সরোদ বাজাতে জানলে

আমার এমন কিছু দুঃখ আছে যার নাম তিলক কামোদ এমন কিছু স্মৃতি যা সিন্ধুভৈরবী জয়জয়ন্তীর মতো বহু ক্ষত রয়ে গেছে ভিতর দেয়ালে কিছু কিচু অভিমান ইমনকল্যাণ। সরোদ বাজাতে জানলে বড় ভালো হতো। পুরুষ কিভাবে কাঁদে সেই শুধু জানে। কার্পেটে সাজানো প্রিয় অন্তঃপুরে ঢুকে গেছে জল। মুহুর্মুহু নৌকাডুবি, ভেসে যায় বিরুদ্ধ নোঙর। পৃথিবীর যাবতীয় প্রেমিকের সপ্তডিঙা […]

সেই সবও তুমি

তোমাকেই দৃশ্য মনে হয়। তোমার ভিতরে সব দৃশ্য ঢুকে গেছে। কাচের আলমারি যেন, থাকে থাকে, পরতে পরতে শরতের, হেমন্তের, বসন্তের শাড়ি গয়না দুল, নদীর নবীন বাঁকা, বৃষ্টির নুপুর, জল, জলদ উদ্ভিদ। সাঁচীস্তুপে, কোনারকে যায় যারা, গিয়ে ফিরে আসে দুধ জ্বাল দিয়ে দিয়ে ক্ষীর করা স্বাদ জিভে নিয়ে তোমার ভিতরে সেই ভাস্কর্যেরও লাবণ্য রয়েছে। কোন্‌খানে আছে? […]

স্রোতস্বিনী আছে, সেতু নেই

তুমি বললে, রৌদ্র যাও, রৌদ্রে তো গেলাম তুমি বললে, অগ্নিকুণ্ড জ্বালো, জ্বালালাম। সমস্ত জমানো সুখ-তুমি বললে, বেচে দেওয়া ভালো ডেকেছি নীলাম। তবু আমি একা। আমাকে করেছ তুমি একা। একাকিত্বটুকুতেও ভেঙে চুরে শত টুকরো করে বীজ বপনের মতো ছড়িয়ে দিয়েছ জলে-স্থলে। তুমি বলেছিলে বলে সাজসজ্জা ছেড়েছি, ছুঁড়েছি। যে অরণ্য দেখিয়েছ, তারই ডাল কেটেছি, খুঁড়েছি। যখনই পেতেছ […]

হালুম

মাথায় মুকুটটা পরিয়ে দিতেই রাজা হয়ে গেলেন তিনি। আর সিংহাসনে পাছা রেখেই হাঁক পাড়লেন হালুম। অমনি মন্ত্রীরা ছুটলো ঘুরঘুট্টি বনে হরিণের মাংস সেকতে সেনাপতিরা ছুটলো খলখলে সমুদ্রে ফিস-ফ্রাইয়ের খোঁজে কোতোয়ালরা ছুটলো হাটে-বাজারে যেখান থেকে যা আনা যায় উপড়ে বরকন্দাজেরা ক্ষেত খামার ল্ড ভণ্ড করে বানালো ফ্রুটল্যলাড। রাজা সরলেন ব্রেক ফাস্ট। তারপরেই সিং-দুয়ারে বেজে উঠলো সাত-মণ […]

হে সময়, অশ্বারোহী হও

বিরক্ত নদীর মতো ভুরু কুঁচকে বসে আছে আমাদের কাল। যাচ্ছি যাব, যাচ্ছি যাব এই গড়িমসি করে চূড়ো ভাঙা চাকা ভাঙা রথ যে রকম ঘাড় গুজে ধুলোয় কাতর, সে রকমই শুয়ে বসে আছে। খেয়াঘাটে পারাপার ভুলে-যাওয়া, নৌকার মতন, সময় এখন। মনে হয় সময়ের পায়ে ফুটে গেছে দীর্ঘ পেরেক বা মনসার কাঁটা ছিড়ে গেছে স্ম্যান্ডেলের স্ট্র্যাপ কিংবা […]

