বিশেষের শেষ নেই

bishesআমাদের দেশে সাধারণত স্ত্রীরা তাঁদের স্বামীকে অন্যের কাছে উপস্থাপনের সময় বলেন, ‘আমার বর অমুক’ কিংবা পাশে স্বামীকে দেখিয়ে বলেন, ‘ও হচ্ছে আমার বর’ ইত্যাদি। আবার ভিন্নভাবে বলতে গেলে বিয়ের পাত্র-পাত্রীকেও আমরা বলি বর-কনে।

কনে মানে স্ত্রী নয়; স্ত্রী করার জন্য নির্বাচিত পাত্রী। তেমনি বরও হচ্ছে ভবিষ্যতের স্বামী। তার পরও স্বামীকে বর বলতে কেউ কেউ একটু বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

এই ‘বর’ শব্দটিকে দুবার বললে শোনা যায় ‘বর্বর’।

তেমনি ‘নর’-এর আগে ‘বা’ বসালে হয়ে যায় ‘বানর’।

এটি একটি ছড়া, অর্থ হলো যে শব্দটি যা, তার সঙ্গে অকারণে কিছু যোগ করার রোগে ধরলে দুর্ভোগের আশঙ্কা থাকে। তেমনি ফিট ও হিট শব্দ দুটিরও অন্য রকম অর্থ আছে। ক্ষেত্রবিশেষে সেই অর্থ যথার্থ, যেমন-ফিট মানে অজ্ঞান হওয়া, আর হিট মানে আঘাত। তাই হিট লেগেও কেউ ফিট হতে পারে, আবার ফিট হয়েও কারো হিট লাগতে পারে। এই হিট-ফিটের গিঁট খুলতে না পেরে কেউ আবার আনফিটও হয়ে যান।

এই হিট-ফিট, বর-বর্বর, নর-বানর শব্দগুলোর নানা ধরনের ব্যবহারে কোথাও এরা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, আবার কোথাও গুরুত্বহীন হয়ে যায়। কোথাও বা এমনও অর্থ হয়ে যায়, যা হাস্যরসের সৃষ্টি করে। তেমনি আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ অর্থবহ শব্দ রয়েছে, যা ব্যবহার করলে কিংবা কোনো বাক্য বা শব্দের সঙ্গে যোগ করলে সেই বাক্য বা শব্দের মান কিংবা ওজন দুটোই বেড়ে যায়। যেমন-‘বিশেষ’। এই শব্দটি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষত্ব প্রকাশের জন্য বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু আজকাল বহু ব্যবহারে জরাজীর্ণ এই শব্দটিরও করুণ অবস্থা। বিভিন্ন শব্দের সঙ্গে এই ‘বিশেষ’ শব্দটি জুড়ে দেওয়ার কারণে এর যা অর্থ দাঁড়ায়, তা কারোই কাম্য নয়। ঈদের যানবাহনে ‘বিশেষ’ শব্দটির বিশেষ ব্যবহার লক্ষ করা যায়। যেমন-‘বিশেষ সার্ভিস’। আর এই সার্ভিসের মধ্যে আছে বিশেষ বাস সার্ভিস, বিশেষ ট্রেন সার্ভিস, বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস। আবার কিছু কিছু স্থানে যানবাহনের গতি সচল রাখার জন্য বিশেষ ফেরি সার্ভিসের কথাও বলা হয়। এই সার্ভিসগুলোর আগে বিশেষ লেখার অর্থ হলো, অন্য সময়ে যেনতেন হলেও ঈদের সময়ে ‘বিশেষ’।

এবার দেখা যাক এই বিশেষ সার্ভিসগুলোর বিশেষত্ব কী? ঈদের বিশেষ ট্রেন সার্ভিসের বিশেষত্ব হচ্ছে, কাউন্টারে যে টিকিট পাওয়ার কথা, যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন থাকা সত্ত্বেও সেই টিকিট বাইরেও পাওয়া যায়। বাইরে মানে কালোবাজারে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়, অর্থাৎ এই বিশেষ হচ্ছে যাত্রী ভোগান্তির বিশেষ।

বিশেষ বাস সার্ভিসেরও একই অবস্থা, আর বিশেষ লঞ্চ সার্ভিসে তো যাত্রী না ওঠার জন্য সব মহল থেকেই অনুরোধ জানানো হয়। কারণ এই বিশেষ লঞ্চ সার্ভিসে বহনক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার কারণে প্রায় প্রতিবছরই দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়। যে কারণে এসব পরিবহনের এই বিশেষ সার্ভিসগুলো ঈদের আনন্দের চেয়ে ঘরমুখো মানুষের জন্য দুঃখ-কষ্ট-শোক বয়ে নিয়ে আসার সার্ভিসে পরিণত হয়েছে।

