সেই সব নিজস্ব রাত্রিগুলি

যে রাত ‘পাশাপশি বসিবার বনলতা সেন’
সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো।
প্রনয়ীর প্রথম পরশ ছুঁয়ে দ্বিধাগ্রস্ত
চুপিচুপি চোখের উপকূলে জোয়ারের মতো
স্বপ্নালু হেঁটে আসা যে রাত আচ্ছন্ন আকাশের নিচে
সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো।
আকাশের মাঠে নক্ষত্র পাখিদের কোলাহলে
যে রাত নেমে আসে হেমন্তের শিশিরের
প্রথম অভিসারের মতো নিরব নরোম
সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো।
যে রাতে ক্ষুধার আগুন জ্বেলে গাঢ় অন্ধকারে
প্রহরীর মতো জেগে থাকে ক্লন্ত জঠর,
যে রাতে গনিকারা নীল সুখে মেলে দ্যায়
যৌবনের আরাধ্য দরোজা অভাবের নিচে,
যে রাতে বেকার যুবক আগ্নেয়াস্ত্র তুলে নেয় হাতে,
যে রাতে মায়ের উৎসাহে আত্মজা খুঁজে আনে তার
উনিশ বছর ধ’রে লালন করা মাতৃত্বের ঘাতক,
যে রাতে একদল সশস্ত্র যুবক হৃদয়ে আগুন জ্বেলে
বোসে থাকে শত্রুর নির্ধারিত আগমন পথে
সেই সব রাতগুলি একান্ত আমার, আমার রাত্রি-
যে রাত ‘পাশাপশি বসিবার বনলতা সেন’
সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো।