নববর্ষের ভিড়ে

 
আকাশের তখনও ঠিক মত ঘুম ভাঙে নি
হালকা আলো ছড়িয়েছে মাত্র,
চারদিকে কত উৎসব আজ !
কত আয়োজনে ব্যস্ত মঙ্গল শোভাযাত্রা-
বিছানা ছেড়ে উঠেই খুঁজেছিলাম তোমায়;
গতরাতের স্বপ্নটা পুরো রাত মাতিয়ে রেখেছে !
নাহ ! আজ তোমায় দেখতেই হবে !
নাহলে এই চোখে লেগে যাবে অবাঞ্ছিতের কালি ।

পাঞ্জাবী পড়েই ভোঁ দৌড়-
রিকশা চেপে নীলক্ষেত,
নীলক্ষেত থেকে টি,এস,সি চত্বর
নগরীর প্রতিটি স্তরে স্তরে লেগে আছে বৈশাখী আমেজ;
নববর্ষের উল্লাস, মাতোয়ারা সংস্কৃতি।
মুহূর্তে মুহূর্তে ভয় করছিলো কিছুটা
এত মানুষের ভিড়ে যদি খুঁজে না পাই তোমায় !
কিন্তু, হঠাৎ করেই দেখলাম তোমায়
লাল সাড়ি, হাতে লাল চুড়ি,
চুলে এক জোড়া জারবারা ফুল;
চোখে কাজল !
যদি দুই-তিন জন রাস্তায় পরে যেত
সত্যিই অবাক হতাম না এক বিন্দু ।
অবাক হয়েছিলে খুব !
হয়তো ভাবতে পারনি এভাবে চলে আসবো ।
বান্ধবীরা হেসেছিল তোমার অবস্থা দেখে;
লাজুক চোখে তাকাচ্ছিলে,
ওভাবে আর কিছুক্ষণ তাকালে হয়তো
হৃদকম্পন বাড়তে বাড়তে থেমেই যেত আমার !
চোখে যে তোমার নেশার মিছিল !
ওভাবে তাকালে যে কেউ আসক্ত হয়ে পড়বে,
তোমার অপ্রস্তুত হাসি দেখে আজকের পর হয়তো
কেউ কেউ ফিরিয়ে দিতে পারে নীলের ঢেউ,
সামুদ্রিক আকাশের সমস্ত মৃত্তিকা !!

চলে যাবার সময় পুরোটা পথ হেঁটেছি একসাথে
অথচ কোন কথা হল না !
অপ্রস্তুত শাড়ির আঁচল সামলাতে পারছিলে না
তোমার অবস্থা দেখে এত হাসি পাচ্ছিলো, জানো !
যাবার আগে একবার তাকালে সব ভুলে
মুখে লেগে আছে চিরচেনা হাসি;
ওই চোখের নেশা নেমেছে আমার কুঠিরে
হাসি লেগেছে চোখে-মুখে
আজ থেকে কোন রাত হয়তো ঘুমাতে পারবো না,
দু ঘণ্টা তেইশ মিনিট ঠায় তাকিয়ে থাকার এই শাস্তি
নববর্ষের মতই উল্লাসের, মঙ্গলের ।।

 

– জিহান আল হামাদী
১৪ই এপ্রিল’২০১৩