এবার ঈদের কেনাকাটায় আসুন-সেখানেও বিশেষ আছে।

বিশেষ ঘোষণা। কোনো কোনো শপিং মলে বিশেষ ঘোষণা দিয়ে মাইকিং হচ্ছে, তাদের শপিং মলে কী কী বিশেষ সুবিধা আছে। আছে বিশেষ ছাড়, বিশেষ মূল্যহ্রাস, বিশেষ উপহার। এই সব ‘বিশেষ’ সম্পর্কে সবারই ধারণা আছে। এক হাজার টাকার কাপড় বা জামার মূল্য দেড় হাজার টাকা লিখে পরে ৫০০ টাকা মূল্যহ্রাসের যৌক্তিকতা বা বিশেষত্ব কী?

উত্তর : ব্যবসা।

এসব দেখে একবার এক ক্রেতা দোকানে গিয়ে বিক্রেতার সঙ্গে ঝগড়া শুরু করে দিলেন; কিন্তু সম্মিলিত বিক্রেতাদের সঙ্গে একা পেরে উঠছিলেন না, তাই যাওয়ার সময় বলে গেলেন, ‘বুঝতে পারছি, আপনাদের জিনিসের মূল্যহ্রাস না হইলেও আমাদের মূল্যহ্রাস হইছে। যে কারণে প্রতিমুহূর্তেই আমাদের জীবনঝুঁকি নিয়ে পথ চলতে হয়।’

তার পরও শোনা যায়, ঈদের সময় প্রতিটি মার্কেটেই রয়েছে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা। আর এই নিরাপত্তার মধ্যেই হচ্ছে বিশেষ ছিনতাই, বিশেষভাবে পকেটমার, আরো নানা অপকর্ম (সেগুলোও এই বিশেষের আওতাভুক্ত)।

এবার পোশাকে আসি। এখানেও সেই ‘বিশেষ’, অর্থাৎ বিশেষ পোশাক। আমাদের প্রধান উৎসবের দিনে এই সব বিশেষ পোশাক দেখে মনটা খারাপ হয়ে যায়। বিশ্বায়ন বা মুক্ত অর্থনীতির যুগে আমরা অর্থনীতির পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের। আজকাল শপিং মলগুলোতে গেলে বিদেশি দ্রব্য অন্বেষী অনেকের ভাবভঙ্গিতে মনে হয়, এরা যেন দেশি পোশাক-বিদ্বেষী। ভারতীয় সিরিয়াল ‘বোঝে না সে বোঝে না’ খ্যাত চরিত্র ‘পাখি’র বিশেষ পোশাক নিয়ে গত ঈদে দেশব্যাপী কী তুলকালাম কাণ্ডই না হয়ে গেল! দাম্পত্য কলহ থেকে শুরু করে আত্মহত্যা পর্যন্ত গড়িয়েছে। অথচ দেশে এত পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এবং আমাদের পোশাক শ্রমিকদের তৈরি বৈচিত্র্যপূর্ণ পোশাক থাকা সত্ত্বেও দেশে তৈরি এই সব কাপড়কে আমরা ‘বিশেষ’ বলি না। দেশের কথা বড় গলায় বললেও দেশি জিনিসে মন ভরে না, এমন অনেক মানুষ এই সমাজে সব স্তরেই পাবেন। ‘স্বদেশি পণ্য কিনে হও ধন্য’-এ কথা অনেকের কাছে শুধু অন্যকে বলার জন্যই। তবে শুধু পণ্যকে গণ্য করেই নয়, আমাদের দেশে কার যে কিসে গর্ব আর কার যে কিসে খর্ব, তা নির্ণয় করা কঠিন।

পোশাক থেকে এবার ঈদের খাবারে আসা যাক। এখানেও ‘বিশেষ’ রয়েছে। ঈদের সময় জেলখানার কয়েদিদের জন্য বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। আবার এতিমখানাগুলোতেও এতিমদের জন্য বিশেষ খাবার সরবরাহ করা হয়। এই ‘বিশেষ’ প্রশংসনীয় হলেও ঈদের সময় টিভি চ্যানেলগুলোর রান্নার অনুষ্ঠানগুলোতে প্রদর্শিত ঈদের বিশেষ রেসিপি দেখলে মনে প্রশ্ন জাগে, এগুলো আসলে কাদের খাদ্য? এসব রান্না দেখে রসিকতা করে একবার আমার এক কবিবন্ধু বললেন, রান্নার অনুষ্ঠানে যেসব রান্না শেখানো ও দেখানো হয়, সাধ্য না থাকায় খাদ্য হিসেবে অনেকেই এসব খান না। কেউ আবার এভাবে রান্না খেতে চান না। কেউ আবার এসব রান্না দেখে জুড়ে দেন কান্না। রসিকতা নয়, এসব দেখে মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা কি দেশীয় খাবার ভুলিয়ে দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছি?

