জুলেখা বলল, তুই একটা আজিব পোলা। বিজু মার দিকে তাকাল। ক্যান, কী করছি আমি? এত রাত্র হইল তাও জাইগা আছস! পড়তাছি দেখ না! ক্লাস থ্রির পড়া কি কম! রেললাইনের বস্তির এদিকটায় আজ ইলেকট্রিসিটি নেই। জুলেখা একটা কুপি জ্বালিয়েছে। কুপির আলোয় বই খুলে বসে আছে বিজু। পড়ছে বলে মনে হয় না। নাড়াচাড়াই সার। জুলেখা হাসল। তয় […]
লাল টাকা
অন্তরে
৫. বিকেলবেলা দোতলার বারান্দায় বসে বিকেলবেলা দোতলার বারান্দায় বসে আছে সুমি। এই বারান্দায় তিন চারটা বেতের চেয়ার আর নীচু ধরনের বেতের গ্লাসটপ টেবিল আছে। বিকেলবেলা কখনও কখনও এখানে বসে চা খায় সবাই। আজ কেউ নেই। আজ সুমি একা। আজকাল একা থাকলেই আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে সুমি। কী যে ভাবে তা সে নিজেই জানে। পাশ দিয়ে […]
অন্তরে
জয়দের বাড়িতে পৌঁছতে ঠিক পঞ্চাশ মিনিট লাগল। তেমন খুঁজতেও হয়নি বাড়ি। একবারেই পাওয়া গেল। স্কুটার থেকে নেমে জয়কে দেখতে পেল মিলা। গেটের কাছে দাঁড়িয়ে আছে। ফেডেড জিনসের লুজ ধরনের জিনস পরা, আকাশি রংয়ের টিশার্ট। বাঁহাতে সুন্দর বেল্টের ঘড়ি। পায়ে সুন্দর স্যান্ডেলসু। সকালবেলা গোসল, সেভ এসব সেরে বেরুবার ফলে বেশ ফ্রেস লাগছে তাকে। জয়কে দেখে খুব […]
অন্তরে
কাল রাতে কী হয়েছিল? সত্যি কি কেউ ঢুকেছিল আমার রুমে! নাকি পুরো ব্যাপারটাই ঘটেছিল স্বপ্নে! অবচেতন মনে! কিন্তু স্বপ্নে এই ধরনের অনুভূতি হয় কী করে? স্বপ্নে যদি কেউ আমার হাত ধরে, বাস্তবে কি সেই হাত ধরা টের পাব আমি! এমন কি হয়? তাহলে ব্যাপারটা আসলে কী? কোনও অশরীরী ঘটনা! কিন্তু ওসবে যে আমার একদম বিশ্বাস […]
অন্তরে
আপনি কোথায়? আপনি কোথায়? ফোনে হ্যালো ইত্যাদি না বলে সরাসরি এরকম প্রশ্ন, জয় একটু থতমত খেল। তারপরই বুঝে গেল ফোনটা কার। সঙ্গে সঙ্গে মুখটা হাসি হাসি হয়ে গেল তার, গলার স্বর রোমান্টিক হয়ে গেল। মিলা? তো কে? কোত্থেকে? টেলিফোনের দোকান থেকে। কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর কই? কোথায় আমি? হ্যাঁ। উত্তরায়। ওখানে কী করছেন? সুপারভাইজারি। মানে? […]
অন্তরে
১. ব্যাপারটা শুরু হলো পা থেকে রাত দুপুরে সুমির মনে হলো তার ডানপায়ে কে যেন সুরসুরি দিচ্ছে। মৃদু মোলায়েম সুরসুরি। পায়ের পাতার ওপর দিয়ে আলতো ভঙ্গিতে তেলাপোকা হেঁটে গেলে যে অনুভূতি হয় ব্যাপারটা তেমন। সুমির ঘুম পাতলা। ফলে মুহূর্তেই ভেঙে গেল। কিন্তু ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে সুরসুরিটা উধাও। সুমি ঠিক বুঝতে পারল না আসলেই কি […]
কোথায় আমার হৃদয়পুর
এতিমখানার শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ থেকে আমি একটা পাগলাগারদে এসে পড়েছি। লেবু চেয়ারম্যানের বাড়িটা আসলেই একটা পাগলাগারদ। মিনি পাগলাগারদ। চেয়ারম্যানের মেয়েটি, অর্থাৎ আমার ছাত্রীটি, বেলি, সুমাইয়া জাহান, পুরোপুরিই পাগল। একটা কাজের মেয়ে আছে, সুন্দরী তার নাম, সেটাও আধাপাগল। কথা শুরু করলে আর থামে না। ‘বিঘ্ন’ বলাটা চেয়ারম্যান সাহেবের মুদ্রাদোষ। তাঁকেও কিঞ্চিৎ পাগল মনে হয় আমার। সুস্থ […]
মেয়েটা আমার সঙ্গে হাঁটে
এই যে শুনুন। মিলি শুনতে পেল না। যেমন হাঁটছিল, হাঁটতে লাগল। ভদ্রমহিলা দ্রুতই হাঁটছিলেন। পরনে বেগুনি প্রিন্টের কামিজ আর সাদা সালোয়ার। পায়ে আরামদায়ক জুতো। অক্টোবরের শেষদিক। বিকেলবেলার পার্কে শীতলভাব। তারপরও তিনি বেশ ঘেমেছেন। মিলি শুনতে পায়নি দেখে দৌড়ে এসে তাকে ধরলেন। শুনুন। মিলি যেন অন্য জগৎ থেকে ফিরল। ডাগর চোখে আত্মমগ্ন দৃষ্টি। বলুন। আপনি মিলি […]
মতিন সাহেবের মা
মতিন সাহেব বুক হাতাতে হাতাতে বিছানায় বসে পড়লেন। মুখে দুশ্চিন্তার ছায়া। ডানহাতে বুকের বাঁ পাশটা হাতাচ্ছেন। নাশতার পরের অষুদ আর পানি নিয়ে এসেছেন রেখা। স্বামীর অবস্থা দেখে বললেন, কী হল, এমন করছ কেন? মতিন সাহেবের চোখে ঘন ঘন পলক পড়ছে। চিন্তিত গলায় বললেন, বুকটা ব্যথা করছে। বেশ ভালো রকমের ব্যথা। হঠাৎ বুক ব্যথা? নাশতার আগের […]
যুদ্ধকাল
আজাদ জাদুঘরের ওদিকটায় এসে রিকশাঅলা আমার দিকে মুখ ফিরাল। কী অইছে বাবা? কানবার লাগছেন ক্যালা? লোকটার বয়স চল্লিশের ওপর। রোদে পোড়া কালো শরীর। শরীরের বাঁধ ভালো। মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি-মোচ। নীল রঙের লুঙ্গি আর কোড়া রঙের গেঞ্জি পরা। গেঞ্জির হাতা কনুইয়ের কিছুটা ওপরে টাইট হয়ে লেগে আছে। ঘাড়ের কাছে গেঞ্জি একটু ছেঁড়া। কোমরে গামছা বাঁধা […]