মাঝে মাঝে লোডশেডিং

মাঝে মাঝে লোডশেডিং হোক। আকাশে জ্বলুক শুধু ঈশ্বরের সাতকোটি চোখ বাকী সব আলকাতরা মাখুক। আমরা নিমগ্ন হয়ে নিজস্ব চশমায় আর দেখি না কিছুই সকলে যা দেখে তাই দেখি। আকাশের রঙ তাই হয়ে গেছে চিরকালে নীল। বাতাস কি শাড়ি পরে কারো জানা নেই। মাঝে মাঝে লোডশেডিং হোক। সাদা মোমবাতি জ্বেলে তোমাকে সম্পূর্ণ করে দেখি। নারীকে বাহান্ন […]

যে টেলিফোন আসার কথা

যে টেলিফোন আসার কথা সে টেলিফোন আসেনি। প্রতীক্ষাতে প্রতীক্ষাতে সূর্য ডোবে রক্তপাতে সব নিভিয়ে একলা আকাশ নিজের শূন্য বিছানাতে। একান্তে যার হাসির কথা হাসেনি। যে টেলিফোন আসার কথা আসেনি। অপেক্ষমান বুকের ভিতর কাঁসরঘন্টা শাখেঁর উলু একশ বনের বাতাস এসে একটা গাছে হুলুস্থুলু আজ বুঝি তার ইচ্ছে আছে ডাকবে আলিঙ্গনের কাছে দীঘির পাড়ে হারিয়ে যেতে সাঁতার […]

কথোপকথন- ৩৯

তোমাকে বাজাই সমুদ্র-শাঁখ তুমি গাছে ফুল আসে ফুলেরা কিশোরী হয় । ডালপালাগুলো সবুজ পাতার খামে চিঠি লিখে লিখে প্রেম নিবেদন করে । ফ্রক ছেড়ে শাড়ি পরে সমগ্র বনভূমি । তোমাকে ভাসাই মেঘের নৌকো তুমি তুমি জান লাল প্রবালের নীল দ্বীপ । অমরাবতীর দরজায় এসে নামো, খাট-পালঙ্ক পেতে দেয় জোৎস্নারা । বুড়ি চাঁদ এসে ঝাড়-লন্ঠন জ্বালে […]

বৃক্ষের ভাগ্যকে ঈর্ষা করি

বৃক্ষের ভাগ্যকে ঈর্ষা করি। নিজের বেদনা থেকে নিজেই ফোটায় পুস্পদল। নিজের কস্তুরী গন্ধে নিজেই বিহ্বল। বিদীর্ণ বল্কলে বাজে বসন্তের বাঁশরী বারংবার আত্মজ কুসুমগুলি সহস্র চুম্বনচিহ্নে অলংকৃত করে ওষ্ঠতল। আমি একা ফুটিতে পারি না। আমি একা ফোটাতে পারি না। রক্তের বিষাদ থেকে একটি আরক্তিম কুসুমও। আমাকে বৃক্ষের ভাগ্য তুমি দিতে পারো। বহুজন্ম বসন্তের অম্লান মঞ্জুরী ফুটে […]

কথোপকথন-৩৫

লোকে বলে শুনি সেলায়ে তোমার পাকা হাত সুঁচ দিয়ে লেখো কবিতা গোয়েন্দা নাকি? আমার যা কিছু লুকোনো জানতে হবে কি সবই তা? তর্ক কোর না, জুড়ে দেবে কিনা এখুনিই হৃৎপিন্ডের ক্ষতটা। দিতে পারে তবে মজুরী পরবে বিস্তর জোগাতে পারবে অতটা ? কাজ যদি হয় নিখুত , ভেবেছ পালাব গর্তে? হৃৎপিন্ডের ভিতরে থাকে যে ঝর্না দিতে […]