আমার মূর্ধন্যগুলো

আমার রেফ্গুলো যদি তুমি বাজেয়াপ্ত করো
তবে আমি ‘বর্শা’ লিখবো কী দিয়ে?
তোমার ঐ তেকোণা ‘র’গুলো দিয়ে?
তো, বর্শার তীক্ষ্ম ফলাটা কোথায় পাবো?
আর আমার প্রিয় ‘বর্ষা’ লিখবো কী দিয়ে?
বৃষ্টির তীব্র ফোঁটাগুলো কি রেফ্ ছাড়া আঁকা যাবে?
আমার খুঁতগুলোও কি নিয়ে নেবে?
—তা-হলে তো আমার ‘ভবিষ্যত্’-ই অন্ধকার!
আমার পূর্বপুরুষদের স্বাস্থ্যোজ্জ্বল কোষাগারে
৫২টি দ্যুতিময় হীরক খণ্ড ছিলো—
কালক্রমে তা থেকে ৩টি তো চিরতরে হারিয়েই গেছে;
সেই দুঃখ বুকে পুষে কেউ-কেউ আজো
শোকে মুহ্যমান আছি…
আমার মূর্ধন্যগুলো
রাখলে তুমি কোথায় লুকিয়ে!
কবিতা আঁকার প্রয়োজনে
ঐ বর্ণটি আমার বিশেষ দরকার—
রসিকতা আমারও অতীব প্রিয়—কিন্তু তাই ব’লে
সবসময় কি তা কারো ভাল্লাগে?
—আমার চোখের সামনে সর্বদাই দেখি
খেলা করছে ক’টি তরুণ খরগোশ,
কী সুন্দর দৌড়ে যাচ্ছে
একগুচ্ছ চিত্রল হরিণ,
কী উচ্ছল উচ্ছ্বাসে মেতে উঠছে
উদ্ভাসিত সব তরুণ-তরুণী…
আর এই সময়েই কিনা তুমি
লুট করে নিয়ে গেছ প্রিয় মূর্ধন্যটি!
এখন আমি এক দুঃস্বপ্নের নদীতীরে ব’সে
আর্ত অসহায় বন্ধ্যা নারীর মতন মাথা কুটছি কেবল,
আমার চোখের সামনেই কারা যেন
আমার ৩টি ‘স’-এর মধ্যে দু’টিকে হত্যা করলো—
এখন তা হলে আমি আর ‘সবিশেষ’
লিখবো কেমন ক’রে?
আমার প্রিয় সম্পদগুলো একে-একে অপহূত হলো,
তবে কি আর আমার চোখের সামনে
খরগোশেরা খেলা করবে না,
হরিণেরা হরিণীর পাশে দাঁড়াবে না,
ভালোবেসে একে অপরের চোখে
তাকাবে না তরুণ-তরুণী?

রেটিং করুনঃ
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (No Ratings Yet)
Loading...
রফিক আজাদ- র আরো পোষ্ট দেখুন