আমি কিরকম ভাবে বেঁচে আছি

আমি কীরকম ভাবে বেঁচে আছি তুই এসে দেখে যা নিখিলেশ এই কী মানুষজন্ম? নাকি শেষ পরোহিত-কঙ্কালের পাশা খেলা! প্রতি সন্ধ্যেবেলা আমার বুকের মধ্যে হাওয়া ঘুরে ওঠে, হৃদয়কে অবহেলা করে রক্ত; আমি মানুষের পায়ের পায়ের কাছে কুকুর হয়ে বসে থাকি-তার ভেতরের কুকুরটাকে দেখবো বলে। আমি আক্রোশে হেসে উঠি না, আমি ছারপোকার পাশে ছারপোকা হয়ে হাঁটি, মশা […]

আমি ও কলকাতা

কলকাতা আমার বুকে বিষম পাথর হয়ে আছে আমি এর সর্বনাশ করে যাবো- আমি একে ফুসয়িয়ে নিয়ে যাবো হলদিয়া বন্দরে নারকোল নাডুর সঙ্গে সেঁকো বিষ মিশিয়ে খাওয়াবো- কলকাতা আমার বুকে বিষম পাথর হয়ে আছে। কলকাতা চাঁদের আলো জাল করে, চুম্বনে শিয়ালকাঁটা অথবা কাঁকর আজ মেশাতে শিখেছে, চোখের জলের মতো চায়ে তুমি চিনি দিতে ভুলে যাও এত […]

আমার খানিকটা দেরি হয়ে যায়

যে পান্থনিবাসে যাই দ্বার বন্ধ, বলে, “ঐ যে রুগ্ন ফুলগুলি বাগানে রয়েছে শুধু, এখন বসবেন?’ কেউ মুমূর্ষূ অঙ্গুলি আপন উরসে রেখে হেসে ওঠে, পাতা ঝরানো রহাসি, ‘এই অবেলায় কেন এসেছেন আপনি, কী আছে এখন? গত বসন্ত মেলায় সব ফুরিয়েছে, আর আলো নেই, দেখুন না তার ছিঁড়ে গেছে, সব ঘরে ধূলো, তালা খুলবে না এ জন্মে; […]

আমার কয়েকটি নিজস্ব শব্দ

পরিত্রাণ, তুমি শ্বেত, একটুও ধূসর নও, জোনাকির পিছনে বিদ্যুৎ, যেমন তোমার চিরকাল জোনাকির চিরকাল; স্বর্গ থেকে পতনের পর তোমার অসুখ হলে ভয় পাই, বহু রাত্রি জাগরণ- প্রাচীন মাটিতে তুমি শেষ উত্তরাধিকার। একাদশী পার হলে-তোমার নিশ্চিত পথ্য হবে। আমার সঙ্গম নয় কুয়াশায় সমুদ্র ও নদী; ঐ শব্দ চতুষ্পদ, দ্বিধঅ, কিছুটা উপরে, সার্থকতা যদি উদাসীন; বিপুল তীর্থের […]

অসুখের ছড়া

একলা ঘরে শুয়ে রইলে কারুর মুখ মনে পড়ে না মনে পড়ে না মনে পড়ে না মনে পড়ে না মনে পড়ে না চিঠি লিখবো কোথায়, কোন মুন্ডহীন নারীর কাছে? প্রতিশ্রুতি মনে পড়ে না চোখের আলো মনে পড়ে না ব্লেকের মতো জানলা খুলে মুখ দেখবো ঈশ্বরের? বৃষ্টি ছিল রৌদ্র ছায়ায়, বাতাস ছিল বিখ্যাত করমচার সবুজ ঝোপে পূর্বকালের […]

অপমান এবং নীরাকে উত্তর

সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কেন হেসে উঠলে, সাক্ষী রইলো বন্ধু তিনজন সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কেন হেসে উঠলে, সাক্ষী রইলো বন্ধু তিনজন সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কেন হেসে উঠলে, নীরা, কেন হেসে উঠলে, কেন সহসা ঘুমের মধ্যে যেন বজ্রপাত, যেন সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে, নীরা, হেসে উঠলে, সাক্ষী রইলো বন্ধু তিনজন সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কেন হেসে কেন সাক্ষী কেন বন্ধু কেন তিনজন […]

অনর্থক নয়

বেয়ারা পাঠিয়ে কারা টাকা তোলে ব্যঙ্ক থেকে? আমি তো নিজের সইটা এখনো চিনি না বিষম টাকার অভাব!নেই। শুধু হৃৎপিন্ড হাওয়া টেনে নেয়ে হাসি কুলকুচো করি। মাথায় মুকুট নেই বলে কেউ ধার দিতেও চায় না। কিছু টাকা জমা আছে ব্লাড ব্যাঙ্কে। সামান্য। কাঁটা ছাড়ানো মাছের মতন গদ্য লিখলে ক্যাশ আসে। পারি না। কবিতায় দশ টাকা তাই […]

হাসন্‌ রাজার বাড়ি

গাঁয়েতে এয়েছে এক কেরামতি সাহেব কোম্পানি কত তার ঢ্যাঁড়াক্যাড়া-মানুষ না পিপীলিকা, যা রে ছুটে যা যা রে যা দ্যাখ গা খোলা হুরীর নাচন আর ভাঁড়ের কেরদানি এখেনে এখন শুধু মুখোমুখি বসে রবো আমি আর হাসন্‌ রাজা। আলাভোলা হাওয়া ঘোরে, তিলফুলে বসেছে ভোমর উদলা নদীটি আজ বড়ই ছেনালি বিষয় বুঝলে দাদা, ভুলাতে এসেছে ও যে দুলায়ে […]

শব্দ

ঝটিঙ্গা নামের এক দুর্দান্ত পাহাড়ী নদীর পাশে হারাঙ্গাজাও নামে একটা নম্র ছিমছাম স্টেশন পাথুরে প্ল্যাটফর্মে একজন রেলবাবু কাঁঠালের দর করছেন আমাদের কামরায় পর্যাপ্ত ভিড় ও হাতকড়া বাঁধা দু‘জন খুনী আসামী এবং উজ্জল স্কার্ট-পরা চারটি সুস্বাস্থ্যবতী অহঙ্কারী খাসিয়া তরুণী, কয়েকজন শিখ সৈনিক, মনুষ নামের অসংখ্য মানুষ আর দু’পাশে বিশাল বিশাল আদিম, পাহাড় ও চাপ চাপ বিশৃঙ্খল […]

রূপালি মানবী

রূপালি মানবী, সন্ধ্যায় আজ শ্রাবণ ধারায় ভিজিও না মুখ, রূপালী চক্ষু, বরং বারান্দায় উঠে এসো ঘরের ভিতরে বেতের চেয়ার, জানলা বন্ধ দরজা বন্ধ রূপালী মানবী, তালা খুলে নাও, দেয়ালে বোতাম আলো জ্বেলে নাও, অথবা অন্ধকারেই বসবে, কাচের শার্সি থাকুক বন্ধ দূর থেকে আজ বৃষ্টি দেখবে, ঘরের ভিতরে বেতের চেয়ার, তালা খুলে নাও। চাবি নেই, একি! […]