বুড়ি গোয়ালিনী নামটার মধ্যেই কোথায় যেন
জেগে ওঠে একটা গল্পের আবছা আদল
চোখের সামনে হঠাৎ ঝাপটা এসে লাগে নাকে-মুখে;
রহস্য রোমাঞ্চ ভরা অথচ সুদূর কামাসকাটকা বা বোরোবুদুর
কোনোটাই নয়।
তবে জাগে যদি সাধ কারো সেখানে যাবার
বুড়ি গোয়ালিনীর সাদর আমন্ত্রণ, ‘চলে এসো সোজা’
কিন্তু যেতে হবে তাকে সুন্দরবনের গহিন ভেতরে পাড়ি জমিয়ে
যতোদূর যাওয়া সম্ভব তারও ঢের বেশি প্রান্তিক দক্ষিণে_
যেখানে মন্দা-সাদা কাস্যার বনে ঝাঁক বেঁধে ওড়াওড়ি করে মৌমাছিরা
রৌদ্রছায়া মাখা দিবারাত্র খেলাধুলা করে অনন্তের পথ ধরে;
যেতে হলে যেতে হবে ছুটে ওদের ধাওয়া করে পিছু পিছু
মোম মধু আহরণে অতল স্পর্শের কাছাকাছি;
খোলপেটুয়া নদীতে গা ভাসিয়ে কলাগাছিয়া ভারানী
পার হয়ে মালঞ্চের মোহনায় সবুজ সিন্ধুর টিপ-পরা
বুড়ি গোয়ালিনী যাওয়া যতোটা সহজ মনে হয়
আসলে ততোটা হলে আর কথাই ছিল না_
ভয়ডর কাকে বলে কোনোটাই নেই জানা
ভারি দুর্গম পুটনি দ্বীপ-দেবীর মাদে যার আরেক নাম
সাধে কি মানুষ আর অমন পাগলপারা হয়ে ছুটে যায়;
_ কতো না দূরদূরান্ত ভেঙে আসে ওরা ভিনদেশী পরিব্রাজকরা
কুম্ভভরে নিয়ে যায় শিহরণজাগানিয়া মধু
বুড়ি গোয়ালিনী তাদের উদ্যম দেখে মিটিমিটি হাসে শুধু।