রক্তমাখা সিঁড়ি

চেয়েছি নতুন দিন, স্নানসিক্ত পৃথিবীর নতুন মহিমা মানুষের মতো বেঁচে থাকা যেন মানুষ্য জন্মেই ঘটে যায় বঞ্চনা শব্দটি যেন অচেনা ভাষার মতো মূঢ় করে এ-জীবন আনন্দের, চতুর্দিকে হাহাকার মুছে যে-রকম স্নিগ্ধ সুখ…. কখনো আনন্দ হয় ফুল ছিড়ে, অপরের অন্ন কেড়ে নয় চেয়েছি নতুন দিন শ্রেণীহীন, স্পর্ধাহীন, বিশুদ্ধ সমাজ যখন মুখোশে আর লুকোবে না মানুষের মুখ […]

যা ছিল

শুকনো নদীর জলে পা ডুবিয়ে দুপুরের ক্ষণিক কৌতুকে মন স্বচ্ছ হতে গিয়ে থমকে যায় পাথরের শ্যাওলার ছোপ, ঝিরঝিরে স্রোতের মধ্যে বামের খোসা নদীর ওপার থেকে অনায়াসে নীরা নাম্মী মহিলাটি কুর্চি ফুল নিয়ে আসে গাছের শিকড়ে রাখে সোয়েটা সিগারেট টেনে আমি মন-খারাপ ধোঁয়া ছেড়ে ভেঙে দিই বালির প্রাসাদ! একদিন নদী ছিল চঞ্চলা নতর্কী, তার তীরে রমণীর […]

যদি নির্বাসন দাও

যদি নির্বাসন দাও, আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরি ছোঁয়াবো আমি বিষপান করে মরে যাবো! বিষন্ন আলোয় এই বাংলাদেশ নদীর শিয়রে ঝুঁকে পড়া মেঘ প্রান্তরে দিগন্ত নিনির্মেষ- এ আমারই সাড়ে তিন হাত ভূমি যদি নির্বাসন দাও, আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরি ছোঁয়াবো আমি বিষপান করে মরে যাবো। ধানক্ষেতে চাপ চাপ রক্ত এইখানে ঝরেছিল মানুষের ঘাম এখনো স্নানের আগে কেউ কেউ […]

বিদেশ

ঠোঁট দেখলেই বুঝতে পারি, তুমি এদেশে বেড়াতে এসেছো ঐ গ্রীবা, ঐ ভুরুর শোভা এদেশী নয়- কপালে ঐ চূর্ণ অলক, নিমেষ-হারা দৃষ্টি পলক ঐ মুখ ঐ বুকের রেখা এদেশী নয়! বৃষ্টি থামা বিকেলবেলায় পথ ভরেছে শুকনো কাদায় আমরা সবাই কাতর, বুকে পাথর তোমার পা মাটি ছু’লো না তোমার হাসি পাখি-তুলনা তুমি বললে, আমার বৃষ্টি নামুক! আমরা […]

বাতাসে তুলোর বীজ

বাতাসে তুলোর বীজ, তুমি কার? এই দিক-শূন্য ওড়াউড়ি, এ যেন শিল্পের রূপ- আচমকা আলোর রশ্মি পপি ফুল ছুঁয়ে গেলে যে-রকম মিহি মায়াজাল বাতাসে তুলো বীজ, তুমি কার? পাহাড়ী জঙ্গল থেকে উড়ে এলে খোলা-জানালা পাঁচকোনা ঘরে আমারও শব্দের রেশ উড়ে যায় নামহীন নদীটির ধারে স্বপ্নের ভিতর ফোটে স্নেহের মতন জ্যোৎস্না বৃদ্ধ কৃষকের চায়া আলপথে দাঁড়িয়ে ধানের […]

বহুদিন লোভ নেই

বহুদিন লোভ নেই, শব্দে শিহরণ স্বপ্নে শিহরণ, ঘুম শরীরে দুপুর এলো, যেন বহুদিন লোভ নেই বহুদিন লোভ নেই, শ্মশানের পাশে গিয়ে বিকেলে বসিনি; এবার তোমার কাছে চলে যাবো, ‘তুমি’ বহু গ্রন’ থেকে চুরি এ-রকম যেতে হয়, বিকেলে মন খারাপ হলে তোমার ছায়ায় না গেলে মানায় না, কিংবা চিঠি, বহু পুরোনো ভুলের শোক থেকে ছায়ার ভিতরে […]

পেয়েছো কি?

অপূর্ব নির্মাণ থেকে উঠে আসে ভোরের কোকিল কোকিল, তুমি কি পারো মুছে দিতে সব কলরব? হেলেঞ্চা লতায় কাঁপে শিশিরের বিদায়ী শরীর শিশির, না আমার শৈশব? ভুলে যাওয়া ভালো, কিন্তু কাঁটার মুকুট পরা মৃত্যু তো সে নয়! বৈশাখী আকাশ দেখে গাঢ় হয় টিয়াঠুঁটি আম সবই তো উচ্ছিষ্ট করে রেখে গেলে পেয়েছো কি যা ছিল পাওয়ার? মধ্যজীবনের […]

নীরার দুঃখকে ছোঁয়া

কতটুকু দূরত্ব? সহস্র আলোকবর্ষ চকিতে পার হয়ে আমি তোমার সামনে এসে হাঁটু গেড়ে বসি তোমার নগ্ন কোমরের কাছে উষ্ণ নিশ্বাস ফেলার আগে অলঙ্কৃত পাড় দিতে ঢাকা অদৃশ্য পায়ের পাতা দুটি বুকের কাছে এনে চুম্বন ও অশ্রুজলে ভেজাতে চাই আমার সাঁইত্রিশ বছরের বুক কাঁপে আমার সাঁইত্রিশ বছরের বাইরের জীবন মিথ্যে হয়ে যায় বহুকাল পর অশ্রু বিস্মৃত […]

জন্ম হয় না, মৃত্যু হয় না

আমার ভালোবাসার কোনো জন্ম হয় না মৃত্যু হয় না- কেননা আমি অন্যরকম ভালোবাসার হীরের গয়না শরীরে নিয়ে জন্মেছিলাম। আমার কেউ নাম রখেনি, তিনটে চারটে ছদ্মনামে আমার ভ্রমণ মর্ত্যধীমে, আগুন দেখে আলো ভেবেছি, আলোয় আমার হাত পুড়ে যায় অন্ধকারে মানুষ দেখা সহজ ভেবে ঘূর্ণিমায়ায় অন্ধকারে মিশে থেকেছি কেউ আমাকে শিরোপা দেয়, কেউ দু’চোখে হাজার ছি ছি […]

চন্দনকাঠের বোতাম

যেমন উপত্যকা থেকে ফিরে এসেছি বহুবার, পাহাড়ের চূড়ায় ওঠা হয়নি যেমন হাত অঞ্জলিবদ্ধ করেছি বহুবার, কখনো পার্থনা জানাইনি যেমন নারীর কাছে মৃত্যুকে সমর্পণ করেছিলাম মৃত্যুর কাছে নারীকে যেমন বৃক্ষের কাছে জল্লাদের মতন গিয়েছি কুঠার হাতে উপকথার কাঠুরেকে করেছি উপহাস যেমন মানুষের কাছে আমিও মানুষ সেজে থাকতে চেয়েছিলাম কৃতজ্ঞতার বদলে ফিরিয়ে নিয়েছি মুখ যেমন স্বপ্নের মধ্যে […]