স্মৃতি, চাঁদের মতো ঘড়ি

ঘড়ির কাঁটায় স্থির, সমর্পিত, হে আমার অন্তরঙ্গ অবিচ্ছিন্ন চাঁদ,
তোমার যাদুতে মুগ্ধ এই আমি শতচ্ছিন্ন কাঁথার একায়
হিরন্ময় নক্ষত্রের মেলা এক বসিয়েছি অবাস্তব স্বপ্নের বিন্যাসে:
একটা বয়স আছে অবোধ শিশুর দল শতাধিক পুতুলে যখন
জননীর মতো সোহাগ বিলোতে চায়,—
ন্যাকড়ার টুকরোয় তারা কী উজ্জ্বল জামা তৈরি করে,
চুমোয় আচ্ছন্ন করে সারি-সারি পুতুলের নির্বিকার মুখ!
শিশুদের মতো আমি,— মুখাবয়বসর্বস্ব,—ভাঙা এই একটি পুতুলে
আমারও আজন্ম খেলা, সারাবেলা—দুপুরে-রাত্রিতে।
ঘড়ির কাঁটায় স্থির, সমর্পিত, হে আমার অন্তরঙ্গ অলীক লন্ঠন,
সর্বক্ষণ জ্ব’লে যাও তুমি, তোমার মুখশ্রীখানি
কী মসৃণ আলো ফ্যালে দুর্গন্ধে আমার!
অবাস্তব উটপাখি, তোমার পিঠের ‘পরে চ’ড়ে
জরায়ুতে চ’লে যাই, ভবিষ্যতে যাই…
খটখটে মৃত্তিকায় শিকড় চারিয়ে দিই, কিংবা
আইয়ো-র শিঙয়ের মতো বাঁকানো শৈশব ঘুরে আসি!
শিখাহীন অলৌকিক তোমার আগুনে পুড়ে যায়—
পরিত্যক্ত বাঁশঝাড়, গাছপালা, গোপন বাগান!
ঘড়ির কাঁটায় স্থির, সমর্পিত, হে আমার অন্তরঙ্গ জীবনদেবতা,
তালের শাঁসের মতো রাতে আনো অপার বেদনা;
সাবানের মতো তুমি পিছলিয়ে যাও
ব্যক্তিগত বাথরুম থেকে কোথা কোন্ স্বর্গলোকে!
আমার বাস্তব-স্বপ্নে কখনো আসো না আর ফিরে।
তবে অশ্রুজল ছাড়া ঐ-পদপল্লবে
আর কী দেবার আছে? …কেবল চোখের জলে ভ’রে দিতে পারি
একটু অদৃশ্য, শুষ্ক বঙ্গোপসাগর।।

রেটিং করুনঃ
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (No Ratings Yet)
Loading...
রফিক আজাদ- র আরো পোষ্ট দেখুন