কথোপকথন-২৫

-হাত ঘড়িটা কি ছোঁ মেরেছে গাংচিলে?
শকুন্তলার আংটির মত গিলেছে কি কোনো রাঘব বোয়াল-টোয়াল?
-কেন?
আসবার কথা কখন,এখন এলে?
বসে আছি যেন যুগযুগান্ত,ভাঙা মন্দিরে উপুড় শালগ্রাম।
চা খেলাম,খেয়ে সিগারেট,খেয়ে আবার-বেয়ারা,কফি।
আর ঘড়ি দেখা এবং যে কোনো জুতোর শব্দে চমকে ওঠা।
মনে হচ্ছিল অনন্তকাল প্রতীক্ষাটারও অন্য নামটা প্রেম ।
-স্যরি,সত্যিই। কী করব বল রাস্তায় যেন মাছি-থকথকে ভিড়
তারপরে লাল মিছিলে মিছিলে লরীতে লরীতে সব রাস্তাই বন্ধ
তারপরে এই লু-হাঁকানো রোদ ,কী বিচ্ছিরি!জ্বলে-পুড়ে সব খাক্,
আকাশটার কি ব্যামো হল কিছু? আষাঢ় মাসেও মেঘের কলসী ফাঁকা ।
মনে হচ্ছিল শতাব্দী কেটে যাবে
তবু কোন্দিন লেনিন সরণি পারবে না যেতে শেক্পীয়রের কাছে।
তারপর জানো কাল সারারাত ঘুমোইনি,শুধু কেঁদে
কাঁদবো যে তারও সুখ কি কপালে আছে?
পাশে বোন শোয়,পিসীমা খাটের নীচে।
-হঠাৎ কান্না কেন?
-তোমার একটা চিঠি সানহাউ পড়ছে বাবার হাতে।
বাবা গম্ভীর।তার মানে আজ কাল বা পরশু ঘটবে বিস্ফোরণ।
পুরে দেওয়া হবে বিধিনিষেধের গোল গন্ডীর ভিতরে হ্যাঁচকা টানে।
-যা অনিবার্‍্য,দ্রুত ঘতে যাওয়া ভালো।
আজ সকালের কাগজেই লেখা আছে
ঘন্টায় আশি মেইল দৌড়ে আসছে বৃষ্টি-ঝড়।
বুঝেছি অতঃপর
পরিতে হইবে সারা গায়ে রনসাজ।
মনে পরে?আমি ভিক্টোরিয়ার মাঠে একদিন শীতের সন্ধ্যেবেলায়
তোমার শরীর ভর্তি আগুনে সেঁক-তাপ নিতে নিতে
বলিয়াছিলাম,নন্দিনী! মনে রেখো
ভালোবাসা মানে আমরণ এক রক্ত রণাঙ্গণ।