একটি পে-স্কেলের জন্য অপেক্ষা

অনেকে অনেক কিছুর জন্য অপেক্ষা করে, কেবলই অপেক্ষা,
আমি অর্থমন্ত্রীর একটি পে-স্কেলের জন্য অপেক্ষা করছি।
যে বেতন পাই তা দিয়ে শাহবাগ ক্রসিং থেকে ফুল কেনা যায় না,
আমার ভীষণ ইচ্ছে নতুন পে-স্কেল চালু হলে সবার আগে
আমি তোমার জন্য শিশিরধোয়া একগুচ্ছ গোলাপ কিনবো,
বেইলি রোডের বুটিক-শপে একটা থ্রি-পিস দেখেছিলাম একবার,
নীল জমিনের ওপর ধবল মেঘের পসরা দেখে ঠোঁট কামড়ে মুগ্ধ
হয়েছিলাম, যেন শরতের এক টুকরো আকাশ ঝুলে আছে তোমার
শরীরে, কিন্তু কিনতে পারি নি, কে যেন পেরেকবিদ্ধ করেছিলো
সচল পা, সবাই বলছে নতুন বেতনে টাকা কিছু তো বাড়বেই,
আমি তোমার জন্য ঐ আকাশ কিনবো বলে হিসেব কষে রেখেছি,
কিছু টাকা তারপরও যদি থেকে যায় তবে তোমার জন্য একটা
দিঘি কিনবো, দু’একটা রাজহাঁস যদি ঐ দিঘিতে ভেসে বেড়ায়
আমি জানি তুমি খুব খুশি হবে, রাজহাঁস তোমার পছন্দ কেন
জানি না, তার মরাল গ্রীবায় তোমাকে চুমু খেতে দেখেছিলাম
একবার, ঠোঁটের স্পর্শে ঝরে পড়ছিলো শর্ষের হলুদ হলুদ ফুল,
তুমি যদি বলো আমি তোমার জন্য বিশাল বিশাল জানালার একটা
ট্রেন কিনে ফেলবো, ট্রেন খুব দামি নয়, তারপর সেই চালকহীন
ট্রেনে এক লালচে সন্ধ্যায় আমরা উঠে বসবো গন্তব্যহীন যাত্রায়,
দিগন্তে চোখ বিছিয়ে আমরা বলবো গভীর ভালোবাসার রূপকথা,
তুমি বললে আমরা নেমে যাবো কোনো জনহীন উদ্বাস্তু-প্লাটফরমে,
তারপর মধ্যরাতে জোছনায় ভিজতে ভিজতে বেসুরো গানে পেঁৗছে
যাবো কোনো ডাকবাংলায়, গরম ভাতের সঙ্গে ওমলেট দিয়ে আমাদের
নৈশভোজ হবে, আমরা বারান্দায় বসে মাকড়সার মতো স্বপ্নের সুতোয়
বুনতে থাকবো আগামীকালের শীতবস্ত্র, রাঁধার দোলনায় দুলতে দুলতে
আমরা দু’জন পার করে দেবো রাতের প্রহর, সৌরভের মতো ছড়িয়ে
পড়বে তোমার চুলের ঘ্রাণ, দূরে কোথাও বেজে উঠবে কৃষ্ণের বাঁশি,
আহা! অপেক্ষার সবুজ ব্রিফকেস কতোদিনে খুলবেন মাননীয় মন্ত্রী?