নীরার জন্য কবিতার ভূমিকা

এই কবিতার জন্য আর কেউ নেই, শুধু তুমি, নীরা এ-কবিতা মধ্যরাত্রে তোমার নিভৃত মুখ লক্ষ্য করে ঘুমের ভিতরে তুমি আচমকা জেগে উঠে টিপয়ের থেকে জল খেতে গিয়ে জিভ কামড়ে একমুহূর্ত ভাবলে কে তোমার কথা মনে করছে এত রাত্রে–তখন আমার এই কবিতার প্রতিটি লাইন শব্দ অক্ষর কম ড্যাস রেফ্‌ ও রয়ের ফুট্‌কি সমেত ছুটে যাচ্ছে তোমার […]

নীরা তোমার কাছে

সিঁড়ির মুখে কারা অমন শান্তভাবে কথা বললো? বেরিয়ে গেল দরজা ভেজিয়ে, তবু তুমি দাঁড়িয়ে রইলে সিঁড়িতে রেলিং-এ দুই হাত ও থুত্‌নি, তোমায় দেখে বলবে না কেউ থির বিজুরি তোমার রঙ একটু ময়লা, পদ্মপাতার থেকে যেন একটু চুরি, দাঁড়িয়ে রইলে নীরা, তোমায় দেখে হঠাৎ নীরার কথা মনে পড়লো। নীরা, তোমায় দেখি আমি সারা বছর মাত্র দু’দিন […]

নীরা ও জীরো আওয়ার

এখন অসুখ নেই, এখন অসুখ থেকে সেরে উঠে পরবর্তী অসুখের জন্য বসে থাকা। এখন মাথার কাছে জানলা নেই, বুক ভরা দুই জানলা, শুধু শুকনো চোখ দেয়ালে বিশ্রাম করে, কপালে জলপট্টির মতো ঠাণ্ডা হাত দূরে সরে গেছে, আজ এই বিষম সকালবেলা আমার উত্থান নেই, আমি শুয়ে থাকি, সাড়ে দশটা বেজে যায়। প্রবন্ধ ও রম্যরচনা, অনুবাদ, পাঁচ […]

নির্বাসন

আমি ও নিখিলেশ, অর্থাৎ নিখিলেশ ও আমি, অর্থাৎ আমরা চারজন একসঙ্গে সন্ধেবেলা কার্জন পার্কের মধ্য দিয়ে,- চতুর্দিকে রাজকুমারীর মত আলো- হেঁটে যাই, ইনসিওরেন্স কোম্পানীর ঘড়ি ভয় দেখালো উল্টো দিকে কাঁটা ঘুরে, আমাদের ঘাড় হেট করা মূর্তি, আমরা চারজন হেটে যাই, মুখে সিগারেট বদল হয়, আমরা কথা বলি না, রেড রোডের দু’পাশের রঙিন ফুলবাগান থেকে নানা […]

দেখা হবে

ভ্রূ-পল্লবে ডাক দিলে, দেখা হবে চন্দনের বনে- সগন্ধের সঙ্গে পাবো, দ্বিপ্রহরে বিজন ছায়ায় আহা, কি শীতল স্পর্শ হৃদয়-ললাটে, আহা, চন্দন চন্দন দৃষ্টিতে কি শান্তি দিলে, চন্দন, চন্দন আমি বসে থাকবো দীর্ঘ নিরালায় প্রথম যৌবনে আমি অনেক ঘুরেছি অন্ধ, শিমূলে জরুলে লক্ষ লক্ষ মহাদ্রুম, শিরা-উপশিরা নিয়ে জীবনের কত বিজ্ঞাপন তবুও জীবন জ্বলে, সমস্ত অরণ্য-দেশ জ্বলে ওঠে […]

জ্বলন্ত জিরাফ

শেষ কবে নারীহত্যা করেছি আমার ব্যক্তিগত স্বর্গে? বাথরুমে- ছ’মাস আগে, সেই থেকে চোখে ভালো দেখতে পাই না। সাতদিন পর্যন্ত আয়নায় হাসির প্রমাণ লেগেছিল- এছাড়া চোষের জল জমিয়ে রেখেছিলাম বেসিনে। সেই ঠান্ডা চোখের জলে রোজ মুখ ধুতাম ও কুলকুচোঁ করেছি জানালা দিয়ে। প্রতিবেশী এসে বিরাট আপত্তি জানালোঃ এতদিন পেচ্ছাপ করা সহ্য করেছি, তা বলে কি কুলকুচো […]

জুয়া

অত্যান্ত ঠান্ডা মাথায় জীবন বদলে নিলাম আমি ও নিখিলেশ, হাতঘড়ি ও কলম, পকেট বই, রুমাল- রেডিওতে পাঁচটা বাজলো, আচ্ছা কাল দেখা হবে,- বিদায় নিলাম,- সন্ধেবেলার রক্তবর্ণ বাতাস ও শেষ শীতের মধ্যে, একা সিঁড়ি দিয়ে নামবার সময় মনে পড়লো- ঠিকানা ও টেলিফোন নাম্বার এসবও বদলানো দরকার, যেমন মুখভঙ্গী ও দুঃখ, হাসির মুহূর্ত নিখিলেশ ক্রুদ্ধ ও উদাসীন, […]

চোখ বিষয়ে

আমি তোমাদের কোন্‌ অনন্ত ছায়ায় শুয়ে আছি, শুয়ে রবো, আমি তোমাদের থেকে বহু দুরে তবু ছায়ার ভিতরে শুয়ে আছি, জেগে আছি, শিয়রে ও পায়ে ছায়া পড়ে, ছায়া কাঁপে, চোখের ছায়ায় মাছ খেলা করে, ভাসে, আমি তোমাদের মাছের মতন চোখ ছায়ার সাঁতারে তুলে আনি, তোমাদের গোলাপজামের মতো চোষ ভালোবাসি, মুখে দিই, দাঁতে ‘তোমাদের’ ভালোবাসাময় চোখগুলি ভেঙে […]

ক্লান্তির পর

আমি তোমার অধর থেকে ওষ্ঠ তুলে তাকিয়ে দেখি মুখের দিকে তুমি তোমার কোনো কথাই রাখেনি কথা ছিল কি এমন করে কান্না, এমন চোখের দুই পাশ মুচড়ে তাকানোর? কথা ছিল কি বিকেলবেলা ঘড়ির নিচে মায়ার খেলা আদর পেয়ে মার্জারীর মতো শরীর বাঁকানো? হাওয়ায় এখন নদীর মতো শব্দ ওঠে তিনটি কথা বলতে এসে তোমার ঠোঁটে চোখের মধ্যে […]

এবার কবিতা লিখে

এবার কবিতা লিখে আমি একটা রাজপ্রাসাদ বানাবো এবার কবিতা লিখে আমি চাই পনটিয়াক গাড়ি এবার কবিতা লিখে আমি ঠিক রাষ্ট্রপতি না হলেও ত্রিপাদ ভূমির জন্য রাখবো পা উঁচিয়ে- মেশপালকের গানে এ পৃথিবী বহুদিন ঋণী! কবিতা লিখেছি আমি চাই স্কচ, শাদা ঘোড়া, নির্ভেজাল ঘৃতে পক্ক মুরগী দু-ঠ্যাং শুধু, বাকি মাংস নয়- কবিতা লিখেছি তাই আমার সহস্র […]