
প্রথম সকালের স্বচ্ছ আলোর কিরণ
কাঁচের ফলার মত এফোড়-ওফোড়
করছে আমাকে

রক্তে ভিজে যাওয়া শহরের
অযাচিত এক কোনে
লাল ওই গোলাপের মনে দেখো
দেখা দিয়েছে ভোরের প্রথম শিশির

জানি তোমরা শুনবে না
তবু বলি

এ রক্ত, এ গরল আমার নয়।
আমার ছিল তারায় ভরা নক্ষত্রখচিত রাতের আকাশ
আমাদের ছোট্ট গ্রামের পারে
ঝাউবনের ধারে
পাহাড়ী নদীর ছোট্ট বুকে বসন্তহীনা, নিরস উত্তুরে হাওয়া
ভালবাসার সমস্ত অবকাশ কেড়ে নিয়ে বরফ জমিয়ে দিতে চেয়েছিল
তবু,
দাঁতে দাঁত চেপে
কোনো লুকোনো উষ্ণতার উত্তাপে
সে বয়ে চলেছিল প্রাণপনে।

সেই নদী আমার ছিল।

আমার আকাশ অন্ধ করে
আমার বাতাসের দম বন্ধ করে
প্রতিদিন প্রতিনিয়ত
যে প্রচন্ড বেদনার দাবদহে আমার আহুতি দিয়েছিলে
জানতে চেয়ো তার কাছে
কোথায় কীভাবে এই ঝড়, এই বিষ আমি লুকিয়ে রেখেছিলাম।

জানি আমায় তোমরা মেরে ফেলবে ঠিকই
তবু বলে যাই

এ রক্তে রাঙ্গা হাত
এই গরল,
এ আমার নয়।
প্রতিদিন প্রতিনিয়ত
একটু একটু করে যে বিষ আমার মধ্যে ভরেছিলে
যে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত একেঁছিলে আমার হাতে
আজ এই বোবা আকাশের চোখে চেয়ে
আমি তা ফিরিয়ে দিলাম।