যে মায়ের হাতের রান্না খেয়ে আমরা বড় হয়েছি, যে মায়ের হাতের রান্না শিখে আমার বোনেরা দেশীয় রান্নার ঐতিহ্য রক্ষা করে চলেছে, সেই রান্না আজ কোথায়? এই কি ঈদের বিশেষ রান্নার বৈশিষ্ট্য? এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া কঠিন।

এবার ঈদের টেলিভিশনে আসি। এখানেও ‘বিশেষ’-এর ছড়াছড়ি। বছরের অন্যান্য সময় যা-ই হোক, ঈদের সময় দর্শকরা ভালো কিছু অনুষ্ঠান দেখার অপেক্ষায় থাকেন। এ সময় পত্রপত্রিকায় এবং চ্যানেলে চ্যানেলে অনুষ্ঠানের জমজমাট বিজ্ঞাপন, শহরজুড়ে শিল্পীদের ছবি দিয়ে বিলবোর্ড-পোস্টার দেখা যায়। কিছু কিছু চ্যানেল তো রোজা শুরুর প্রথম দিন থেকেই প্রোমো চালানো শুরু করে। শত শত নাটক, শত শত অনুষ্ঠান-সবই বিশেষ। ঈদের বিশেষ নাটক, বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান, বিশেষ আড্ডা, বিশেষ সংগীতানুষ্ঠান, অর্থাৎ সব কিছুই ‘বিশেষ’। কিন্তু কেউ যদি প্রশ্ন করেন, এই সব বিশেষ অনুষ্ঠানের বিশেষত্ব কী? এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর পাওয়া যাবে না। তবে এটুকু বলা যায়, বছর বছর ঈদের সময় ‘বিশেষ’-এর নামে যা দেখছেন, এবারও তা-ই। তেমন কোনো ব্যতিক্রম নেই।

আবার টিভি সংবাদে যান, সেখানেও রয়েছে বিশেষ সংবাদ। ‘বিশেষ সংবাদ’ বলে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে ‘বিশেষ’ হিসেবে যা প্রচারিত হলো, তা কোন যুক্তিতে ‘বিশেষ’, তার উত্তর খুঁজে পাবেন না। আমরা তো সব সময় বাংলাদেশ টেলিভিশনকে একহাত দেখাতে অভ্যস্ত, কিন্তু চ্যানেলগুলো কি খুব ভালো করছে? সেখানে মাঝে মাঝে বিশেষ সংবাদ হিসেবে যা প্রচারিত হয়, তা দেখলে ‘বিশেষ’ শব্দটির জন্য মায়া হয়। টেলিভিশনের সংবাদকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভাবা হয়। বলা হয় ন্যাশনাল নিউজ বা জাতীয় সংবাদ। সেখানে রাষ্ট্রের নানা গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ, বিশেষ করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের খবর, দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংবাদই পাঠ করার কথা। কিন্তু সেই সংবাদে ‘বিশেষ’ যোগ করে আজকাল বিভিন্ন চ্যানেলে চ্যানেলের মালিক বা কর্তাব্যক্তিদের নিজেদের প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

এরপর আছে ঈদের বিশেষ বকশিশ আর বিশেষ সালামি। ছুরি বা পিস্তল ঠেকিয়ে ঈদের সালামির নামে চাঁদা নেওয়া বা জোর করে বকশিশ আদায় করার বিষয়টি আমাদের জানা। ইদানীং পিস্তলের বদলে ফাইল ঠেকিয়ে ঘুষ সন্ত্রাসীরা ঈদের বিশেষ বকশিশ আদায় করেন। আমরাও নিরুপায় হয়ে দিই। এই বিশেষ বকশিশ না দিলে ফাইল যে কোথায় গুম হবে, কেউ জানে না। সুতরাং ফাইলকে উদ্ধার করতে এবং আপনার প্রাপ্য বিল পেতে অন্যায়ভাবে হলেও এই বিশেষ বকশিশ আপনাকে দিতে হবে।

আবার তদন্তের কথাই ধরুন; কোনো ঘটনা ঘটলে, আর তা যদি মোটামুটি আলোচিত ঘটনা হয়, তখন সঙ্গে সঙ্গেই বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করে সেই ঘটনার বিশেষ তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়। আবার ঠিক তার পরদিন বা কিছুদিন পর ঘটনাটি অন্য কোনো ঘটনার ব্যাপকতায় চাপা পড়ে গেলে ওই তদন্ত কমিটির কার্যক্রমও চাপা পড়ে যায়। অর্থাৎ আগের বিশেষের মৃত্যু এবং নতুন বিশেষের জন্ম।

চারদিকে বিশেষের এই ছড়াছড়ির কারণে ‘বিশেষ’ শব্দটাই তার গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছে। যেমন-একসময় ‘ইতিহাস’ বা ‘ঐতিহাসিক’ বললে আমরা বিষয়টিকে বেশ গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করতাম। তেমনি ‘বিশাল’ শব্দটিকেও। আগে বড় কোনো জনসভা হলে বলা হতো ‘বিশাল জনসভা’। আবার জনসভায় লোকসমাগম কম হলে যার যার দলীয় আদর্শে বিশ্বাসী পত্রিকাগুলো লিখত ‘বিশাল জনসভার একাংশ’। কারণ পুরোটা ছাপালে বিশালতা খুঁজে পাওয়া যাবে না। পরে এই সব জনসভায় লোকসংখ্যা কমতে কমতে যখন মফস্বল শহরের কোনো অখ্যাত ক্লাবের সদস্যদের সাপ্তাহিক কর্মিসভার পর্যায়ে এলো, তখনো দেখা যায় বলা হচ্ছে ‘বিশাল জনসভা’। ফলে ‘বিশাল’ শব্দটি অস্তিত্বসংকটে পড়ে গেল। তেমনি ঐতিহাসিক। একসময় সিনেমা হলে ‘ধরছি তোরে’, ‘খাইছি তোরে’ কিংবা ‘পাইছি তোরে’ জাতীয় ছবির শুভমুক্তির দিন বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো ‘ঐতিহাসিক শুভমুক্তি’ বলে। সিনেমা মুক্তির সঙ্গে ইতিহাসের কী সম্পর্ক, সেটা আমার বোধগম্য নয়। তেমনি একসময় খুব গুরুত্বপূর্ণ নেতা কিংবা ব্যক্তির ভাষণ দেওয়ার আগে নানা বিশেষণ দেওয়া হতো। অর্থাৎ এবারে ‘ঐতিহাসিক ভাষণ’ দেবেন সংগ্রামী জননেতা, বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, জ্বালাময়ী বক্তা…ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব বিশেষণ বলে তারপর বক্তার নাম বলা হতো। এখন এই সব শব্দ আর তেমন গুরুত্ব বহন করে না। এখন যে কারো ভাষণকে ঐতিহাসিক ভাষণ, যেকোনো কণ্ঠকেই (যত ফ্যাঁসফেঁসেই হোক না কেন) বলিষ্ঠ কণ্ঠ বলা হয়। তবে ‘জ্বালাময়ী’ শব্দটির সঙ্গে আমি একমত। কারণ অনেকের ভাষণই এখন জ্বালাময়ী, যা শুনলে আমাদের শরীরে জ্বালা ধরে যায়। এভাবে যত জ্বালা-যন্ত্রণাই হোক না কেন, নানা ‘বিশেষ’ নিয়ে আমরা সবিশেষ ভালো আছি?

আসলেই কি তাই? কী জানি, ভাই।

আসলে অনেক কিছুই এখন আগের মতো ‘নাই’। নেই মানুষের স্বভাবও। অনেককে বলে বোঝাতে হয়, আবার অনেকে নিজেই বোঝেন। অভাব্য স্বভাবের স্বভাবদোষী মানুষের স্বভাব স্বভাবতই বোঝা যায় না। কাণ্ডজ্ঞানের অভাবে এদের এই অভাবনীয় স্বভাবের প্রভাব কলুষিত করছে সমাজ, কলুষিত করছে অনেক কিছুই। ‘বিশেষ’ শব্দটিকে বিশেষভাবে ব্যবহার করে যারা ফায়দা লুটছে, তারা স্ববিরোধী-যা ভাবে তা বলে না, যা বলে তা করে না, যা করে তা বলে না। সমাজের অনেক অসামাজিক, অনৈতিক ও অযৌক্তিক কাজের সংগঠক এরা। যে কারণে ‘নিয়ম’ শব্দটি বললেই চোখের সামনে ‘অনিয়ম’ শব্দটি চলে আসে। আর এই অনিয়মের দৌরাত্ম্য ‘বিশেষ’ শব্দটি তার বিশেষ অবস্থানে নেই। আর সে জন্যই প্রয়োজন নিয়মিত অনিয়মের বদলে প্রতিটি স্থানেই ‘নিয়মিত নিয়ম’। তাহলেই ‘বিশেষ’ শব্দটি তার হারানো গৌরব ও ঐতিহ্য ফিরে পাবে।

রেটিং করুনঃ
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (No Ratings Yet)
Loading...
Alternative Textহানিফ সংকেত- র আরো পোষ্ট দেখুন